ধর্মগ্রন্থগুলোতে বর্ণিত সৃষ্টি তত্ত্ব কি আধুনিক বিগ ব্যাং তত্ত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ? (পর্ব-৩)
এইর উওরে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বে আমরা যথাক্রমে পবিত্র বেধ ও পবিত্র কোরানে বর্ণিত সৃষ্টি তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করেছিলাম।
তৃতীয় পর্বে আমরা খ্রিস্টানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ বাইবেলে বর্ণিত সৃষ্টি তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করবো।
বাইবেল বর্ণিত সৃষ্টি তত্ত্বঃ
বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্টের আদিপুস্তক অধ্যায় শুরু হয়েছে জগতসৃষ্টির বিবরণের মাধ্যমে। সেখানে বলা হয়েছে ইশ্বর পৃথিবী, আকাশ ও এদের অভ্যন্তরীণ যাবতীয় জিনিস ছয় দিনে সৃষ্টি করে সপ্তম দিনে তিনি বিশ্রাম নিয়েছেন। ছয় দিনে বিশ্ব সৃষ্টির পুরো বিবরণটা নিচে তুলে ধরা
হলো -
জগত সৃষ্টির সূচনা
প্রথম দিন:
১) আদিতে ইশ্বর আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী সৃষ্টি করিলেন। প্রথমে পৃথিবী সম্পূর্ণ শূন্য ছিল; পৃথিবীতে কিছুই ছিল না। 2) অন্ধকারে আবৃত ছিল জলরাশি আর ঈশ্বরের আত্মা সেই জলরাশির উপর দিয়ে ভেসে বেড়াচ্ছিল।
3) তারপর ঈশ্বর বললেন, “আলো ফুটুক!” তখনই আলো ফুটতে শুরু করল
4) আলো দেখে ঈশ্বর বুঝলেন, আলো ভাল| তখন ঈশ্বর অন্ধকার থেকে আলোকে পৃথক করলেন |
5) ঈশ্বর আলোর নাম দিলেন, “দিন” এবং অন্ধকারের নাম দিলেন “রাত্রি”সন্ধ্যা হল এবং সেখানে সকাল হল | এই হল প্রথম দিন|
দ্বিতীয় দিন:
6) তারপর ঈশ্বর বললেন, “জলকে দুভাগ করবার জন্য আকাশমণ্ডলের ব্যবস্থা হোক |”
7) তাই ঈশ্বর আকাশমণ্ডলের সৃষ্টি করে জলকে পৃথক করলেন | এক ভাগ জল আকাশমণ্ডলের উপরে আর অন্য ভাগ জল আকাশমণ্ডলের নীচে থাকল|
8) ঈশ্বর আকাশমণ্ডলের নাম দিলেন “আকাশ |” সন্ধ্যা হল আর তারপর সকাল হল | এটা হল দ্বিতীয় দিন |
তৃতীয় দিন:
9) তারপর ঈশ্বর বললেন, “আকাশের নীচের জল এক জায়গায় জমা হোক যাতে শুকনো ডাঙা দেখা যায় |” এবং তা-ই হল | 10) ঈশ্বর শুকনো জমির নাম দিলেন, “পৃথিবী” এবং এক জায়গায় জমা জলের নাম দিলেন, “মহাসাগর |” ঈশ্বর দেখলেন ব্যবস্থাটা ভাল হয়েছে |
11) তখন ঈশ্বর বললেন, “পৃথিবীতে ঘাস হোক, শস্যদায়ী গাছ ও ফলের গাছপালা
হোক | ফলের গাছগুলিতে ফল আর ফলের ভেতরে বীজ হোক | প্রত্যেক উদ্ভিদ আপন আপন জাতের বীজ সৃষ্টি করুক | এইসব গাছপালা পৃথিবীতে বেড়ে উঠুক |” আর তাই-ই হল |
