top of page

দেবদূত ১ম পর্ব


ছাড়েন ভাইজান, ভাইজান ছাইড়া দেন আমারে।

-আরে কান্না করিস কেনো? তোকে কী আমি মারতেছি নাকি? একটু আদর করে দিবো শুধু।

১১বছর বয়সী রত্না মেয়েটি গৃহকর্তার এমন ব্যবহারে খুব ভয় পাচ্ছে এবং রাসেল সাহেবের থেকে নিজেকে ছাড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে।

-শোন তোর বেতন বাড়াইয়া দিমুনে। চুপ থাক এখন।

ঘরের ভিতরে কাজের মেয়ে রত্নাকে একা পেয়ে নিজের পুরুষত্বকে আর দমিয়ে রাখতে পারলেন না রাসেল সাহেব। যেই মেয়েটির বয়ঃসন্ধিকালই শুরু হয়নি এমনকি যৌন বিষয়ক কোন জ্ঞানও নেই সেই মেয়েটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে নিজের প্যান্টটি ঠিকঠাক মতো কোমরে গুজে নিলেন তিনি। এতক্ষন রত্না মেয়েটির আত্মচিৎকার রাসেলের কঠিন হৃদয়কে এতোটুকুও ভেদ করতে পারেনি।

তৎক্ষনাৎ অফিস থেকে ফিরে এসে ঘরে প্রবেশ করলেন রাসেল সাহেবের স্ত্রী মৌমিতা। তিনি যদি আর পাঁচটি মিনিট আগে আসতেন তবে রত্নার এই যন্ত্রনা সহ্য করা লাগতো না বোধহয়। মৌমিতা ঘরে ঢুকেই রত্নার এই মুমূর্ষু অবস্থা দেখে দৌড়ে রত্নার নিকট চলে এলেন।

-কী হয়েছে তোর? এ অবস্থা কেন?

-রাসেল ভাইজানে আমারে ব্যথা দিছে।

হঠাৎ মৌমিতার চোখ যায় রত্নার সেলোয়ারে থাকা ছোপ ছোপ রক্তের দাগের দিকে। মৌমিতার আর বুঝতে বাকী রইলো না রাসেল রত্নার সাথে কী করেছে? মৌমিতা এতোদিন রাসেলের সব অপকর্ম নিজ চোখে দেখে প্রশ্রয় দিলেও আজ তার ধৈর্য্যের বাঁধ যেন সুনামির প্রবল স্রোত ভেঙ্গে ফেলেছে। একমুহূর্ত দেরী না করে বেডরুমে যেয়ে রাসেলকে উদ্দেশ্য করে বললো,

-তুমি রত্নার সাথে কী করেছো?

-কী করবো আবার? ওতো কাজের লোক কাজ করবে।

এবার মৌমিতা চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো,

-তুমি কী আমাকে বোকা ভেবেছো? এতোদিন পতিতাপল্লিতে যেয়েও তোমার স্বাধ মেটেনি? আজ এতোটুকু একটি বাচ্চা মেয়েকেও ছাড়লেনা?

খাট থেকে দৌড়ে এসে রাসেল মৌমিতার গলাটি চেপে ধরে বললো,

-চুপ, একদম চুপ। বেশি কথা বলবি একদম মেরে ফেলবো।

রাসেলের এই হিংস্রতা আজ নতুন নয়। বিয়ের পর থেকেই এসব দেখে এসেছে মৌমিতা। কিন্তু ওর নিশ্চুপ থাকা ব্যতীত আর কোন উপায় নেই। কারণ মৌমিতার পরিবার পুরোটাই রাসেলের সাহায্যে টিকে আছে। তাই এতো অত্যাচার সহ্য করা সত্ত্বেও রাসেলের সংসার করছে নিজের মতের বিরুদ্ধে নয়তো ওর পরিবারকে পথের ভিখারী বানিয়ে দিতেও দ্বিধা করবেনা রাসেল।

রত্না ও তার মা পাশেরই একটি বস্তিতে একসঙ্গে থাকে। অত্যন্ত গরিব হবার কারণে নিজের মেয়েকেও মানুষের বাড়িতে কাজে লাগিয়ে দেন রত্নার মা। বিকালে যখন রত্নাকে নিতে আসেন তখন রত্নাকে ল্যাংরার মতো হাটতে দেখে প্রশ্ন করেন,

-কীরে এমনে হাটোছ ক্যান? কী হইসে?

-আম্মা কাপড় ধুইতে যাইয়া বাথরুমে পইরা গেছিলাম।

রত্নার মা আর বেশি কিছু না বলে রত্নাকে নিয়ে বস্তিতে ফিরেন।

রাতে ঘুমানোর সময় রত্না ওর মাকে জড়িয়ে ধরে বলে,

-মা আমি না পায়ে ব্যথা পাইনাই।

-তাইলে কী হইছে।

-মা রাসেল ভাইজানে আমারে জোর কইরা ব্যথা দিছে।

রত্নার মুখে এমন কথা শোনার পর তিনি হুট করে শোয়া থেকে বসে পরলেন। তার আর বুঝতে বাকী রইল না রত্নার সাথে রাসেল সাহেব কী করেছেন?

