{"items":["5f7a29e05ea9e50017d49c62","5f491490b2fc920017e83f42","5f42b8e6d36d8b001817356f","5f3fd8543d97230017848e97","5f3fd0d89907940017c83e27","5f3b6453df442a0017741d68","5f3a850abf6a6e00179a6442","5e39776def6d680017318b27","5ef5594d79f0240017e4268c","5f3520c6c60fa000171ce0cc"],"styles":{"galleryType":"Columns","groupSize":1,"showArrows":true,"cubeImages":true,"cubeType":"fill","cubeRatio":1,"isVertical":true,"gallerySize":30,"collageAmount":0,"collageDensity":0,"groupTypes":"1","oneRow":false,"imageMargin":7,"galleryMargin":0,"scatter":0,"chooseBestGroup":true,"smartCrop":false,"hasThumbnails":false,"enableScroll":true,"isGrid":true,"isSlider":false,"isColumns":false,"isSlideshow":false,"cropOnlyFill":false,"fixedColumns":0,"enableInfiniteScroll":true,"isRTL":false,"minItemSize":50,"rotatingGroupTypes":"","rotatingCropRatios":"","columnWidths":"","gallerySliderImageRatio":1.7777777777777777,"numberOfImagesPerRow":3,"numberOfImagesPerCol":1,"groupsPerStrip":0,"borderRadius":0,"boxShadow":0,"gridStyle":0,"mobilePanorama":false,"placeGroupsLtr":false,"viewMode":"preview","thumbnailSpacings":4,"galleryThumbnailsAlignment":"bottom","isMasonry":false,"isAutoSlideshow":false,"slideshowLoop":false,"autoSlideshowInterval":4,"bottomInfoHeight":0,"titlePlacement":["SHOW_ON_THE_RIGHT","SHOW_BELOW"],"galleryTextAlign":"center","scrollSnap":false,"itemClick":"nothing","fullscreen":true,"videoPlay":"hover","scrollAnimation":"NO_EFFECT","slideAnimation":"SCROLL","scrollDirection":0,"scrollDuration":400,"overlayAnimation":"FADE_IN","arrowsPosition":0,"arrowsSize":23,"watermarkOpacity":40,"watermarkSize":40,"useWatermark":true,"watermarkDock":{"top":"auto","left":"auto","right":0,"bottom":0,"transform":"translate3d(0,0,0)"},"loadMoreAmount":"all","defaultShowInfoExpand":1,"allowLinkExpand":true,"expandInfoPosition":0,"allowFullscreenExpand":true,"fullscreenLoop":false,"galleryAlignExpand":"left","addToCartBorderWidth":1,"addToCartButtonText":"","slideshowInfoSize":200,"playButtonForAutoSlideShow":false,"allowSlideshowCounter":false,"hoveringBehaviour":"NEVER_SHOW","thumbnailSize":120,"magicLayoutSeed":1,"imageHoverAnimation":"NO_EFFECT","imagePlacementAnimation":"NO_EFFECT","calculateTextBoxWidthMode":"PERCENT","textBoxHeight":42,"textBoxWidth":200,"textBoxWidthPercent":75,"textImageSpace":10,"textBoxBorderRadius":0,"textBoxBorderWidth":0,"loadMoreButtonText":"","loadMoreButtonBorderWidth":1,"loadMoreButtonBorderRadius":0,"imageInfoType":"ATTACHED_BACKGROUND","itemBorderWidth":1,"itemBorderRadius":0,"itemEnableShadow":false,"itemShadowBlur":20,"itemShadowDirection":135,"itemShadowSize":10,"imageLoadingMode":"BLUR","expandAnimation":"NO_EFFECT","imageQuality":90,"usmToggle":false,"usm_a":0,"usm_r":0,"usm_t":0,"videoSound":false,"videoSpeed":"1","videoLoop":true,"gallerySizeType":"px","gallerySizePx":412,"allowTitle":true,"allowContextMenu":true,"textsHorizontalPadding":-30,"itemBorderColor":{"themeName":"color_12","value":"rgba(237,237,236,0.75)"},"showVideoPlayButton":true,"galleryLayout":2,"calculateTextBoxHeightMode":"MANUAL","targetItemSize":412,"selectedLayout":"2|bottom|1|fill|true|0|true","layoutsVersion":2,"selectedLayoutV2":2,"isSlideshowFont":true,"externalInfoHeight":42,"externalInfoWidth":0.75},"container":{"width":397,"galleryWidth":404,"galleryHeight":0,"scrollBase":0,"height":null}}
এই মহাবিশ্ব কি আপনা আপনি সৃষ্টি হতে পারে নাকি এর পেছনে কোন ঈশ্বরের হাত আছে? (পার্ট-১)
এই প্রশ্নটা একজন বিশ্বাসী ভাইকে করা হলে তিনি আপনাকে উত্তর দিবেন -
"অবশ্যই মহাবিশ্ব সৃষ্টির পেছনে স্রস্টার হাত আছে এবং স্রস্টা "বিগ ব্যাং" নামক মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে এই মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন।
তারপর যদি আপনি প্রশ্ন করেন এই "বিগ ব্যাং" নামক মহাবিস্ফোরণ টা কিভাবে ঘটলো ? তিনি আপনাকে উত্তর দিবেন-
"নিশ্চয়ই কেউ না কেউ এটা ঘটিয়েছে, আর এই কেউ না কেউ হলেন স্বয়ং ঈশ্বর নিজে। তিনি কূন বা হও বললেই সব হয়ে যায়।"
কিন্তু মহাবিশ্বের উৎপত্তি ব্যাখ্যায় এই ধরনের উত্তর যুক্তিবাদী, সংশয়বাদী, নাস্তিক, মুক্তমনা ও বিজ্ঞানী মহলে গ্রহণযোগ্য নয়। তাদের মনে হাজারো প্রশ্ন জাগে। বিগ ব্যাং এর পুর্বে ইশ্বর কোথায় ছিলেন ? কিভাবে ছিলেন ? একটি মাত্র বিন্দুতে সংযুক্ত সকল ভর ই বা কিভাবে সৃষ্টি হল ? কোথেকে সৃষ্টি হলো ? কিভাবে সৃষ্টি হল ?
বিগব্যাং থিওরি যখন এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছিলো না, তখন ক্যারা মাথার আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বের উৎপত্তি ব্যাখ্যায় ধর্মীয় পন্ডিতদের মতো শুধুমাত্র "বিগ ব্যাং থিওরি" তেই নাক ডুবিয়ে বসে থাকেন নি। তারা এর পেছনের রহস্য ও কারণগুলো জানতে আরও নিরন্তর গবেষণা শুরু করেন।
এই আলোচনায় আমি আধুনিক জ্যোতিপদার্থবিদ্যা ও কোয়ান্টাম বলবিদ্যার সামপ্রতিক তথ্যপ্রমাণের আলোকে দেখাবো কিভাবে ঈশ্বরের হাত ছাড়াই প্রাকৃতিকভাবে আমাদের এই মহাবিশ্বের উৎপত্তি হওয়া সম্ভব।
বিগ ব্যাং থিওরি অনুযায়ী-
"এই মহাবিশ্বের সকল ভর একটি ঘন বিন্দুবত উত্তপ্ত অবস্থা থেকে সৃষ্টি হয়েছে। অর্থাৎ মহাবিশ্বের সকল ভর একটি বিন্দুতে সংযুক্ত ছিলো অতঃপর প্রচণ্ড এক মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে সেটি বিষ্ফোরিত হয়ে সৃষ্টি করে গ্যালাক্সি, নক্ষত্র, গ্রহ ইত্যাদি এবং এটি এখনো সম্প্রসারিত হয়েই চলেছে "