12) পৃথিবীতে ঘাস আর শস্যদায়ী উদ্ভিদ উত্পন্ন হল | আবার ফলদাযী গাছপালাও হল, ফলের ভেতরে বীজ হল| প্রত্যেক উদ্ভিদ আপন আপন জাতের বীজ সৃষ্টি করল এবং ঈশ্বর দেখলেন ব্যবস্থাটা ভাল হয়েছে |
13) সন্ধ্যা হল এবং সকাল হল | এভাবে হল তৃতীয় দিন |
চতুর্থ দিন:
14) তারপর ঈশ্বর বললেন, “আকাশে আলো ফুটুক | এই আলো দিন থেকে রাত্রিকে পৃথক করবে | এই আলোগুলি বিশেষ সভাশুরু করার বিশেষ বিশেষ সংকেত হিসেবে ব্যবহৃত হবে| আর দিন ও বছর বোঝাবার জন্য এই আলোগুলি ব্যবহৃত হবে|
15) পৃথিবীতে আলো দেওয়ার জন্য এই আলোগুলি আকাশে থাকবে |” এবং তা-ই হল |
16) তখন ঈশ্বর দুটি মহাজ্যোতি বানালেন | ঈশ্বর বড়টি বানালেন দিনের বেলা রাজত্ব করার জন্য আর ছোটটি বানালেন রাত্রিবেলা রাজত্ব করার জন্য | ঈশ্বর তারকারাজিও সৃষ্টি করলেন | 17) পৃথিবীকে আলো দেওয়ার জন্য ঈশ্বর এই আলোগুলিকে আকাশে স্থাপন করলেন |
18) দিন ও রাত্রিকে কর্তৃত্ত্ব দেবার জন্য ঈশ্বর এই আলোগুলিকে আকাশে সাজালেন| এই আলোগুলি আলো আর অন্ধকারকে পৃথক করে দিল এবং ঈশ্বর দেখলেন ব্যবস্থাটা ভাল হয়েছে |
19) সন্ধ্যা হল এবং সকাল হল | এভাবে চতুর্থ দিন হল |
পঞ্চম দিন:
20) তারপর ঈশ্বর বললেন, “বহু প্রকার জীবন্ত প্রাণীতে জল পূর্ণ হোক আর পৃথিবীর ওপরে আকাশে ওড়বার জন্য বহু পাখী হোক | ”
21) সুতরাং ঈশ্বর বড় বড় জলজন্তু এবং জলে বিচরণ করবে এমন সমস্ত প্রাণী সৃষ্টি করলেন | অনেক প্রকার সামুদ্রিক জীব রয়েছে এবং সে সবই ঈশ্বরের সৃষ্টি | যত রকম পাখী আকাশে ওড়ে সেইসবও ঈশ্বর বানালেন | এবং ঈশ্বর দেখলেন ব্যবস্থাটি ভাল হয়েছে |
22) ঈশ্বর এই সমস্ত প্রাণীদের আশীর্বাদ করলেন | ঈশ্বর সামুদ্রিক প্রাণীদের সংখ্যাবৃদ্ধি করে সমুদ্র ভরিয়ে তুলতে বললেন | ঈশ্বর পৃথিবীতে পাখীদের সংখ্যাবৃদ্ধি করতে বললেন |
23) সন্ধ্যা হয়ে গেল এবং তারপর সকাল হল | এভাবে পঞ্চম দিন কেটে গেল |
ষষ্ঠ দিন:
24) তারপর ঈশ্বর বললেন, “নানারকম প্রাণী পৃথিবীতে উত্পন্ন হোক | নানারকম বড় আকারের জন্তু জানোয়ার আর বুকে হেঁটে চলার নানারকম ছোট প্রাণী হোক এবং প্রচুর সংখ্যায় তাদের সংখ্যাবৃদ্ধি হোক |” তখন য়েমন তিনি বললেন সব কিছু সম্পন্ন হল |
25) সুতরাং ঈশ্বর সব রকম জন্তু জানোয়ার তেমনভাবে তৈরী করলেন| বন্য জন্তু, পোষ্য জন্তু আর বুকে হাঁটার সবরকমের ছোট ছোট প্রাণী ঈশ্বর বানালেন এবং ঈশ্বর দেখলেন প্রতিটি জিনিসই বেশ ভালো হয়েছে|
26) তখন ঈশ্বর বললেন, “এখন এস, আমরা মানুষ সৃষ্টি করি | আমাদের আদলে আমরা মানুষ সৃষ্টি করব| মানুষ হবে ঠিক আমাদের মত | তারা সমুদ্রের সমস্ত মাছের ওপরে আর আকাশের সমস্ত পাখীর ওপরে কর্তৃত্ত্ব করবে| তারা পৃথিবীর সমস্ত বড় জানোয়ার আর বুকে হাঁটা সমস্ত ছোট প্রাণীর উপরে কর্তৃত্ত্ব করবে |”