পরদিন সকালে রত্নাকে নিয়ে রত্নার মা রাসেল সাহেবের বাসায় উপস্থিত হন।

-আপনের স্বামী আমার মাইয়াডার লগে কী করছে জানেন?

মৌমিতার আর বুঝতে বাকী রইলনা রত্নার মা কী বলতে চান? তবুও নিজের নিকৃষ্ট স্বামীকে বাঁচাতে মৌমিতা বলল,

-আফা। যা হওয়ার হইছে এখন আর এই নিয়ে বেশি চিল্লাচিল্লি করার দরকার নেই। আপনি বরং কিছু টাকা নিন।

রত্নার মা টাকাটা ছুরে ফেলে দিয়ে বলেন,

-আমগো গরীবগো ইজ্জ্বত কী আপনারা টাকা দিয়া কিনতে চান? গরীবগো কী কোন মান সম্মান নাই?

রত্নার মায়ের চেঁচামেচিতে আশেপাশের মানুষ জড়ো হয়ে গেলো। এদিকে মৌমিতার লজ্জায় মাথাকাঁটা যাওয়ার অবস্থা। হাজার চেষ্টা করার পরও কোনোভাবেই রত্নার মায়ের মুখ বন্ধ করা যাচ্ছে না। মৌমিতা তাদের কোনোমতে বুঝিয়ে বস্তিতে পাঠিয়ে দিলেন।

পরদিন রত্না ও তার মায়ের লাশ পাওয়া যায় বস্তির নর্দমার পাশে। সবাই এই ঘটনার প্রকৃত দোষী কে জেনেও মুখ খোলার মতো বিন্দুমাত্র সাহস পায়না। কারণ রাসেল সাহেবের সাথে যেমন সমাজের উচ্চপর্যায়ের লোকেদের সাথে হাত রয়েছে তেমনি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও তার হাতের মুঠোয়। যদি কেউ এব্যপারে মুখ খোলে তবে তার অবস্থাও হতে পারে রত্না ও তার মায়ের মতোই।

একসময় চাপা পরে যায় অসহায় গরীব রত্না ও তার মায়ের খুনের ঘটনা।

সবাই ভেবেছিলো রাসেলের মতো সমাজের এই রাঘব বোয়ালদের বিচার হয়ত দুনিয়াতে থাকা অবস্থায় দেখার ভাগ্য কারোরই নেই। কিন্তু তাদের এই চিন্তা চেতনাকে দুরে সরিয়ে এমন এক দেবদূতের আগমন ঘটবে তা হয়তো কারো ধারণাতেই ছিলনা।

রত্না ও তার মায়ের খুনের ঠিক একুশ দিন পর হঠাৎই নিখোজ হন রাসেল সাহেব। তিন দিন পরও যখন তার খোজ পাওয়া যাচ্ছিল না তখন তার স্ত্রী মৌমিতা এবং সমাজের উচু পর্যায়ের লোকেরা একটু নড়েচড়ে বসেন। পুলিশ যখন হাজার খোজাখুজির পরও কোনো কুলকিনারা পাচ্ছিল না তখন হঠাৎই শহরের শেষ দিকে এক পুরোনো বাংলোতে পাওয়া যায় লিঙ্গহীন রাসেল সাহেবের লাশ। রত্না ও তার মায়ের লাশের ঘটনা ধামাচাপা দিলেও রাসেল সাহেবের খুনের ঘটনায় থানা পুলিশের মধ্যে যেন এক হুলস্থুল কান্ড ঘটে চলেছে। সারাদেশের মিডিয়া কর্মীরা উঠেপরে লেগেছে যে রাসেল সাহেবের খুনিকে ধরা সম্ভব হবে কীনা?

কিন্তু একটা ব্যপার মিডিয়াকর্মীদের কাছে কিছুতেই পরিষ্কার হচ্ছেনা আর তা হলো পুলিশ কিছুতেই রাসেল সাহেবের লাশের ধারেকাছেও পৌছাতে দেয়নি তাদেরকে আর তার থেকেও বড় কথা রাসেল সাহেবের পোষ্টমর্টেম রিপোর্ট জাতির সামনে প্রকাশ করেনি। তাহলে এই খুনের মধ্যে কী কোন রহস্য লুকিয়ে রয়েছে?

