{"items":["5f7a29e05ea9e50017d49c62","5f491490b2fc920017e83f42","5f42b8e6d36d8b001817356f","5f3fd8543d97230017848e97","5f3fd0d89907940017c83e27","5f3b6453df442a0017741d68","5f3a850abf6a6e00179a6442","5e39776def6d680017318b27","5ef5594d79f0240017e4268c","5f3520c6c60fa000171ce0cc"],"styles":{"galleryType":"Columns","groupSize":1,"showArrows":true,"cubeImages":true,"cubeType":"fill","cubeRatio":1,"isVertical":true,"gallerySize":30,"collageAmount":0,"collageDensity":0,"groupTypes":"1","oneRow":false,"imageMargin":7,"galleryMargin":0,"scatter":0,"chooseBestGroup":true,"smartCrop":false,"hasThumbnails":false,"enableScroll":true,"isGrid":true,"isSlider":false,"isColumns":false,"isSlideshow":false,"cropOnlyFill":false,"fixedColumns":0,"enableInfiniteScroll":true,"isRTL":false,"minItemSize":50,"rotatingGroupTypes":"","rotatingCropRatios":"","columnWidths":"","gallerySliderImageRatio":1.7777777777777777,"numberOfImagesPerRow":3,"numberOfImagesPerCol":1,"groupsPerStrip":0,"borderRadius":0,"boxShadow":0,"gridStyle":0,"mobilePanorama":false,"placeGroupsLtr":false,"viewMode":"preview","thumbnailSpacings":4,"galleryThumbnailsAlignment":"bottom","isMasonry":false,"isAutoSlideshow":false,"slideshowLoop":false,"autoSlideshowInterval":4,"bottomInfoHeight":0,"titlePlacement":["SHOW_ON_THE_RIGHT","SHOW_BELOW"],"galleryTextAlign":"center","scrollSnap":false,"itemClick":"nothing","fullscreen":true,"videoPlay":"hover","scrollAnimation":"NO_EFFECT","slideAnimation":"SCROLL","scrollDirection":0,"scrollDuration":400,"overlayAnimation":"FADE_IN","arrowsPosition":0,"arrowsSize":23,"watermarkOpacity":40,"watermarkSize":40,"useWatermark":true,"watermarkDock":{"top":"auto","left":"auto","right":0,"bottom":0,"transform":"translate3d(0,0,0)"},"loadMoreAmount":"all","defaultShowInfoExpand":1,"allowLinkExpand":true,"expandInfoPosition":0,"allowFullscreenExpand":true,"fullscreenLoop":false,"galleryAlignExpand":"left","addToCartBorderWidth":1,"addToCartButtonText":"","slideshowInfoSize":200,"playButtonForAutoSlideShow":false,"allowSlideshowCounter":false,"hoveringBehaviour":"NEVER_SHOW","thumbnailSize":120,"magicLayoutSeed":1,"imageHoverAnimation":"NO_EFFECT","imagePlacementAnimation":"NO_EFFECT","calculateTextBoxWidthMode":"PERCENT","textBoxHeight":42,"textBoxWidth":200,"textBoxWidthPercent":75,"textImageSpace":10,"textBoxBorderRadius":0,"textBoxBorderWidth":0,"loadMoreButtonText":"","loadMoreButtonBorderWidth":1,"loadMoreButtonBorderRadius":0,"imageInfoType":"ATTACHED_BACKGROUND","itemBorderWidth":1,"itemBorderRadius":0,"itemEnableShadow":false,"itemShadowBlur":20,"itemShadowDirection":135,"itemShadowSize":10,"imageLoadingMode":"BLUR","expandAnimation":"NO_EFFECT","imageQuality":90,"usmToggle":false,"usm_a":0,"usm_r":0,"usm_t":0,"videoSound":false,"videoSpeed":"1","videoLoop":true,"gallerySizeType":"px","gallerySizePx":412,"allowTitle":true,"allowContextMenu":true,"textsHorizontalPadding":-30,"itemBorderColor":{"themeName":"color_12","value":"rgba(237,237,236,0.75)"},"showVideoPlayButton":true,"galleryLayout":2,"calculateTextBoxHeightMode":"MANUAL","targetItemSize":412,"selectedLayout":"2|bottom|1|fill|true|0|true","layoutsVersion":2,"selectedLayoutV2":2,"isSlideshowFont":true,"externalInfoHeight":42,"externalInfoWidth":0.75},"container":{"width":397,"galleryWidth":404,"galleryHeight":0,"scrollBase":0,"height":null}}
পৃথিবীতে ৯০ ফুট বা ৬০ হাত লম্বা আদমের অস্তিত্ব থাকা কি সম্ভব ?
