{"items":["5f7a29e05ea9e50017d49c62","5f491490b2fc920017e83f42","5f42b8e6d36d8b001817356f","5f3fd8543d97230017848e97","5f3fd0d89907940017c83e27","5f3b6453df442a0017741d68","5f3a850abf6a6e00179a6442","5e39776def6d680017318b27","5ef5594d79f0240017e4268c","5f3520c6c60fa000171ce0cc"],"styles":{"galleryType":"Columns","groupSize":1,"showArrows":true,"cubeImages":true,"cubeType":"fill","cubeRatio":1,"isVertical":true,"gallerySize":30,"collageAmount":0,"collageDensity":0,"groupTypes":"1","oneRow":false,"imageMargin":7,"galleryMargin":0,"scatter":0,"chooseBestGroup":true,"smartCrop":false,"hasThumbnails":false,"enableScroll":true,"isGrid":true,"isSlider":false,"isColumns":false,"isSlideshow":false,"cropOnlyFill":false,"fixedColumns":0,"enableInfiniteScroll":true,"isRTL":false,"minItemSize":50,"rotatingGroupTypes":"","rotatingCropRatios":"","columnWidths":"","gallerySliderImageRatio":1.7777777777777777,"numberOfImagesPerRow":3,"numberOfImagesPerCol":1,"groupsPerStrip":0,"borderRadius":0,"boxShadow":0,"gridStyle":0,"mobilePanorama":false,"placeGroupsLtr":false,"viewMode":"preview","thumbnailSpacings":4,"galleryThumbnailsAlignment":"bottom","isMasonry":false,"isAutoSlideshow":false,"slideshowLoop":false,"autoSlideshowInterval":4,"bottomInfoHeight":0,"titlePlacement":["SHOW_ON_THE_RIGHT","SHOW_BELOW"],"galleryTextAlign":"center","scrollSnap":false,"itemClick":"nothing","fullscreen":true,"videoPlay":"hover","scrollAnimation":"NO_EFFECT","slideAnimation":"SCROLL","scrollDirection":0,"scrollDuration":400,"overlayAnimation":"FADE_IN","arrowsPosition":0,"arrowsSize":23,"watermarkOpacity":40,"watermarkSize":40,"useWatermark":true,"watermarkDock":{"top":"auto","left":"auto","right":0,"bottom":0,"transform":"translate3d(0,0,0)"},"loadMoreAmount":"all","defaultShowInfoExpand":1,"allowLinkExpand":true,"expandInfoPosition":0,"allowFullscreenExpand":true,"fullscreenLoop":false,"galleryAlignExpand":"left","addToCartBorderWidth":1,"addToCartButtonText":"","slideshowInfoSize":200,"playButtonForAutoSlideShow":false,"allowSlideshowCounter":false,"hoveringBehaviour":"NEVER_SHOW","thumbnailSize":120,"magicLayoutSeed":1,"imageHoverAnimation":"NO_EFFECT","imagePlacementAnimation":"NO_EFFECT","calculateTextBoxWidthMode":"PERCENT","textBoxHeight":42,"textBoxWidth":200,"textBoxWidthPercent":75,"textImageSpace":10,"textBoxBorderRadius":0,"textBoxBorderWidth":0,"loadMoreButtonText":"","loadMoreButtonBorderWidth":1,"loadMoreButtonBorderRadius":0,"imageInfoType":"ATTACHED_BACKGROUND","itemBorderWidth":1,"itemBorderRadius":0,"itemEnableShadow":false,"itemShadowBlur":20,"itemShadowDirection":135,"itemShadowSize":10,"imageLoadingMode":"BLUR","expandAnimation":"NO_EFFECT","imageQuality":90,"usmToggle":false,"usm_a":0,"usm_r":0,"usm_t":0,"videoSound":false,"videoSpeed":"1","videoLoop":true,"gallerySizeType":"px","gallerySizePx":412,"allowTitle":true,"allowContextMenu":true,"textsHorizontalPadding":-30,"itemBorderColor":{"themeName":"color_12","value":"rgba(237,237,236,0.75)"},"showVideoPlayButton":true,"galleryLayout":2,"calculateTextBoxHeightMode":"MANUAL","targetItemSize":412,"selectedLayout":"2|bottom|1|fill|true|0|true","layoutsVersion":2,"selectedLayoutV2":2,"isSlideshowFont":true,"externalInfoHeight":42,"externalInfoWidth":0.75},"container":{"width":397,"galleryWidth":404,"galleryHeight":0,"scrollBase":0,"height":null}}
কে পৃথিবীর হয়ে কথা বলে ?