হঠাৎই জাতি স্তব্ধ হয়ে গেল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের একটি স্থিরচিত্র এবং তার উপরে থাকা ক্যাপশন দেখে।

স্থিরচিত্রটি ছিল রাসেল সাহেবের লিঙ্গহীন লাশের ছবি এবং ক্যাপশনে লেখা ছিল,

"একটি অবুজ শিশুকে ধর্ষণের জন্য লিঙ্গটা আলাদা করেছি এবং দুইটি নিষ্পাপ প্রাণকে পৃথিবী ছাড়তে বাধ্য করার জন্য ওকেও এর স্বাধ গ্রহণ করার সুযোগ করে দিয়েছি। তৈরি থাকো আমি আবারো ফিরবো তোমাদের বিচার করার জন্য"

স্ট্যাটাসটি দেখার পর দেশ বিদেশের হাজার হাজার মানুষ শেয়ার করে বাহবা দিতে থাকে এই মহান ব্যক্তিকে এবং সমাজসেবক রাসেল সাহেবের দিকে থু থু ফেলতে থাকে। বাঙ্গালী ভালো কিছু দেখলে যেরকম প্রশংসা করতে জানে তেমনি খারাপ কিছু দেখলে উষ্ঠা মারতেও দ্বিধাবোধ করেনা। যার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এখানেই।

পুলিশ সেই আইডিকে ট্র্যাক করার আগেই আইডি ডিএক্টিভ করে দেওয়া হয়। উপর মহল থেকে বার বার পুলিশের উপর চাপ বাড়ছে তবুও তারা সেরকম কোনো উন্নতি করতে পারছে না। এদিকে জনগণের পক্ষ থেকে তেমন কোন চাপ না থাকায় কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছে পুলিশ। কারণ জনগণ এখন সেই দেবদূতের পক্ষ অবলম্বন করছে। আর মজার ব্যপার হলো আইডিটির নামও ছিল দেবদূত।

পুলিশ কী পারবে এই দেবদূতকে আইনের আওতায় আনতে নাকি সে এভাবেই অসহায় মানুষদের নির্মমতার বিচার চালিয়ে যাবে?

পুলিশ কী পারবে এই দেবদূতকে আইনের আওতায় আনতে নাকি সে এভাবেই অসহায়দের নির্মমতার বিচার করে যাবে? রাসেল সাহেবের হত্যার প্রায় এক সপ্তাহ পার হয়ে গেল কিন্তু পুলিশ এখনো পর্যন্ত ক্লু এর ক ও বের করতে পারেনি। এখন তাদের একমাত্র ভরসা সেই ফেইসবুক স্ট্যাটাসটি। কারণ দেবদূত স্ট্যাটাসে জানিয়ে দিয়েছে সে আবারো তার আপনরূপে ফিরে অন্ধকারের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াবে।