এই প্রশ্নটা আস্তিক নাস্তিক মুক্তমনা সকলের নিকট অত্যন্ত কঠিন ও গুরুত্বপূর্ণ একটা প্রশ্ন। কারণ প্রশ্নটার উদ্ভব একটা প্রসিদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য সহীহ হাদিস থেকে। চলুন তাহলে সেই হাদিসটি আমরা দেখে নিই-
حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ هَمَّامٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ خَلَقَ اللَّهُ آدَمَ وَطُولُهُ سِتُّونَ ذِرَاعًا، ثُمَّ قَالَ اذْهَبْ فَسَلِّمْ عَلَى أُولَئِكَ مِنَ الْمَلاَئِكَةِ، فَاسْتَمِعْ مَا يُحَيُّونَكَ، تَحِيَّتُكَ وَتَحِيَّةُ ذُرِّيَّتِكَ. فَقَالَ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ. فَقَالُوا السَّلاَمُ عَلَيْكَ وَرَحْمَةُ اللَّهِ. فَزَادُوهُ وَرَحْمَةُ اللَّهِ. فَكُلُّ مَنْ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ عَلَى صُورَةِ آدَمَ، فَلَمْ يَزَلِ الْخَلْقُ يَنْقُصُ حَتَّى الآنَ “
অর্থঃ আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ বর্ণনা করেন…… আবূ হোরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত নবী (সা) থেকে, তিনি (সা) বলেন, আল্লাহ তায়ালা আদম (আ) সৃষ্টি করেছেন এই অবস্থায় যে তার উচ্চতা ছিল ষাট হাত………… অতঃপর প্রত্যেক ব্যক্তি যে জান্নাতে প্রবেশ করবে আদমের আকৃতিতেই হবে। তবে আদম সন্তানের দেহের দৈর্ঘ সর্বদা কমতে কমতে বর্তমান পরিমাপ পর্যন্ত পৌঁছেছে।
[সহীহ বুখারী (ইঃফাঃ)--> অধ্যায় ৫০-->
পরিচ্ছদ ২০০০ --> হাদিস নং ৩০৯১]
উল্লেখ্য, এই হাদিসটি সহীহ মুসলিম, মুসনাদে আহমদ, সহীহ ইবনে খুযায়মা প্রভৃতি হাদীসগ্রন্থেও হযরত আবু হুরায়রার রেওয়ায়েতে একইভাবে উদ্ব্ত হয়েছে। কাজেই বুঝাই যাচ্ছে যে, হাদিসটির সনদ অনেক শক্তিশালী।
এই হাদিসগুলর সবকয়টিতেই আদমের উচ্চতা ৬০ হাত বলা আছে।
তার মানে হাদিসের দাবী অনুযায়ী মানুষের উচ্চতা দিন দিন কমতে কমতে আজকের পর্যায়ে পৌঁছেছে। খুবি ভাল কথা, কিন্তু এই দাবিটি কি বিজ্ঞান সম্মত? বিজ্ঞান কিন্তু বলছে মোটেও না। আসুন দেখে নেই কেন।
এই প্রস্নের উত্তর খুঁজে পেতে আমাদেরকে দুইটি তথ্য জানতে হবে।
১) ইসলাম মতে আদমের কাহিনী আনুমানিক কতদিন আগের, আর বিজ্ঞান মতে আধুনিক মানুষের বিকাশ ঠিক কত বছর আগের।
২) এর পর আপনাকে জানতে হবে যে, আধুনিক মানুষের আদি পুরুষদের উচ্চতা সময়ের সাথে ঠিক কতখানি পরিবর্তিত হয়েছে।