বিগ ব্যাং এর ফলে পদার্থ ও শক্তির বিষ্ফোরণময়ভাবে ছড়িয়ে পরার পর অজানা কাল ধরে মহাবিশ্ব ছিলো অবয়বহীন। ছিলো না কোন গ্যালাক্সি, কোন গ্রহ বা প্রাণ। সর্বত্র ছিলো অভেদ্য অন্ধকার, শূন্যে ছিল হাইড্রোজেন পরমাণু সমূহ। এখানে - ওখানে গ্যাসের অপেক্ষাকৃত ঘন পুঞ্জীভূত রূপ জেগে উঠেছিল অদৃশ্যভাবে । পদার্থের গোলকসমূহ ঘনীভূত হচ্ছিল - হাইড্রোজেনের বৃষ্টি ফোঁটাগুলো ছিলো নক্ষত্রের চাইতেও ভারী। এই গ্যাসীয় গোলকসমূহের অভ্যন্তরে প্রথম প্রজ্জ্বলিত হল নিউক্লিয়ার অগ্নি যা পদার্থের মাঝে সুপ্ত থাকে । নক্ষত্রদের প্রথম প্রজন্মটির সৃষ্টি হল, মহাবিশ্ব প্লাবিত হল আলোকে ধারায়। সেই সময়গুলোতে আলো গ্রহন করার জন্য কোন গ্রহও ছিলো না, আকাশের বিকিরণের মহিমা বর্ণনা করার মতো কোন প্রাণীও ছিলো না। নাক্ষত্রিক চুল্লীতে পারমাণবিক ফিউশনের রসায়ন দ্বারা সৃষ্টি হল ভারী পদার্থসমূহ, পুরে যাওয়া হাইড্রোজেনের দগ্ধাবশেষ, ভবিষ্যতের গ্রহ এবং জীবনগঠনের জন্য পারমাণবিক বিল্ডিংব্লকসমূহ। ভারী নক্ষত্রগুলো অচীরেই তাদের পারমাণবিক জ্বালানির মজুদ ফুরিয়ে ফেললো। বিশাল বিষ্ফোরণে কেঁপে ওঠে তারা তাদের পদার্থসমূহের বেশিরভাগই ফিরিয়ে দিলো হালকা গ্যাসে যা থেকে একসময় তারা ঘনীভূত হয়েছিল। এখানে নক্ষত্রদের মধ্যবর্তী অন্ধকার মেঘের ঝোঁপে, অনেক পদার্থ দ্বারা গঠিত হচ্ছিল নতুন নতুন গোলক। জন্ম নিল নক্ষত্রের নতুন নতুন প্রজন্মসমূহ। নিকটেই সৃষ্টি হল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গোলক, নিউক্লিয়ার অগ্নিকে প্রজ্জ্বলিত করার পক্ষে অতি ক্ষুদ্র বস্তু, গ্রহসমূহ সৃষ্টি করার পথে আন্তঃনাক্ষত্রিক কুয়াশায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গোলক। এদের মধ্যে ছিল পাথর এবং লোহার একটি ক্ষুদ্র গ্রহ, যা ছিলো আদি পৃথিবীর রূপ।
জমাট বাঁধা এবং উষ্ণ হওয়ার প্রক্রিয়ায় পৃথিবী হতে নির্গত হল মিথেন, এমোনিয়া, পানি এবং হাইড্রোজেন গ্যাস যা এর ভেতর আবদ্ধ হয়ে পড়েছিল, সৃষ্টি হল আদি জলবায়ু এবং প্রথম মহাসাগরসমূহ। সূর্যের নক্ষত্রালোকে আদি পৃথিবী অবগাহন করলো এবং উষ্ণ হয়ে উঠলো, সৃষ্টি হল ঝড়, বিদ্যুৎ চমক ও বজ্রপাত। অগ্নিগিরিগুলো উপচে পড়লো লাভাতে। এই প্রক্রিয়াসমূহ ভেঙে চূর্ণ করে ফেলল আদি জলবায়ুর উপাদানসমূহকে, ক্ষুদ্র কণাসমূহ আবার একত্রিত হয়ে সৃষ্টি করলো জটিল থেকে জটিলতর রূপ, যেগুলো মিশে গেল আদি মহাসাগরসমূহে। কিছুকাল পর সমুদ্রগুলো একটি উষ্ণ, লঘু দ্রবণের রূপ লাভ করলো। পরমাণুসমূহ গঠিত হল, কাদার পৃষ্ঠে সংগঠিত হল জটিল রাসায়নিক বিক্রিয়া এবং একদিন একটি অণু সৃষ্টি হল যা প্রায় দৈবক্রমে