রাত ৮টা মাহিরা অফিস ছুটির পর বাজার করে বাসায় ফিরছে। কারণ পরিবারে তার উপার্জনক্ষম হাল ধরার মতো কোন ভাই নেই। তার বাবার শরীরটাও বেশকদিন যাবৎ ভালো যাচ্ছে না। অসুস্থ বলতে একটু বেশিই অসুস্থ কেননা বিছানা থেকে উঠে শৌচাগারে হেঁটে যেতেও তার প্রচন্ড কষ্ট হয়, একমাত্র অবলম্বন মাহিরার মা। আর এদিকে অসুস্থ বৃদ্ধা বাবা মা কে তার উপার্জনেই চালাতে হয়। একমাত্র বাবা মায়ের কারণেই তার বয়স পঁচিশ বছর হওয়া সত্ত্বেও সে এখনো বিয়ে করেনি। আজ বাজার করতে মাহিরার একটু বেশিই দেরী হয়ে গেছে তাই সে দ্রুত পা চালাচ্ছে বাড়ির দিকে। তার মনে কিছুটা ভয়ও কাজ করছে। এই রাস্তাটি বেশ কোলাহলপূর্ণ তবুও তার ভয়ের কারণ রাস্তার শেষ মাথায় চায়ের দোকানে আড্ডা জমানো আজম সাহেবের ছেলেপেলেগুলোর জন্য। কারণ মাহিরার জানামতে রাস্তা দিয়ে কোনো মেয়ে হেঁটে গেলে ওরা অশ্লীল কটুক্তি করে এবং খারাপভাবে স্পর্শ করার চেষ্টা করে। আর তার থেকেও বড় কথা গতবছর এখান থেকে দুটি মেয়ে নিঁখোজ হয়। এব্যপারে পুলিশকে জানানো হলেও পুলিশ তেমন কোন পদক্ষেপ নেয়নি। -ঐ দেখ দেখ একটা কড়া মাল যাইতাছে আমগো অনুমতি না নিয়াই। -ওহে সুন্দরী আমগো থুইয়া কই যাও। হবে নাকি এক ঘন্টা? -চল সামনে চল মাইপা দেখি। মাহিরা এসব অশ্লীল কথাবার্তা শুনেও নিজের রাগকে যথেষ্ট চেপে রাখার চেষ্টা করছে। হঠাৎ একটি ছেলে পিছন থেকে মাহিরার ওড়নাটি টেনে ধরলো। মাহিরা এবার কিছুটা ভয় পেয়ে যায় তবুও নিজের ভয়কে ওদের সামনে প্রকাশ করেনা। কারণ শত্রুপক্ষ যদি দেখে যে মিত্রপক্ষ ভয়ে পিছপা হচ্ছে তবে শত্রুপক্ষের সাহস আকাশচুম্বি হয়ে যায়। যখন একটি ছেলে মাহিরার স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয় তখন আর নিজেকে সংযত করতে পারেনা মাহিরা। ঠাস করে একটি চড় লাগিয়ে দেয় ছেলেটির গালে। ছেলেটি গালে কিছুটা হাত বুলিয়ে বলে, -বাহ মা*রতো ভালোই হাতের জোর আছে। এইবার আমগো জোর দেখানো বাকী। ঐ ওরে নিয়া আয় আমগো আস্তানায় আইজকা সেই একটা মাস্তি হইবো। ছেলেটির কথামতো বাকী ছেলেগুলো মাহিরাকে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে যায় ওদের সেই অশ্লীল নেশাঘরে। চায়ের দোকানে উপস্থিত জনতা এই দৃশ্য নিজ চোখে দেখার পরও সামান্য টু শব্দ করার সাহস পায়না। কারণ তারা ভালো করেই জানে আজম সাহেবের ছেলেদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো মানে পরদিন নিজের লাশ নর্দমায় স্থান পাওয়া। চায়ের দোকানদার জমির আলির এই ঘটনা এখন একটি সাধারণ ব্যপার মনে হয় তার কাছে। কারণ গত পাঁচবছর যাবৎ এগুলো দেখতে দেখতে তিনি অভ্যস্ত। আর এসব আশকারা পায় ছেলেগুলো আজম সাহেবের কারণেই। কারণ তার মাদক ব্যবসা চালু রাখার জন্য ছেলেগুলোকে এসব অপকর্মের সুযোগ দিয়ে সচল রাখছেন ওদের মাইন্ড সেটআপ। সারারাত পাঁচটি ছেলে মাহিরাকে নরপশুর মতো ছুবলে খাওয়ার পর সকাল হতেই মাহিরাকে ছেড়ে দেয় ওরা। ছাড়ার সময় বলে, -এই দেখ মা* তোর সবকিছু ভিডিও করে রাখছি। বেশি বারাবারি করবি ডাইরেক ভাইরাল কইরা দিমু। মাহিরা এই লজ্জা সহ্য করতে না পেরে বাড়ির ভিতরে নিজের রুমে ঢুকে দরজা আটকিয়ে একটি চিঠি টেবিলের উপরে রেখে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে দেয় নিজের অপবিত্র শরীরটিকে। এদিকে গতরাতে না ফেরা এবং আজকে ঘরে ঢুকেই মাহিরার দরজা আটকানো দেখে কিছুটা ভয় পেয়ে যান মাহিরার মা। অনেক ডাকাডাকির পরও যখন কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না তখন তিনি পাশের বাড়ির রহিম মিয়াকে ডেকে দরজা ভাঙ্গার জন্য উঠেপরে লাগেন। দরজা ভাঙ্গতেই ভেতরের দৃশ্য দেখে স্তব্ধ হয়ে মেঝেতে বসে পরেন মাহিরার মা। এদিকে মাহিরার বাবা কোনোরকম কষ্ট করে মাহিরার