প্রত্নতাত্ত্বিক (Anthropogenic) গবেষণার আলোকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে আমরা জানি, পৃথিবীতে আধুনিক মানুষের বিকাশ হয় আজ থেকে প্রায় ৩ লক্ষ বছর আগে।[1]
আপনি বিবর্তন না মানলেও এই তথ্য আপনাকে মানতেই হবে কেননা বিজ্ঞানিরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন বিভিন্ন সময়ে প্রাপ্ত মানব ফসিল গবেষণা করে ও আধুনিক মানুষের DNA টেস্ট সহ অন্যান্য বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার মাধ্যমে। এসব বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা বিবর্তনবাদ তত্তের সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত নয়।
পক্ষান্তরে ইসলাম অনুসারে আদমের কাহিনী বড়োজোর আনুমানিক ৬০০০ থেকে ১০ হাজার বছর আগের। [2]
কই ৩ লক্ষ বছর আর কই ৬ বা ১০ হাজার বছর। এখন প্রশ্ন হল, আদমই যদি আদি মানব হয় তো এতশত বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা কি মিথ্যা? প্রাপ্ত ফসিলগুলো কি মিথ্যা? মুমিনরা এখানে নিশ্চিত ত্যাঁনা প্যাঁচাবে, আবার এই মুমিনরাই কুরানে বিজ্ঞান খুজে বেড়ায় যা স্পষ্টত দ্বিচারিতা। যেমনঃ ডা.জাকির নায়েক কুরানে বিগ ব্যাং থিওরি আছে বলে ২১ঃ৩০ আয়াতকে তার প্রমাণ হিসেবে প্রচার করে অথচ সে বিবর্তন তত্ত্ব মানে না। অথচ বিগ ব্যাং থিওরি যেমন একটি থিওরি, তেমনি বিবর্তন তত্ত্বও (ইভোলিউশন থিওরি) একটি প্রতিষ্ঠিত থিওরি।
মানুষের বিবর্তনের ইতিহাস থেকে আমরা জানি, আজ থেকে প্রায় সত্তর হাজার বছর আগেও মানুষ ছিল প্রাণিজগতের আর দশটা প্রাণীর মত সাধারণ একটি প্রাণী। তাদের বিচরণও সীমাবদ্ধ ছিল কেবল আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যেই। পরবর্তী সময়টুকুতে মানুষ হয়ে উঠেছে সমস্ত পৃথিবীর শাসক এবং তাবৎ পৃথিবীর বাস্তু সংস্থানের জন্য হুমকিস্বরূপ। আজ মানুষ নিজেই ঈশ্বর হয়ে ওঠার দ্বারপ্রান্তে, চিরজাগ্রত তারুণ্যকে সে কেবল গ্রাসই করতে চাইছে না, সৃষ্টি এবং ধ্বংসের মত স্বর্গীয় ক্ষমতাগুলোকেও আয়ত্তে আনবার জন্য সে বদ্ধ পরিকর। [3]
যারা বিবর্তন মানতে চান না তাদের অন্তত এটা অস্বীকার করার উপায় নেই । কেননা এই তথ্য কোন বিবর্তনবাদ তত্ত্ব থেকে আসেনি, এসেছে অন্যান্য বৈজ্ঞানিক গবেষণা থেকে। এখন আমার প্রশ্ন হল আদমের কাহিনী কি ৭০ হাজার বছরেরও আগের ? উত্তর, মোটেও না। তাহলে আল্লাহ কি জানত না এই লক্ষ লক্ষ বছর আগেই মানুষ সৃষ্টি হওয়ার কাহিনী? খুবি দুঃখজনক।