27) তাই ঈশ্বর নিজের মতোই মানুষ সৃষ্টি করলেন| মানুষ হল তাঁর ছাঁচে গড়া জীব| ঈশ্বর তাদের পুরুষ ও স্ত্রীরূপে সৃষ্টি করলেন|
28) ঈশ্বর তাদের আশীর্বাদ করে বললেন, “তোমাদের বহু সন্তানসন্ততি হোক| মানুষে মানুষে পৃথিবী পরিপূর্ণ করো এবং তোমরা পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণের ভার নাও, সমুদ্রে মাছেদের এবং বাতাসে পাখিদের শাসন করো| মাটির ওপর যা কিছু নড়েচড়ে, যাবতীয় প্রাণীকে তোমরা শাসন করো |” 29) ঈশ্বর বললেন, “আমি তোমাদের শস্যদায়ী সমস্ত গাছ ও সমস্ত ফলদাযী গাছপালা দিচ্ছি | ঐসব গাছ বীজযুক্ত ফল উত্পাদন করে | এই সমস্ত শস্য ও ফল হবে তোমাদের খাদ্য|
30) এবং জানোয়ারদের সমস্ত সবুজ গাছপালা দিচ্ছি | তাদের খাদ্য হবে সবুজ গাছপালা | পৃথিবীর সমস্ত জন্তু জানোয়ার, আকাশের সমস্ত পাখি এবং মাটির উপরে বুকে হাঁটে য়েসব কীট সবাই ঐ খাদ্য খাবে |” এবং এই সব কিছুই সম্পন্ন হল | 31) ঈশ্বর যা কিছু সৃষ্টি করেছেন সেসব কিছু দেখলেন এবং ঈশ্বর দেখলেন সমস্ত সৃষ্টিই খুব ভাল হয়েছে | সন্ধ্যা হল, তারপর সকাল হল | এভাবে ষষ্ঠ দিন হল
[ International Biblical Association https://www.wordproject.org/bibles/ben/01/1.htm#0]
এবার আমরা দেখবো বাইবেলে বর্ণিত এই সৃষ্টি তত্ত্ব আধুনিক বিজ্ঞানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা।
প্রকৃতপক্ষে বাইবেলের এই বর্ণনার সাথে আধুনিক বিজ্ঞানের সৃষ্টি তত্ত্বের বিশাল পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। এমন কি- কিছু কিছু ভাষ্য অযৌক্তিক মনে হয়। যেমন-
উপরের প্রথম দিনের বর্ণনার ১-৩ নং
উদ্ধৃতিগুলো দেখুন।
এখানে দাবী করা হচ্ছে যে, ঈশ্বর শুরুতেই আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন। পৃথিবী ঘোর ও শূন্য ছিল, এবং অন্ধকারে আবৃত ছিল জলরাশি, আর ঈশ্বরের আত্মা জলরাশির উপর ভেসে ভেরাচ্ছিল।
তারমানে, এই দাবি অনুযায়ী মহাবিশ্বের উৎপত্তির শুরুতেই পৃথিবী ও পানির অস্তিত্ব ছিলো। কিন্তু এই দাবিটি অত্যন্ত হাস্যকর ও উদ্ভট। কেননা, আধুনিক কসমোলজি অনুযায়ী আমরা জানি, বিগ ব্যাং এর পর মহাবিশ্বের উৎপত্তির প্রথমিক মুহূর্তগুলোতে পৃথিবী ও পানির কোন অস্তিত্বই ছিলো না।
আজ থেকে প্রায় ১৩.৭ বিলিয়ন বছর পূর্বে বিগ ব্যাং নামক মহাসম্প্রসারনের মাধ্যমে সিংগুলারিটি থেকে যাত্রা শুরু হয়েছে আমাদের মহাবিশ্বের [1]। তারপর থেকে মহাজাগতিক বিবর্তনের মাধ্যমে আমাদের এই মহাবিশ্ব কিভাবে তার বর্তমান অবস্থায় এসেছে, [2]। তা নিয়ে আমরা দ্বিতীয় পর্বে আলোচনা করেছিলাম। যারা দ্বিতীয় পর্ব এখনো পড়েন নি। এখান থেকে পড়ে নিন - https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1299866933550691&id=100005821900320
দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা থেকে আমরা জেনেছিলাম যে, হাইড্রোজেন পরমাণুর সৃষ্টি হয়েছিল বিগ ব্যাং এর প্রায় ৩ লক্ষ ৭৯ হাজার বছর পরে এবং একই সময়ে হিলিয়াম ও লিথিয়াম পরমাণুও সৃষ্টি হয়। পানির অণু গঠনের অক্সিজেনের মতো ভারী মৌল তখনো তৈরী হয় নি। হিলিয়াম ও লিথিয়ামের চেয়ে ভারী মৌলগুলো তৈরী হয়েছিলো বিগ ব্যাং এর বহুকাল পরে প্রথম প্রজন্মের নাক্ষত্রগুলোর সুপারনোভা বিস্ফোরণের ফলে ।
হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের সমন্বয়ে মহাবিশ্বের প্রথম জালাধারগুলো তৈরি হয়েছিল বিগ ব্যাং এর কমপক্ষে এক বিলিয়ন বছর পরে। [3]
অর্থাৎ বিগ ব্যাং এর পরেও ইশ্বরের আত্মাকে কিংবা ইসলামি বিশ্বাস অনুযায়ী আল্লাহর আরশকে পানির ওপরে ভাসিয়ে রাখার জন্য আমাদেরকে প্রায় ১ বিলিয়ন বছর অপেক্ষা করতে হয়েছিল।
সুতরাং সৃষ্টির আদিতে ইশ্বরের আত্মা জলের উপর ভেসে বেড়াচ্ছিল, এই দাবীটি মোটেও আধুনিক বিজ্ঞানের সৃষ্টি তত্ত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
আবার আমরা জানি,
বিগ ব্যাং এর পর প্রথম তারকা বা নক্ষত্র সৃষ্টি হতেই সময় লেগেছিল প্রায় ১৮০ মিলিয়ন বছর [4]।
তখনও আমাদের সূর্যের জন্ম হয় নি। সৌরজগত সৃষ্টি হয়েছিল মহাবিশ্ব সৃষ্টির প্রায় ৯.২ বিলিয়ন বছর পরে। আমাদের সূর্য হল একটি দ্বিতীয় প্রজন্মের নক্ষত্র। অর্থাৎ আগের একটা নক্ষত্র মারা যাওয়ার পর তার ধ্বংসাবশেষ থেকে প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন বছর পূর্বে সূর্যের উৎপত্তি হয় এবং একই সময়ে তার ভারী পাথুরে অংশ থেকে সৃষ্টি হয় পৃথিবীর [5]। অর্থাৎ পৃথিবীর সৃষ্টি হয়েছিল বিগ ব্যাং এর প্রায় ৯.২ বিলিয়ন বছর পর। কিন্তু আমরা দেখছি বাইবেলের ইশ্বর শুরুতেই পৃথিবী তৈরি করে ফেলেছেন যা আধুনিক বিজ্ঞানের সৃষ্টি তত্ত্বের পরিপন্থী।
আবার বাইবেলের ইশ্বর সম্ভবত দিন রাত্রির ব্যাপারটাও বুঝতেন না। কেননা ছয়দিনে সৃষ্টি বর্ণনার প্রতি ক্ষেত্রেই শেষের দিকে বলা হচ্ছে যে "সন্ধ্যা হল, সকাল হল - এভাবে যথাক্রমে ১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ, ৫ম ও ৬ষষ্ঠ দিন সম্পন্ন হল যা একেবারেই অযৌক্তিক।
অথচ আধুনিক বিজ্ঞানের আলোকে আমরা জানি পৃথিবীর আহ্নিক গতির কারণে পৃথিবীতে একই সময়ে কোথাও দিন আবার কোথাও রাত্রি সংগঠিত হয়। যেমন বাংলাদেশে যখন সকাল হয়, আমেরিকায় তখন সন্ধা নামে। বাইবেলের ইশ্বর কি এটা জানতেন না?