রুমের দিকে হেঁটে এসে ফ্যানে মাহিরার ঝুলন্ত দেহ দেখে বুকে হাত দিয়ে বসে পরেন। আশেপাশের প্রতিবেশীরাও এই দৃশ্য দেখে নিজেদের কষ্ট লোপন করার চেষ্টা করছেন। আর এদিকে মাহিরার বাবাও অজ্ঞান হয়ে যান। রহিম মিয়ার মেডিকেল পড়ুয়া ছেলে অতিদ্রুত মাহিরার বাবার পাল্স চেক করেন। কিন্তু পাল্সের কোন কম্পন তার হাতে অনুভূত হয়না। আর কোন সন্দেহ নেই যে মাহিরার শোকে মাহিরার বাবাও হার্ট এ্যাটাক করে চিরতরে বিদায় নিয়েছেন। একসঙ্গে দুই কাছের আপনজনকে হারিয়ে মাহিরার মায়ের হৃদয়টি যেন শূণ্যতায় ছেয়ে গেছে। নেই কোন অনুভূতি, নেই কোন কান্না, নেই কোন হাঁসি। মাহিরার টেবিলে থাকা চিঠি আসল ধর্ষককে চিনিয়ে দিলেও আজম সাহেবের থেকে মালকড়ি নিয়ে পুলিশ কেসটিকে অন্যভাবে ঘুড়িয়ে দেয়। নিজের মেয়ের বিচার না পাওয়া এবং স্বামী ও মেয়েকে হারিয়ে পরদিন মাহিরার মাও বিঁষকে অবলম্বন করে এই নিষ্ঠুর পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন। সাধারণ জনগণের আক্ষেপ যে, নরপশুরা চোখের সামনে ঘুরে বেড়াচ্ছে অথচ তারা কিছুই করতে পারছেনা। তাদের মনে হাজারো ক্ষোভ থাকলেও নিজের জানের মায়া ত্যাগ করে আজম সাহেবের ছেলেপেলেদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সাহস পায়না। তারা কেবল স্রষ্টার কাছে বিচার দেয় যেন এদের বিচার দুনিয়াতে না হলেও পরকালে ঠিকই যেনো হয়। স্রষ্টা সাধারণ মানুষের প্রথম আবদারটাই পূরণ করলেন। মাহিরার আত্মহত্যার ঠিক পাঁচদিন পর সেই পাঁচটি ছেলের লাশ পাওয়া যায় তাদেরই সেই অশ্লীল নেশাঘরে। এবারও তাদের প্রত্যেকের লিঙ্গ কেঁটে নেওয়া হয়েছে। এবার আর পুলিশ মিডিয়াকর্মীদের আটকে রাখতে পারেনা। সারাদেশের পত্রপত্রিকা এবং টিভি চ্যানেলে একটাই খবর, আজম সাহেবের ঔষধ তৈরির কারখানায় তারই পাঁচকর্মীকে লিঙ্গ কেঁটে হত্যা। কিন্তু মিডিয়াকর্মীরা হয়তো জানেনা ওটা ঔষধ কারখানা নাকি মাদক চোরাচালান কেন্দ্র। মিডিয়াকর্মীরা যে খবর প্রকাশ করবে সাধারণ মানুষও তাই গিলবে এটাই স্বাভাবিক। তাই মিডিয়াকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও উত্তেজিত হয়ে পরে নির্মমভাবে এই পাঁচ খুন করার ব্যপারে। তারা আসল খুনির বিচার চায়। পরদিন আরো একটি স্থিরচিত্র এবং ক্যাপশন পূর্বের রাসেল সাহেবের লিঙ্গহীন সেই স্থিরচিত্র সংবলিত স্ট্যাটাসকে মনে করিয়ে দেয় এবং হুজুগে বাঙ্গালীর চিন্তা চেতনাকে মুহূর্তেই পরিবর্তন করে দেয়। এবারো পূর্বের মতো দেশ বিদেশের হাজার হাজার মানুষ স্ট্যাটাসটি শেয়ার করতে থাকে। স্থিরচিত্রটি ছিল পাঁচটি ছেলের লিঙ্গহীন লাশের এবং ক্যাপশনে লেখা ছিল, "ওদের লিঙ্গটা কেটেছি আমার সমাজের বোন মাহিরাকে ধর্ষণ করার জন্য আর পৃথিবী থেকে বিতাড়িত করেছি ওদের কারণে নিষ্পাপ তিনটি প্রাণ অকালে ঝরে পরার জন্য।" এবারও পুলিশ আইডিটি ট্র্যাক করতে পারলোনা কারণ স্ট্যাটাস দেওয়ার ঠিক ১০মিনিটের মাথায় পূর্বের মতো আইডিটি ডিএক্টিব করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ততক্ষনে স্ট্যাটাসটি শেয়ার হয়ে গিয়েছে পুরো দেশের আনাচে কানাচে পেরিয়ে বিদেশেও। পরপর এই দুটি ঘটনার কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম চালানো সাধারণ ছেলে মেয়ে দেবদূতকে নিজেদের আইডল এর আসনে সমাসীন করেছে। এদিকে পুলিশ যেন বারংবার নাকানি চুবানি খাচ্ছে তাদের ব্যর্থতার কারণে। তাই পুলিশ হেডকোয়ার্টার সিদ্ধান্ত নিলেন এই কেসের দায়িত্ব দেওয়া হবে সবে বিসিএস পাশ করে বের হওয়া তরুণ ডিসি মারুফের হাতে। তবে কী মারুফ পারবে এই দেবদূতকে খুজে বের করতে নাকি অন্যান্য পুলিশের মতোই সেও নাকানিচুবানি খেয়ে ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে ফিরে আসবে?