হাদিসের দাবি অনুযায়ী, আদমের উচ্চতা ৬০ হাত (৯০ ফুট) ছিল, পরে ধীরে ধীরে মানুষের উচ্চতা কমতে কমতে ৫-৬ ফুটে নেমে এসেছে। এই তথ্যটা অত্যন্ত হাস্যকর, নয় কি? আর মুসলিমদের দাবি যদি মেনেও নেই, তো এটাও তো বিবর্তনবাদকেই সমর্থন করছে, নাকি? মাথায় এক ছটাক ঘিলু থাকলেও মুমিনদের ইহা বুঝা উচিৎ। এখন আমার প্রশ্ন হল, সত্যি যদি মানুষের উচ্চতা ৬০ হাত থেকে কমতে কমতে বর্তমানের পর্যায়ে আসে, তবে তো বিভিন্ন সময়ে ৬০ হাত, ৫০ হাত, ৪০ হাত, ৩০ হাত, ২০ হাত, ১০ হাত সহ আরও নানান উচ্চতার মানুষ পাওয়া যাবে। লক্ষ কক্ষ বছর আগের ডাইনসরের ফসিল পেয়েছে বিজ্ঞানিরা, আর বিভিন্ন উচ্চতার মানুষের ফসিল পেল না, ব্যাপারটা দুঃখজনক।
অথচ বিবর্তন কিন্তু হয়েছে ঠিক উল্টো নিয়মে। ফসিল রেকর্ডগুলো এটাই প্রমাণ দেয় যে, মানুষ লক্ষ লক্ষ বছর ধরে ধীরে ধীরে বিবর্তনের মাধ্যমে অনুন্নত থেকে উন্নত হয়ে আজকের অবস্থানে এসেছে। এ যাবত বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত ফসিল রেকর্ডের টাইমলাইনটা দেখে নিতে পারেন এখান থেকে।
https://australian.museum/learn/science/human-evolution/a-timeline-of-fossil-discoveries
এছাড়াও বিভিন্ন সায়েন্স জার্ণাল ও অন্যান্য বৈজ্ঞানিক সংস্থাগুলোর ওয়েবসাইটে আপনারা বিভিন্ন সময়ে আদিম মানুষের প্রাপ্ত ফসিল সম্পর্কে সচিত্র তথ্য পাবেন।
সেখানের কোথাও মানুষের উচ্চতা ৬০ হাত থাকার মতো চরমতম আজগুবি দাবী করা হয় নি, বরং তাদের সবার আকৃতিই কম বেশী আধুনিক মানুষের কাছাকাছিই ছিল, তবে বুদ্ধিতে তারা ছিল আমাদের চেয়ে হাজার গুণ পিছিয়ে।
Homo Habilis এর তথ্য দেখুন। মানুষের এই প্রজাতিটি প্রায় ২.৩ থেকে ১.৫ মিলিয়ন বছর আগে বাস করতো। মানুষের পূর্ববর্তী প্রজাতিদের চেয়ে এদের মস্তিষ্ক বড় ছিল। তবে এদের দৈহিক আকার আকৃতি সহ আরও অনেক বৈশিষ্ট্য অন্যান্য অস্ট্রালোপিথেসিয়ান প্রজাতিদের মতই ছিলো। এদের দৈহিক উচ্চতা ছিল পুরুষদের ক্ষেত্রে ১৩০ সে.মি (৪.২৬৫ ফুট) এবং নারীদের ক্ষেত্রে ১১০ সে.মি (৩.৬ ফুট)।
এদের মস্তিষ্কের গড় আকার ছিল 610 ঘন সেন্টিমিটার, যা তাদের দেহের ওজনের 1.7 % কে উপস্থাপন করে। অন্যান্য অস্ট্রোলোপিথেসিন মস্তিষ্কের তুলনায় এটি ছিল একটি উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি। [4]

ছবিঃ হোমো হাবিলিস মানবের প্রতিকৃতি
এদের সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে এবং অন্যান্য অস্ট্রালোপিথেকাস মানব প্রজাতিদের সম্পর্কে জানতে ঢু মারুন অস্ট্রালিয়ান মিউজিয়ামের ওয়েবসাইটে।