মহাবিশ্বের উৎপত্তি ব্যাখ্যায় প্রথম এই "বিগ ব্যাং" এর ধারণা দিয়েছিলেন বিজ্ঞানী জর্জ লেমিত্রি ১৯২৭ সালে। তিনি আইন্সটাইনের ক্ষেত্র সমীকরণ থেকে ফ্রিদমান সমীকরণ ডেরিভেশন করে প্রস্তাব করেন যে, মহাবিশ্ব একটি সুপ্রাচীন পরমাণু থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে, যে প্রস্তাব বর্তমানে মহাবিস্ফোরণ "বিগ ব্যাং" নামে পরিচিত। পরবর্তীতে ১৯২৯ সালে বিজ্ঞানী এডউইন হাবল ল্যমেত্রির তত্ত্বের সপক্ষে একটি পর্যবেক্ষণমূলক প্রমাণ উপস্থাপন করেন। তিনি আবিষ্কার করেন যে, পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান ছায়াপথসমূহ থেকে নিঃসৃত আলোর লোহিত অপসারণ হচ্ছে এবং এই অপসারণ পৃথিবী থেকে তাদের দূরত্বের সমানুপাতিক। অর্থাৎ একটি ছায়াপথ পৃথিবী থেকে যত দূরে তা থেকে নিঃসৃত আলোর বর্ণালি ততোই লাল তথা দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের দিকে সরে যাচ্ছে।
পরবর্তীতে, মহাবিশ্বের উৎপত্তি ব্যাখ্যায় সবচেয়ে আধুনিক ও উন্নত যে থিওরি বিজ্ঞানীমহলে গৃহীত হয়েছে সেটা হল -
"ইনফ্লেশনারী বিগ ব্যাং মডেল "
যেটা ১৯৮১ সালে বিজ্ঞানী অ্যালেন গুথ সর্বপ্রথম প্রস্তাব করেছিলেন । এটাকে সংক্ষেপে "ইনফ্লেশন থিওরি" বা "স্ফীতি তত্ত্ব" বলা হয়।
এই তত্ত্বে একটি ছোট সমস্যা ছিলো।
সমস্যাটি হলো - বিজ্ঞানী গুথ তার স্ফীতি তত্ত্ব অনুযায়ী মহাবিশ্বের স্ফীতির শুরুটা কীভাবে ঘটবে সেটা বুঝতে পারলেও এর সমাপ্তি কিভাবে ঘটবে তার কোন সমাধান দিতে পারছিলেন না। এস্ট্রোফিজিক্সে এই সমস্যাটির নাম দেয়া হয়েছিল "মার্জিত নির্গমন সমস্যা" । পরবর্তীতে ১৯৮২ সালে রুশ বিজ্ঞানী আদ্রে লিন্ডে অ্যালেন গুথের পুরাতন স্ফীতি তত্ত্বে মার্জিত নির্গমন সমস্যার সমাধান করেন এবং ১৯৮৩ সালে তার "কেওটিক ইনফ্লেশন থিওরি" র মাধ্যমে আগের স্ফীতি তত্ত্বের বিভিন্ন জটিলতার সরল সমাধান দেন। ফলে গুথের "স্ফীতি তত্ত্ব" বিবর্তিত হয়ে আরও উন্নত ও গ্রহনযোগ্য হয়েছে।
স্ফীতি তত্ত্বে বলা হয়েছে -
আমাদের মহাবিশ্ব প্রাকৃতিক উপায়ে কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশনের মাধ্যমে শূন্য থেকে সৃষ্টি হয়েছে। অর্থাৎ এই মহাবিশ্বের যাত্রা শুরু হয়েছে এক শূন্য জ্যামিতি থেকে এবং কোয়ান্টাম টানেলিং এর মধ্য দিয়ে উত্তেজিত হয়েছে অশূন্য অবস্থায়। অবশেষে ইনফ্লেশন বা স্ফীতির মধ্য দিয়ে বেলুনের মতো আকারে বেড়ে আজকের অবস্থানে এসে দাড়িয়েছে।
এটা পড়ে স্বাভাবিকভাবেই মনে প্রশ্ন জাগতে পারে শূন্য থেকে আবার কিভাবে মহাবিশ্ব সৃষ্টি হওয়া সম্ভব ? এটা বুঝতে হলে আমাদেরকে প্রথমেই বুঝতে হবে কোয়ান্টাম শূন্যতা কি। কোয়ান্টাম তত্ত্ব অনুযায়ী শূন্যতাকে অনেক তাৎপর্যপুর্ণ বলে মনে করা হয়। কোয়ান্টাম বলবিদ্যার দৃষ্টিতে শূন্যতা মানে আসলে শূন্যতা নয়।
শূন্যতার মধ্যে লুকিয়ে থাকে শক্তি। যেটাকে আমরা বলি "ভ্যাকুয়াম এনার্জি"।