পুলিশ যেন বারংবার নাকানিচুবানি খাচ্ছে তাদের ব্যর্থতার কারণে। তাই পুলিশ হেডকোয়ার্টার সিদ্ধান্ত নিলেন এই কেসের দায়িত্ব দেওয়া হবে সদ্য বিসিএস পাশ করে বের হওয়া তরুণ পুলিশ অফিসার মারুফের হাতে। তবে কী মারুফ পারবে এই দেবদূতকে খুজে বের করতে নাকি অন্যান্য পুলিশের মতো সেও নাকানিচুবানি খেয়ে ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে ফিরে আসবে? পুলিশ হেডকোয়ার্টার মারুফকে ভরসা করে এই কেসের দায়িত্ব দেওয়ার কারণ হলো ইতঃমধ্যে চারটি রহস্যজনক কেসের সমস্যা সে অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তা ও সফলতার সহিত সমাধান করেছে। মারুফের সহযোগী হিসেবে দেওয়া হয়েছে আরেক বুদ্ধিমতী পুলিশ অফিসার মিলাকে। দুইটি কেসে কোনো ক্লু না থাকায় তাদের একমাত্র ভরসা এখন ফেইসবুকের সেই আইডি থেকে দেওয়া স্ট্যাটাস। তাই তারা সিদ্ধান্ত নিলো এখন থেকেই পুলিশের সাইবার ইউনিট কে সচল রাখবে। যাতে আইডি ডিএক্টিব করার আগমুহূর্তেই তারা আইডিটি ট্র্যাক করতে পারে।