যাইহোক এবার আসি ২য় ও ৩য় দিনের সৃষ্টি বর্ণনা প্রসঙ্গে। এই অংশের
উদ্ধৃতিগুলো দেখুন। সহজেই বুঝা যাচ্ছে যে এগুলো অযৌক্তিক কথাবার্তা যা কোন একদল চতুর ধর্মগুরু বা পন্ডিতদের দ্বারা রচিত। এগুলো কখনোই ইশ্বরের বানী হতে পারে না।
কেননা এখানে দাবী করা হচ্ছে যে,
ইশ্বর জলকে দুভাগ করবার জন্য আকাশমণ্ডলের সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি এক ভাগ জল আকাশমণ্ডলের উপরে আর অন্য ভাগ জল আকাশমণ্ডলের নীচে রাখলেন |
অথচ আধুনিক জোতির্বিজ্ঞানের আলোকে আমরা জানি যে মহাবিশ্বে আকাশ মন্ডল বলতে আসলে কিছু নাই।
উপরের দিকে তাকালে নীল রঙের যে পর্দার মতো দেখা যায়, সেটা আসলে কোন পর্দা বা আবরণ নয়, সব শূন্য, মহাশূন্য। বায়ুমন্ডলের ধূলিকণা কর্তৃক সূর্য থেকে আগত আলোক রশ্মির বিক্ষেপণের কারণে আকাশ নীল দেখায়। কোন কণিকার ওপর আলো পড়লে সেই কণিকা আলোকে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে দেয়, যাকে আলোর বিক্ষেপণ বলে। যে আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য যত কম, সেই আলোর বিক্ষেপণ তত বেশি হয়। আলোর বিক্ষেপণ এর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের চতুর্ঘাতের ব্যস্তানুপাতিক। নীল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম, তাই আকাশে এই আলোর বিক্ষেপণ বেশি হয় ফলে দিনের বেলা আকাশ নীল দেখায়।
আর রাতের বেলা সূর্যরশ্মির অনুপস্থিতির কারনে বিচ্ছুরন ঘটেনা এবং আকাশ কালো দেখায় [6]
চতুর্থ, পঞ্চম ও ৬ষষ্ঠ দিনের
উদ্ধৃতিগুলো নিয়ে আর আলোচনা করার প্রয়োজন মনে করছি না। কারণ আমাদের এই আলোচনার মূল বিষয় ছিলো বাইবেলে বর্ণিত সৃষ্টি তত্ত্ব আধুনিক বিগ ব্যাং তত্ত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা, যার উত্তর অলরেডি আমরা পেয়ে গেছি উপরে।
উপরোক্ত আলোচার প্রেক্ষিতে পরিশেষে আমরা বলতে পারি যদিও সনাতন ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত সৃষ্টি তত্ত্ব ও কোরানে বর্ণিত সৃষ্টি তত্ত্বের কিছু কিছু কথা আধুনিক বিজ্ঞানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে হয় কিন্তু বাইবেলে বর্ণিত সৃষ্টিতত্ত্বকে কিছুতেই আধুনিক বিজ্ঞানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে হয় না।
প্রথম পর্বঃ https://www.justanotherbangladeshi.com/post/scientific-explanation-of-religious-cosmology-part-1
দ্বিতীয় পর্বঃ https://www.justanotherbangladeshi.com/post/scientific-explanation-of-religious-cosmology-part-2

---------------------০-------------------
তথ্যসূত্র:
1.https://starchild.gsfc.nasa.gov/docs/StarChild/questions/question28.html
2.https://www.universetoday.com/54756/what-is-the-big-bang-theory/
3.https://astronomy.com/news/2018/03/fingerprinting-the-very-first-stars
4.https://phys.org/news/2015-05-plentiful-early-universe.html
5.https://solarsystem.nasa.gov/planets/earth/in-depth/
https://solarsystem.nasa.gov/solar-system/sun/in-depth/
6.https://spaceplace.nasa.gov/blue-sky/en/
Comments