এই শূন্যতার মধ্যে নিহিত শক্তি ( ভ্যাকুয়াম এনার্জি) থেকে অনবরত কনা-প্রতিক্ণা তৈরি হয়ে আবার তারা সেই শক্তিতে মিলিয়ে যেতে পারে । অর্থাৎ শূন্যস্থানে প্রতিনিয়ত চলছে কণা ও প্রতিকণার সৃষ্টি ও ধ্বংসের নিরন্তর খেলা। কোয়ান্টাম শূন্যতার জগতে এই বিষয়টিকে "কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশন" বা "ভ্যাকুয়াম ফ্লাকচুয়েশন" নামে অভিহিত করা হয়।
আপনি এভাবে চিন্তা করতে পারেন -
ধরেন আপনার কাছে একটা বাক্স আছে। এটি বাতাস দ্বারা পূর্ণ আছে। এবার আপনি পাম্পের সাহায্যে ভেতর থেকে সব বাতাস বের করে নিন এবং এরকম একটা অবস্থা কল্পনা করুন যে, বাক্সের ভেতরে এখন বাতাস,ধুলাবালি বা অন্যকোন পদার্থই নেই। এবার আপনি যা পাবেন তা হল একটা শূন্য বাক্স যার ভেতরে শক্তি ছাড়া আর কিছুই নেই। এই শূন্য বাক্সটা আপনার শান্ত ও সমাহিত মনে হতে পারে। মনে হতে পারে এর ভেতরে আর কিছুই নেই বা ঘটবে না। কিন্তু কোয়ান্টাম বলবিদ্যার দৃষ্টিতে এই শূন্য বাক্সের ভেতরেই ঘটে চলেছে অনবরত ফ্লাকচুয়েশন। উল্লেখ্য,শূন্য বাক্সের এই উদাহরণ টা শুধুমাত্র আপনার মানষপটে শূন্যতার একটা চিত্র ফুটিয়ে তোলার জন্য দেয়া হয়েছে। এট আমাদের মহাবিশ্বের উৎপত্তির পেছনে যে শূন্যতার কথা ইনফ্লেশন থিওরিতে বলা হয়েছে তার সাথে রিলেটেড নয়। কারণ, প্রকৃতপক্ষে আমাদের এই বিশ্বজগত এখন আর শূন্য নেই। পদার্থ এবং তেজস্ক্রিয়তা এখন মহাবিশ্বের সবখানে রাজত্ব করছে। এই বাক্সটা যে পদার্থ দিয়ে তৈরি সেটা তেজস্ক্রিয় ক্ষয়ের মাধ্যমে শূন্য বাক্সের ভেতরে চলে যাবে। তাই মহাবিশ্বের ভেতরে থেকে আমরা কোন ব্যবস্থাকে পরম শূন্য হিসেবে ধরে নিতে পারি না। তবে আমাদের মহাবিশ্বের বাইরের শূন্যস্থানে হয়তো এভাবে ভ্যাকুয়াম ফ্লাকচুয়েশনের মাধ্যমে অনবরত অসংখ্য মহাবিশ্ব তৈরি হচ্ছে ।
এই শূন্যতার মধ্যে নিহিত শক্তি তথা "ভ্যাকুয়াম এনার্জি" (যা আসলে অসংখ্য ফোটনের সমষ্টি) থেকে তৈরি হয় ম্যাটার এবং অ্যান্টি ম্যাটার। এই ম্যটার এবং অ্যান্টি ম্যাটার উৎপন্ন হওয়ার সাথে সাথেই আবার তারা ফোটনে রূপান্তরিত হয় তথা শূন্যতায় নিহিত শক্তিতে মিলিয়ে যায়। আরেকটু সহজে অনুধাবন করার জন্য আমরা এভাবে এক্সপ্লেইন করতে পারি -
আইন্সটাইনের E=mc^2 সমীকরণ অনুযায়ী আমরা জানি শক্তি থেকে ভর পাওয়া সম্ভব এবং ভরকেও শক্তিতে রূপান্তরিত করা সম্ভব।
ঠিক এই ব্যাপারটাই ঘটেছিল মহাবিশ্ব সৃষ্টির পূর্ব মুহূর্তে।
অতএব মহাবিশ্ব সৃষ্টির শুরুতে ভর সৃষ্টির জন্য অলৌকিক কোন কিছু ঘটেছিল কিংবা ঈশ্বর ফুঁ দিয়েছিল এরকম কিছু একটা ভাববার প্রয়োজন নেই আমাদের।
এখন প্রশ্ন জাগতে পারে -
যদি ম্যাটার ও অ্যান্টি ম্যাটার তৈরি হওয়ার সাথে সাথেই একে অপরকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে শূন্যতায় মিলিয়ে যায়, তাহলে আমাদের ইউনিভার্সের এই যে বিশাল বিশাল ভরের বিলিয়ন বিলিয়ন গ্যালাক্সি, নক্ষত্র, গ্রহ, উপগ্রহ, এস্টেরয়েডস এগুলো কিভাবে এলো ?