সকাল ৭টা... আলিম সাহেব তার নিজ বাসায় স্ত্রী সন্তান নিয়ে ঘুমিয়ে আছেন। এমন সময় দরজায় কড়া নাড়ার শব্দে তাদের ঘুম ভাঙ্গলো। আলিম সাহেবের স্ত্রী নুরি আলিম সাহেবের অপেক্ষা না করে নিজে দরজা খোলার জন্য এগিয়ে গেলেন চৌকাঠের দিকে। দরজার কপাট খুলতেই স্তম্ভিত হয়ে গেল নুরী। কারণ দরজার ওপাশে কতগুলো লোক হাতে রামদা আর লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎ লোকগুলো নুরীকে ধাক্কা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করেই বললো, -ঐ আলিম্মা কই তুই বাইর হ তারাতারি। লোকগুলোর হাতে দেশি অস্ত্রসজ্জ দেখে ঘরের এককোণে দাঁড়িয়ে থরথর করে কাঁপছে নুরী। আর এদিকে আলিম সাহেব বাহিরের রুমে চেঁচামেচি শুনে দৌড়ে বেডরুম থেকে বেরিয়ে এলেন। -একি তোমরা কারা? আমার অনুমতি না নিয়ে তোমাদের ঘরে ঢোকার সাহস কে দিলো? -হা হা হা হালায় কয় কী হুনছোস? -এক্ষনি বের হও নয়তো আমি পুলিশকে কল দিবো। পুলিশের কথা শুনতেই লোকগুলোর মধ্য থেকে মাস্তান টাইপ লোকটি হকিস্টিক দিয়ে আলিম সাহেবের মাথা বরাবর এক প্রকান্ড আঘাত করলো। হুট করে এভাবে আঘাত করাতে মেঝেতে লুটিয়ে পরলেন আলিম সাহেব। তৎক্ষনাত নুরি দৌড়ে এসে আলিম সাহেবকে জরিয়ে ধরে চিৎকার করে কান্না করতে লাগলেন। সকালবেলা নুরির এই কান্না কিছুটা ভয় ধরিয়ে দিলো লোকগুলোর মাঝে। কেননা এখন সহজেই চিৎকার শুনলে প্রতিবেশীরা ছুটে আসবে ঘটনার আকস্মিকতা জানার আগ্রহে। তাই মাস্তান টাইপ লোকটি নুরীকে উদ্দেশ্য করে বলল, -শোন মা*র বাচ্চা, তোর স্বামীরে নিয়া যদি পাঁচদিনের মধ্যে এই জমি আর বাড়ি না ছারোস তাইলে ডাইরেক কবরে ঢুকাইয়া দিমু। এই বলে লোকগুলো চলে গেল। আর এদিকে প্রতিবেশীরা আলিম সাহেবের ঘর থেকে চিৎকার শুনে নিজেদের ঘর থেকে যখন বের হলেন তখন ব্লাক কুদ্দুসের সাঙ্গোপাঙ্গোদের আলিম সাহেবের ঘর থেকে বের হতে দেখে কিছুটা ভয় পেয়ে গেলেন। কারণ এলাকার সবারই জানা যে ব্লাক কুদ্দুসের যদি কোন জায়গা জমি পছন্দ হয় তবে সেটা সে উসুল না করা পর্যন্ত ক্ষান্ত হয়না। কুদ্দুসের লোকগুলো যাওয়ার পর প্রতিবেশীরা আলিম সাহেবের ঘরে ঢুকে তার মুমূর্ষু অবস্থা দেখে তৎক্ষনাৎ হসপিটালে নিয়ে গেলেন। হসপিটালে আলিম সাহেবের বেডের পাশে বসে আছেন নুরী। কিছুক্ষন আগেই তার জ্ঞান ফিরেছে। নুরী জিজ্ঞেস করলো, -ওরা এভাবে ঘরে ঢুকে তোমায় হামলা করলো কেন? আর কেনইবা তোমার বাপ দাদার ভিটেবাড়ি রেখে আমাদের চলে যেতে বলছে? -ব্লাক কুদ্দুসের লোক এরা। আমার জায়গাটা নাকি ওর ফ্যাক্টরির জন্য পছন্দ হয়েছে। তাই একমাস আগে আমাকে ২০লক্ষ টাকার বিনিময়ে জায়গাটা ছেড়ে দিতে বলে। আমি কী পাগল নাকি যে এক কোটি টাকার জায়গা ২০লক্ষ টাকায় ছেড়ে দেব? আর তার থেকেও বড় কথা এখানে আমার বাব দাদার স্মৃতি রয়ে গেছে আমি কখনোই এই জায়গা ওদেরকে দিবোনা। আজই থানায় ওর নামে মামলা করবো। -শোনো আমাদের দুটি সন্তান আছে তাই তোমার এতো ঝামেলার দরকার নেই। তুমি বরং ২০লক্ষ টাকাতেই ওদের সাথে মিটমাট করে জায়গাটা ছেড়ে দাও। আমাদের এই বিপদের মধ্যে না থাকাই ভালো। -কী বলছো এগুলো? আমি কখনোই একাজ করবোনা। যা হবার হবে এর শেষটা আমি দেখে ছাড়বো। -তুমি যা করার করো আমি কালই ছেলেমেয়েদের নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যাবো। এই বলে নুরী কেবিন থেকে হনহন করে বের হয়ে গেল। আর এদিকে আলিম সাহেব বেশ চিন্তায় পরে গেলেন। তিনি খুব ভালো করেই জানেন থানায় মামলা করলেও কোন লাভ হবেনা। কারণ থানা পুলিশ ব্লাক কুদ্দুসের হাতের মুঠোয়। এর আগেও অনেক জনই আলিম সাহেবের মতোই ব্লাক কুদ্দুসের ফাঁদে পরেছিল। তারা থানাপুলিশ পর্যন্ত যাওয়ার কয়েকদিন পরই নিঁখোজ হয়। তাদের স্বজনরা পুলিশকে জানানোর পরেও পুলিশ হাবিজাবি বলে একসময় কেস বন্ধ করে দেয়। আবার অনেকেই এই ভয়ে অল্প টাকাতেই নিজ বাপ দাদার সম্পত্তি ছেড়ে অন্যত্র পারি জমায়। একদিকে স্ত্রী সন্তান ও নিজ জীবনের কথা ভেবে ভয় হয় অন্যদিকে তার এই ভিটেবাড়ি ও সম্পত্তি ছেড়ে যেতেও ইচ্ছে হয়না। আলিম সাহেব এখন ঠিক দোটানার মধ্যে ঝুলে আছে। কী করবেন ঠিক বুঝতে পারছেন না। হঠাৎ তার মাথায় একটি বুদ্ধি এলো যদিও এতে সফল হবেন কীনা তাও শিওর নন। ফেইসবুক স্ক্রুল করছিলো ফাহমিদ এমন সময় একটি গ্রুপের পোষ্টে থমকে যায় ওর চোখ। আইডিটির নামও কীরকম অদ্ভুত "দেবদূতের সাহায্যপ্রার্থী"। পোষ্টটিতে চোখ বুলাতেই দেখলো, "আমার বাপ দাদার সম্পত্তি