Homo Neanderthalensis দের তথ্য দেখুন। বর্বর গুহামানব হিসেবে পরিচিত মানুষের এই প্রজাতিটি ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যে প্রায় ২ লক্ষ বছর যাবৎ রাজত্ব করেছে। প্রায় 28,000 বছর পূর্বে দুনিয়া থেকে বিলুপ্ত হওয়ার আগেও দীর্ঘ সময়ের জন্য আধুনিক মানুষের সাথে সহাবস্থান করেছিল তারা। এরা সাধারণত খাটো ছিল এবং এদের আধুনিক মানুষের চেয়ে বেশি শক্তিশালী কঙ্কাল এবং পেশীবহুল দেহ ছিল। এদের পুরুষদের গড় উচ্চতা ছিল প্রায় 168 সেন্টিমিটার (৫.৫১ ফুট) এবং মহিলারা 156 সেন্টিমিটার (৫.১ ফুট) যা মোটামুটি আধুনিক মানুষদের মতই। [5]

ছবিঃ নিয়ান্ডারথাল মানবের প্রতিকৃতি
অথচ হাদিসে বলা হচ্ছে মাত্র ৬ বা ১০ হাজার বছর আগের আদমের উচ্চতা নাকি ৬০ হাত ছিল। ব্যাপারটা খুব হাস্যকর মনে হচ্ছে না?
এখন আপনি বিবর্তন না মানলেও এইসব শত শত বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন? তাহলে আপনার সাথে তর্কই বৃথা। শিশু শ্রেণীর বাচ্চাকে তো আর উচ্চ মাধ্যমিকের জ্ঞান দিয়া লাভ নাই।
আর এইসব ফসিল, ছবি, সময় গননা, এসব তো আর মিথ্যা না। আর ৩ লক্ষ বছর আগের মানুষের পূর্বপুরুষের প্রাপ্ত ফসিল তো বলে যে তাদের সাইজ কম বেশী আমাদের মতই ছিল, আর যাই হোক অন্তত ৬০ হাত বা এমন কি ১০ হাতও ছিল না, বরং আমাদের মতই ছিল। তাহলে কি আদমের কাহিনী আরও আগের, মানে ৩ লক্ষ বছরেরও আগের? ইসলামের ইতিহাস কিন্তু বলে খুব জোর ১০ হাজার বছর আগের হতে পারে।
এখন মুমিনরা নিজেদের বৈজ্ঞানিক ধর্মকে বাচাতে যা করতে পারে তা হল বিবর্তনবাদের পাশাপাশি ফসিল গবেষণা, ডি এন এ টেস্ট, electron spin resonance, thermoluminescence dating techniques সহ এই সংশ্লিষ্ট সব গবেষণা অস্বীকার করা।
মুমিনদের দাবি মানুষকে শুরুতেই আল্লাহ অনেক জ্ঞান বুদ্ধি দিয়ে, ভাষা শিক্ষা দিয়ে পাঠিয়েছেন। আমার প্রশ্ন হল, তাই যদি হয়, তবে গুহামানব কোত্থেকে এল? আদিম মানুষের এইসব ফসিল কোত্থেকে এল? মুমিনরা কি পারবে এইসব অস্বীকার করতে? এখন মুমিনরা হয়তো বলবে যে পরে হয়তো কোন কারণে মানুষ সব ভুলেটূলে গিয়ে গুহায় থেকেছে, মৌখিক ভাষা ভুলে গিয়ে চিৎকার চ্যাঁচামেচি করেছে, লেখা ভুলে গিয়ে পাথরের গায়ে আকিবুকি করেছে, চাষাবাদ ভুলে গিয়ে হান্টার-গ্যদারার হয়েছে, ৬০ হাত থেকে নামতে নামতে ৫ ফিট হয়েছে, আবারো আস্তে আস্তে সভ্য হয়েছে। হাইরে মুমিন, মাথায় যদি একটুখানি গিলু থাকতো।
আচ্ছা বিবর্তনের এসব ইতিহাস নাহয় বাদ দিলাম কিংবা অস্বীকার করলাম। কিন্তু তাই বলে কি ৬০ হাত বা ৯০ ফুট আদমের অস্তিত্ব প্রমাণ করার মতো কোন তথ্য মুমিনদের কাছে আছে ?