উত্তর হলো -
শূন্যস্থানে ফ্লাকচুয়েশন এর সময় যে পরিমাণ অ্যান্টি ম্যাটার তৈরি হয় তার চেয়ে সামান্য বেশি পরিমাণে ম্যাটার তৈরি হয়। এই সামান্য বেশি পরিমাণে বলতে কত সামান্য? উত্তর হল- ম্যাটার -অ্যান্টি ম্যাটার তৈরি এবং ধ্বংসলীলার এই খেলায় প্রতি ১০ মিলিয়ন ফোটনের মধ্যে কেবলমাত্র একটি ম্যাটার সার্ভাইব করে। এভাবে সৃষ্ট ম্যাটার থেকেই একসময় বিগ ব্যাং ঘটে। মহাবিশ্ব অবিশ্বাস্যরকম গতিতে সম্প্রসারিত হতে শুরু করে। বিগ ব্যাং এর সময়ে ও এর পরবর্তী নিকটতম মুহূর্তগুলোতে মহাবিশ্বের তাপমাত্রা ছিলো অকল্পনীয়। মধ্যে মহাজাগতিক উচ্চতাপমাত্রায় তখনও ম্যাটার- এন্টিম্যাটার তৈরী ও ধ্বংসের খেলা চলতে থাকে। একসময় এভাবে ম্যাটার- অ্যান্টি ম্যাটার তৈরির প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়, মহাবিশ্ব শীতল হতে শুরু করে। তখন ম্যাটারের মৌলিক কণা কোয়ার্ক ও গ্লুয়ন মিলিত হয়ে তৈরি করে প্রোটন ও নিউট্রন। এই প্রোটন ও নিউট্রন একত্রে মিলিত হয়ে তৈরি করে প্রথম হাইড্রোজেনের নিউক্লিয়াস। তখনো ইলেকট্রনগুলো নিউক্লিয়াসের কক্ষপথে বাধা পরে নি। তার কারণ তখন তাপমাত্রা ছিলো উচ্চ । তারপর যখন তাপমাত্রা আরও কমতে থাকে তখন ইলেকট্রন গুলো নিউক্লিয়াসের কক্ষপথে আটকে পরে। এভাবে তৈরি হয় প্রথম হাইড্রোজেনের পরমাণু এবং একই সময়ে হিলিয়াম ও লিথিয়াম পরমাণুও সৃষ্টি হয়। তারপর প্রায় ৪০০ মিলিয়ন বছর পরে সৃষ্টি হয়েছে প্রথম তারকা বা নক্ষত্র। তারপর আরও অনেক অনেক সময় পরে নাক্ষত্রিক সুপারনোভা বিস্ফোরণের মাধ্যমে সৃষ্টি হয় ভারী মৌলগুলো যেমন, কার্বন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, ফ্লোরিন ইত্যাদি।

এ পর্যায়ে এসে আপনি হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন যে "সবকিছু নাহয় বুঝলাম কিন্তু তাই বলে যে স্রস্টাকে ছাড়াই মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়েছে, সেটা আপনি কিভাবে প্রমাণ করলেন ? "
ওয়েল, আমি কিন্তু অলরেডি উত্তর দিয়ে দিছি ওপরে। তারপরও আবার বলি একটু অন্যভাবে। শুনেন একদম প্রাকৃতিকভাবে শূন্যতা থেকে কোন ইশ্বরকে আমদানি করা ছাড়াই যে মহাবিশ্বের উৎপত্তি হওয়া সম্ভব সেটা বুঝতে হলে আপনাকে কোয়ান্টাম জগতের কিছু নিয়মকানুন জানতে হবে। কোয়ান্টাম জগতের নিয়মানুসারে কিছু না থাকার অবস্থা থেকে সহজেই কিছু থাকার অবস্থায় পৌছানো যায়।
ব্যাপার টা এরকম -
Nothing ---------> Something
অনস্তিত্ব --------------> অস্তিত্ব
