top of page

একটা দেশ ও জাতি

মূর্খতা যে একটা দেশ ও জাতির জন্য কতো বড় অভিশাপ তা এই করোনার সময় ঈদ মার্কেট গুলোতে চোখ রাখলেই স্পষ্ট ভাবে বুঝা যায়। আমাদের গ্রাম গঞ্জের বেশিরভাগ মহিলাদের অক্ষরজ্ঞান নেই বললেই চলে, বা সর্বোচ্চ নবম থেকে দশম শ্রেণী। তারপর তাদের বিয়ে হয়ে যায়। তারা সংসার করে। কিন্তু লেখাপড়ার ঘাটতিটা তাদের ভেতর থেকেই যায়। তার জলজ্যান্ত প্রমাণ এই করোনার সময় ঈদ শপিং।


এই মহামারি কি জিনিস, কিভাবে ছড়ায়, একটা ঈদে মার্কেট না করলে যে মস্ত বড় ক্ষতি হয়ে যাবেনা তা নিয়ে তাদের বিন্দুমাত্র ধারণা নেই। তাদের একটাই চিন্তা, একটা ঈদ আসছে, সেটায় বাচ্চাদের নতুন জামাকাপড় না কিনে দিলে কেমন দেখায়। বাচ্চাটা ঈদে নতুন জামা পরে না বের হতে পারলে বাচ্চাটার মন খারাপ হবে। অথচ একটাবার ভাবেনা এই শপিং করতে যেয়ে নিজের বা বাচ্চার মৃত্যু ডেকে আনছি না তো।

মার্কেট গুলো বন্ধ হবার পর এখন একটা জিনিস চালু হয়েছে, সেহেরির পর থেকে সকাল ৯ টা পর্যন্ত গোপনে সকল মার্কেট খোলা থাকে বিশেষ করে গ্রাম গুলোয়।কারন নয়টার আগ পর্যন্ত পুলিশ চেকপোস্টের কড়াকড়ি অতোটা থাকেনা। আর মহিলারাও ধরে নিয়েছে সকালে যেহেতু পুলিশ থাকেনা তার মানে করোনাও থাকেনা। তাই তারা সেহেরী করেই দলে দলে নিজের বাচ্চাকে নিয়ে ছুটে ঈদ শপিং করতে। তারা ভাবছে তারা নিজের বাচ্চার ভালো করছে, সন্তানকে খুশি করছে, অথচ তাদের অজ্ঞতা, তাকে, তার সন্তান কে তার পরিবারকে এমন কি তার দেশকে কতোটা ঝুঁকির ভেতর ফেলে দিচ্ছে তা নিয়ে তার বিন্দুমাত্র ধারণাও নেই। একজন নিরক্ষর বাবা কিংবা মা চাইলেও তার সন্তানের ভালো করতে পারেনা। ভালো করতে গিয়ে অজ্ঞতার কারনে ক্ষতি ই করে বেশি। গ্রামে দেখা যায় বাড়ির বউদের বা নিজের মেয়েদের ও তেমন দাম থাকেনা, মা শাশুড়িদের কাছে প্রতিনিয়ত নির্যাতিত হয়। মহিলারা এর ওর বদনাম নিয়ে পরে থাকে সারাদিন এর অন্যতম কারন হলো অক্ষরজ্ঞান এর অভাব। যেদিন সমাজের প্রতিটা মানুষ শিক্ষিত হয়ে যাবে সেদিন এই ধরণের অত্যাচার নির্যাতন, নিজের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া, অনেকটাই কমে যাবে।

নিরক্ষরতা যে কতো বড় অভিশাপ তা ঈদ ছুটিতে বাড়ি যাওয়া মানুষের ভীড় দেখলেই বুঝা যায়। যেখানে সব জায়গায় সামাজিক দুরত্বের কথা বলা হচ্ছে সেখানে আমাদের দেশে মানুষের ভিড় সামলাতে ফেরি চলাচল বন্ধ করতে হয়। একসাথে লক্ষ মানুষ গাদাগাদি করে বাড়ির পানে ছুটেছে, অথচ কেউ একটাবার ভাবছেনা এভাবে যে বাড়ি যাচ্ছি হতে পারে এটাই আমার শেষ বাড়ি যাওয়া। এসব মানুষগুলো যে করোনাকে সিরিয়াসলি নিচ্ছেনা তা কিন্তু না। তারাও জানে করোনা হলে বাঁচার উপায় নাই। আমার হলে আমার পরিবারের ও হতে পারে। সব কিছুই তারা জানে, কিন্তু জ্ঞানের পরিধি সীমিত থাকায় তারা ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করতে পারেনা, তাদের কাছে বর্তমানটাই মুখ্য। বর্তমানে ঈদে বাড়ি যেতে হবে বা ঈদ শপিং করতে হবে এটা নিয়েই তারা ভাবছে বেশি কিন্তু এর ফলাফল নিয়ে কারো কোন ভাবান্তর নেই। তারা ধরেই নিয়েছে আমার তো এখনো করোনা হয়নি, তাহলে বাড়ি যেতে দোষ কি, মার্কেটে যেতে দোষ কি, হয়ে গেলে দেখা যাবে। কিন্তু হয়ে গেলে যে সেটার কোন চিকিৎসা নেই সেটা তাদের মাথার আশেপাশেও নেই, হয়ে গেলে যে শুধু তার একার হবেনা, বুঝে উঠার আগে আরো শ খানেক মানুষের ভেতর অজান্তেই ছড়িয়ে দিবে ভাইরাসটা তা নিয়ে তাদের চিন্তা ভাবনা নেই। কারন একজন নিরক্ষণ কখনোই ভবিষ্যৎ ভাবতে পারেনা। যথাযথ শিক্ষাই মানুষকে ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করতে শেখায়, যে যাতি ভবিষ্যৎ নিয়ে যতো কনসার্ন সে যাতি ততো উন্নতি করে তা আমরা কালেকালে, যুগেযুগে দেখেছি। আর আমাদের মতো নিরক্ষর জাতি, যথাযথ শিক্ষার অভাবে যুগেযুগে এভাবেই নিজের বিপদ ডেকে এনেছি নিজেই, কুড়াল মেরেছি নিজের পায়ে।

এই মহামারির সময়ে বাচ্চাকে ঈদের জামা কিনে দেয়া মানে বাচ্চার পায়ে কুড়াল মারা। এই ঈদে গাদাগাদি করে নিজের পরিবারের কাছে যাওয়া মানে পরিবারের পায়ে কুড়াল মারা।

তাই পরিবারের ভালো চাইলে নিজের সন্তানের ভালো চাইলে যে যেখানে আছেন সেখানেই থাকুন, মানুষের ভিড় পরিহার করুন আর সবচেয়ে বড় কথা ঘরে থাকুন।

0 comments
Enjoy
Free
E-Books
on
Just Another Bangladeshi
By
Famous Writers, Scientists, and Philosophers 
click here.gif
click here.gif

Click Here to Get  E-Books

lgbt-bangladesh.png
bottom of page