জোরপূর্বক কেড়ে নিতে চাইছে কিছু সন্ত্রাস। শুনেছি দেবদূত নাকি অসহায় মানুষদের সাহায্য করে। তো আমাকে কী এই সন্ত্রাসদের হাত থেকে বাঁচাতে পারবে?" ফাহমিদ পোষ্টটি দেখামাত্রই তার বড় ভাই ফাহিমকে ডেকে বললো, -ভাইয়া দেখো এই অদ্ভুদ আইডি থেকে কী পোষ্ট করেছে? ফাহিম ওর নিনজা ব্লেডগুলো পরিষ্কার করতে করতে বললো, -পড়ে শোনা তুই। ফাহমিদের মুখে পোষ্টটির লেখাগুলো শুনতেই কিছুটা চমকিত ভঙ্গিতে তাকালো ওর দিকে। আলিম সাহেব ফেইসবুকে অপেক্ষা করছিলেন কোন অজানা এক আশায়। কিন্তু পোষ্ট করার দুদিন পরেও তেমন কোন রেসপন্স পেলেন না। তাই চিন্তা করলেন জায়গাটা বোধহয় ছেড়েই দিতে হবে আর কোন উপায় নেই। রাত ২টা... হঠাৎ ফোনের রিংটনে আলিম সাহেবের কাঁচা ঘুম টা ভেঙ্গে গেল। মনে মনে অজস্র গালি দিয়ে ফোনটি রিসিভ করলেন, -হ্যালো কে বলছেন? -দেবদূত। দেবদূত নামটা শুনতেই তার সারা শরীরে এক শীতল স্রোত বয়ে গেল। ঘুমের কোনো অস্তিত্বও যেন নেই তার দুনয়নে। -জ্বী জ্বী... -আপনি ওদের এড্রেসটা মেসেজে পাঠিয়ে দিন। এই বলে অপর পাশ থেকে কলটি কেটে দিলো। আলিম সাহেবের এখনো বিশ্বাসই হচ্ছে না যে দেবদূত তাকে কল দিবে। আর তিনি এও ভাবতে পারছেন না যে তার নাম্বার পেলো কোথায়। তবুও তিনি এড্রেসটি মেসেজে পাঠিয়ে দিলেন। আরো দুদিন পার হয়ে গেল। আজকেই আলিম সাহেবের বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার শেষ সময়। তিনি এখন বুঝতে পারছেন ঐদিন তার সাথে সত্যিই কেউ মজা নিয়েছিলো। তাই তিনি বাড়ির দলিলপত্র নিয়ে রওয়ানা দিলেন ব্লাক কুদ্দুসের আস্তানায়। তিনি ভাবছেন বাড়ি গাড়ি গেলে একসময় তা ফিরেও আসবে কিন্তু জীবন গেলে তা আর ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়। হঠাৎ রাস্তা দিয়ে যাবার সময় পাশের চায়ের দোকানে ভিড় দেখে কৌতুহলের বসে সেখানে উপস্থিত হন আলিম সাহেব। সবাই একনজরে তাকিয়ে আছে টিভির দিকে। আলিম সাহেব টিভির দিকে তাকাতেই তার শরীর মুহূর্তেই ঘামে ভিজে চুপচুপ করছে আর হাতপা থরথর করে কাঁপছে। "বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি আলহাজ্ব কুদ্দুস মিয়া ও তার চারজন প্রধান সহকর্মীকে হাতের কব্জি কেঁটে হত্যা। কে বা কারা এই খুনের সাথে জড়িত পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।" -একদম ঠিক হইছে এই ইবলিশের কারণে এতোদিন বহুত মানুষ অশান্তিতে আছিলো। -হ ভাই, আমার চাচার সম্পত্তি জোর কইরা নিছে। আলিম সাহেব আর একমুহূর্ত দাঁড়ালেন না সেখানে, দৌড়ে নিজের বাড়িতে চলে এলেন। তার কাছে এখন মনে হচ্ছে তাকে সত্যিই আল্লাহর কোন এক শক্তি দ্বিতীয়বার বেঁচে থাকার সুযোগ করে দিয়েছে। আর এদিকে প্রতিবারের মতোই হুজুগে বাঙ্গালী এরকম ধার্মিক ব্যক্তির হত্যাকান্ডে গর্জে উঠলো। সবজায়গাতে শুধু পুলিশ ও সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে স্ট্যাটাস। যদি লিঙ্গ কেঁটে হত্যা করা হতো তবে তারা বাহবাই দিতো কারণ সবাই জানে দেবদূত নিকৃষ্ট মানুষকে এভাবেই খুন করে। কিন্তু হত্যার ধরণ ভিন্ন দেখে সাধারণ জনগণও ধরে নিয়েছে এটা অন্য কোন কাহিনী। তাই সরকারের নিকট তারা আন্দোলন করছে যাতে খুনির অতিদ্রুত বিচার হয়। আবারো স্তম্ভিত হয়ে গেল জাতি দেবদূতের স্ট্যাটাস দেখে। স্থিরচিত্র ব্লাক কুদ্দুস ও তার সঙ্গীদের কর্তিত হাতের এবং ক্যাপশনে লেখা, -যে সন্ত্রাসরা অসহায় মানুষদের সম্পদ জোরপূর্বক কেড়ে নেয় ব্লাক কুদ্দুসের মতো তাদেরকেও এভাবে অন্ধকারে পাঠিয়ে দিবো। দেশ থেকে ধর্ষণ, লুট, হত্যার বিচার করতে দেবদূত তোমাদের আশেপাশেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। শুধু অপেক্ষার প্রহর গুণো। স্ট্যাটাসটি পোষ্ট করার সাথে সাথেই ভাইরাল হয়ে দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পরে। আর এদিকে পুলিশের সাইবার ইউনিট সাথে সাথেই আইডিটি ট্র্যাক করে। আইডিটি ট্র্যাক করে তারা দেখতে পায় শহরের শেষ দিকে পুরোনো একটি বাংলো থেকে স্ট্যাটাসটি পোষ্ট করা হয়েছে। তৎক্ষনাৎ পুলিশ অফিসার মারুফ ও তার সহযোগী মিলাসহ RAB এর একটি ফোর্স রওয়ানা দেয় দেবদূতের সন্ধানে সেই বাংলোর উদ্দেশ্যে।


0 comments

Recent Posts

See All
Enjoy
Free
E-Books
on
Just Another Bangladeshi
By
Famous Writers, Scientists, and Philosophers 
click here.gif
click here.gif

Click Here to Get  E-Books

lgbt-bangladesh.png
bottom of page