স্কেল ল' কিন্তু বলছে পৃথিবীতে ৯০ ফুট বা ৬০ হাত লম্বা কোন প্রাণীর অস্তিত্ব থাকা কখনোই সম্ভব না। স্কেল ল' অনুযায়ী কোন প্রাণী বা বস্তুর দেহের ওজন বাড়ে তার দেহের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধির হারের ঘনফল হিসাবে। সাধারণতঃ একজন সুস্হ সবল সুঠাম দেহের ৫ ফুট উচ্চতার পুরুষের ওজন মোটামুটি ভাবে ১১৫ পাউন্ডের মত হয়। এখন কোন মানুষের উচ্চতা যদি ১৫ ফুট হয় তবে আমরা জানি স্কেল ল' অনুযায়ী তার দেহের ওজন বেড়ে যাবে দেহের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধির হারের ঘনফল হিসাবে। মানে মাত্র তিন গুন বেশী লম্বা হওয়ার কারণে ঐ মানুষটির ওজন হবে 3^3 = 27 গুন বেশি। অর্থাৎ ১৫ ফুট মানুষটির ওজন হবে (১১৫ >< ২৭) = ৩১০৫ পাউন্ড। যা কিনা ক্যালেন্ডারে দেখা স্বাস্হ্যবান দুই কিংবা তিনটা অস্ট্রেলিয়ান গরুর ওজনের সমান। তাও আবার তাদের দেহের ওয়েট সাপোর্টের জন্য চারটা করে পা আছে এবং সোজা হয়ে দাড়াতে হয় না। [৬০ ফুট কি কংয়ের ওজন হবে ১২ x ১২ x ১২ = ১৭২৮ গুন বা ১,৯৮,৭২০ পাঊন্ড বা ১০০ টন আর ৯০ ফুট আদমের হবে ১৮X১৮X১৮X১১৫= ৬৭০৬৮০ পাঊন্ড]
আবার ১৫ কিংবা ৬০ কিংবা ৯০ ফুট লম্বা মানুষটির দেহের পেশী কিংবা হাঁড় যে পরিমাণ ভার বহন বা শক্তি প্রয়োগ করতে পারবে তা বৃদ্ধি পাবে হাঁড় এবং পেশীর পুরুত্বের আনুপাতিক হারে। ১৫ ফুট মানুষটির দেহের ভার বহন কিংবা শক্তি প্রয়োগ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে তার হাঁড় এবং পেশীর ক্রস সেকশনাল এরিয়া’র (cross sectional area) বর্গ হিসাবে। অর্থাৎ তার শক্তি হবে ৫ ফুট মানুষটির তুলনায় মাত্র
৩><৩ = ৯ গুন বেশি। মানে হল তিন গুন লম্বা হওয়ার কারণে তার ওজন বৃদ্ধি পাবে ২৭ গুন আর দেহের শক্তি বৃদ্ধি পাবে মাত্র ৯ গুন। অর্থাৎ তুলনামূলক বিচারে (দেহ এবং শক্তির) ৫ ফুট মানুষটির তুলানায় ১৫ ফুট মানুষটি হবে অনেক অনেক বেশী দুর্বল (এক তৃতীয়াংশ) এবং তার বডি স্ট্টাকচার তাকে খুব একটা সাপোর্ট দিতে পারবে না। ফলে হাটাহাটি কিংবা দৌড়াদৌড়ি করতে গেলেই তার হাঁড়গোড় ভেঙ্গে পরে থাকবার ব্যাপারে মোটামুটি নিশ্চিত থাকা যেতে পারে। শিশু থেকে পূর্ন বয়স্ক জীবনে পৌছানো তো অনেক পরের কথা। এ কারনেই লম্বা খেলোয়ারদের মাঝে আঘাতের হার অনেক বেশী থাকে। ৬০ ফুট কিংকং এর ক্ষেত্রে অনুপাতটা হবে ১৭২৮ বনাম ১৪৪ গুণ আর ৯০ ফুট আদমের ক্ষেত্রে সেটা হবে ২৭০০০ গুণ বনাম ৯০০। কিংকং কিংবা আদম এক পা হাটার আগেই হাড়গোর ভেঙ্গে মাটিতে পরে থাকবে।[6]