অস্থিতিশীল অবস্থা -------> স্থিতিশীল অবস্থা
এই প্রক্রিয়াগুলোর জন্য অর্থাৎ নাথিং থেকে সামথিং, অস্থিতিশীল অবস্থা থেকে স্থিতিশীল অবস্থা কিংবা অনস্তিত্ব থেকে কোন কিছু কে অস্তিত্বে নিয়ে আসার জন্য আমাদের ঈশ্বর নামে কোন মধ্যস্বত্বভোগী ওপর ওয়ালার দরকার পরে না। অর্থাৎ
অনস্তিত্ব ------- ঈশ্বর ------- অস্তিত্ব,
অথবা,
অস্থিতিশীল অবস্থা ----- ঈশ্বর ----- স্থিতিশীল অবস্থা
এরকম কোন মধ্যস্থতা ভোগকারী ঈশ্বরের প্রয়োজন পরে না আমাদের। তাছাড়া, একেবারে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকেন থেকে বিচার করলে এই মহাবিশ্বের মোট ভর ও শক্তির উপস্তিতি কোনরকম প্রাকৃতিক নিয়মের লঙ্ঘন করে না। যেটা বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছে গানিতিক হিসাব নিকাশের মাধ্যমে। ধর্মীয় গ্রন্থগুলোতে বর্ণিত বানী এই মহাবিশ্বের উৎপত্তির পেছনে ঈশ্বরের হস্তক্ষেপের যে কাল্পনিক গালগল্প ফেঁদে বসেছে তা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে বড়ই হাস্যকর। অথচ আজ, বিজ্ঞানের সামপ্রতিক তত্ত্ব ও পর্যবেক্ষনগুলো আমাদের দেখাচ্ছে কারও হস্তক্ষেপ নয় বরং একদম প্রাকৃতিকভাবেই এই মহাবিশ্বের সৃষ্টি হওয়া সম্ভব। মহাবিশ্ব কে যদি সৃষ্টিই করা হতো তাহলে আমরা সৃষ্টির শুরুতে একটা সুশৃঙ্খল অবস্থা ও একটা সুন্দর নকশা দেখতে পেতাম। কিন্তু বিজ্ঞানের সামপ্রতিক তথ্য প্রমাণ, পর্যবেক্ষন ও পদার্থ বিজ্ঞানের চিরন্তন সূত্রগুলোর (যেমনঃ শক্তির নিত্যতা সূত্র, ভরের নিত্যতা সূত্র, তাপগতিবিদ্যার ১ম ও দ্বিতীয় সূত্র) আলোকে আমরা দেখেছি যে মহাবিশ্বের উৎপত্তি হয়েছে চরম বিশৃঙ্খল অবস্থা থেকে এবং এই বিশৃঙ্খলা তথা এন্ট্রপির পরিমাণ প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। যদি কোনভাবে কোথাও পদার্থ বিজ্ঞানের একটা চিরন্তন সূত্রের ও লঙ্ঘন হতো তবু আমরা ধরে নিতে পারতাম যে, মহাবিশ্বে অলৈকিকতা বলে কিছু আছে এবং সেটাই স্বয়ং ঈশ্বর।
এই পর্যায়ে এসে আমাদের একটা বিষয় অজানা রয়ে গেছে, সেটা হল- ফ্লাকচুয়েশন এর মাধ্যমে ম্যাটার তৈরি হওয়ার পর এই মহাবিশ্বের স্ফীতি তথা সম্প্রসারণ কিভাবে শুরু হয়েছে?
সেটা নিয়ে পার্ট-২ তে আলোচনা করবো। (চলবে)
---------------------০----------------------
তথ্যসূত্রঃ
1) The Inflationary Universe ------ Alan H. Guth
2) The Grand Design -------- Stefen Hawking & leonardMlodinow
3) A Universe from nothing -------- Lawrence M. krauss
4) শূন্য থেকে মহাবিশ্ব অভিজিৎ রায়।
2 comments