উদাহরণ হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড বুকে নাম লেখানো পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বাটে মানুষগুলোর দিকে তাকালেই সেটা বুঝা যায়। যেমন, পৃথিবীর জানা ইতিহাসের সবচাইতে লম্বা পুরুষ মানুষ ৮ ফুট ১১ ইঞ্চির আমেরিকান রবার্ট ওয়াল্ডো বেঁচে ছিলেন মাত্র ২২ বছর আর তাকে বিশেষ ধরণের লেগ ব্রেস ব্যবহার করে হাটতে হত। আর সবচাইতে লম্বা মহিলা চীনের জেং জিনলিয়ান বেঁচে ছিলেন মাত্র ১৭ বছর। বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা জীবিত মানুষ তুরস্কের ৮ ফুট ৩ ইঞ্চির সুলতান কোসেন ও স্বাভাবিক নন। [7]
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে লম্বা ( ৮ ফুট ৬ ইঞ্চি) মানুষ জিনাত আলিও মারা গেছেন মাত্র ২৫ বছর বয়সে।[8]

ছবিঃ তুরস্কের সুলতান কোসেন
সুতরাং উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে একথা মোটামুটি নিশ্চিত ভাবে বলা যায় যে পৃথিবীতে মানুষের উচ্চতা ১০- ফুটের উপরে যাওয়াটা সম্ভব হবে না স্কেল ল এবং পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষন শক্তির কারনে। আর ১৫ ফুট কিংবা ৩০ ফুটি আদ জাতী কিংবা ৬০ ফুটি কিংকং কিংবা ৯০ ফুট আদম তো এক কথায় অসম্ভব ব্যাপার।
তথ্যসূত্রঃ
1.https://australian.museum/learn/science/human-evolution/homo-sapiens-modern-humans/
https://www.discovermagazine.com/planet-earth/what-is-the-oldest-human-fossil
2. সিরাতে রাসুল গ্রন্থসমূহ
3. Sapiens : A Brief History of humankind --- Yuval Noah Harari,
Afterword : The Animal that Became a God
4.https://australian.museum/learn/science/human-evolution/homo-habilis/
5.https://australian.museum/learn/science/human-evolution/homo-neanderthalensis/
6.https://blog.mukto-mona.com/2011/09/25/19004/
7.https://www.guinnessworldrecords.com/news/book/2019/11/tales-of-the-tallest-men-in-the-world-and-why-they-reach-such-heights-600606
8.দৈনিক প্রথম আলো, নিউজ ২৮ এপ্রিল ২০২০, ১৩:৪০
6 comments