সেই স্যুপসদৃশ তরলের অন্য অণু থেকে নিজের স্ব-প্রতিলিপি সৃষ্টি করতে সমর্থ
হল । সময়ের সাথে সাথে অধিকতর সমৃদ্ধ ও সূক্ষ্ম স্ব-প্রতিলিপির ক্ষমতাসম্পন্ন অণুর বিকাশ উদ্ভব ঘটলো। আরও প্রতিলিপির জন্য সবচেয়ে উৎকৃষ্ট সমন্বয়সমূহ প্রাকৃতিক নির্বাচনের ঝাঁঝরিতে নির্বাচিত হল। যেগুলো অপেক্ষাকৃত ভালোভাবে প্রতিলিপি সৃষ্টি করলো সেগুলো আরো প্রতিলিপি সম্পন্ন করলো এবং আদি সামুদ্রিক পানি ক্রমশ পাতলা হয়ে ওঠলো এবং স্ব-প্রতিলিপির ক্ষমতা সম্পন্ন জৈব অনুসমূহের জটিল সমন্বয় সাধিত হল। ক্রমশ অবোধগম্যভাবে প্রাণের সূত্রপাত হল।
এক কোষী উদ্ভিদের বিবর্তন ঘটল এবং জীব তার নিজের খাদ্য সৃষ্টি করতে শুরু করলো। সালোকসংশ্লেষন পাল্টে দিল বায়ুমন্ডলকে। আবিষ্কৃত হল লিঙ্গ-ভেদ।একদা মুক্তভাবে বসবাসরত প্রাণরূপসমূহ পরস্পরের সাথে বন্ধনে আবদ্ধ হল এবং বিশেষ কার্যসম্পন্ন জটিল কোষ সৃষ্টি করল। রাসায়নিক গ্রাহকের বিবর্তন ঘটলো এবং মহাবিশ্ব স্বাধ ও গন্ধের ক্ষমতা অর্জন করলো।
এক কোষী প্রাণী সত্তা বিবর্তিত হল বহুকোষী কলোনীতে। তাদের বিভিন্ন অংশকে বিশেষ অঙ্গব্যবস্থায় বিস্তৃত করল। বিবর্তিত হল চোখ ও কান এবং মহাবিশ্ব এখন দেখতে ও শুনতে সমর্থ হল। উদ্ভিদ এবং প্রাণীরা আবিষ্কার করল যে ভূমি জীবনকে রক্ষা করে।
প্রাণীসত্তাসমূহ দ্রুত ছুটে চলল, হামাগুড়ি দিয়ে চলল, তড়িঘড়ি করে পালিয়ে গেল, কর্কশ শব্দ সৃষ্টি করে ছুটে গেল, ক্রমাগত মসৃণ গতিতে এগিয়ে গেল, ঝাঁপটাল, আরোহন করলো এবং আকাশে উড়ে গেল। বিশাল জন্তুসমূহ কাঁপিয়ে তুলল বনাঞ্চল। আবির্ভাব ঘটল ক্ষুদ্র প্রাণীর।
তারা টিকে থাকলো তাদের ক্ষিপ্রতা এবং ধূর্ততার সাহায্যে। অতঃপর নিকটবর্তী অতীতে, কিছু ক্ষুদ্রকায় বৃক্ষবাসী প্রাণী দ্রুত নেমে আসলো বৃক্ষ থেকে। তারা হয়ে উঠল ন্যায়পরায়ণ, নিজেরা শিখে নিল যন্ত্রের ব্যবহার, শিখে নিল অন্যান্য প্রাণী, গাছপালা ও আগুনকে কিভাবে নিজের কাজে ব্যবহার করতে এবং সৃষ্টি করল ভাষা। নাক্ষত্রিক রসায়নের ভষ্ম এখন পরিণত হচ্ছিল চেতনা সম্পন্ন প্রাণীতে। ক্রমবর্ধমান গতিতে এরা আবিষ্কার করল লিখন পদ্ধতি, নগরীসমূহ, চিত্রকলা এবং বিজ্ঞান ; গ্রহ ও নক্ষত্রগুলোতে পাঠাল নভোযান।
মহাজাগতিক বিবর্তনের পনেরো বিলিয়ন বছরে হাইড্রোজেন পরমাণুসমূহ কি করতে পারে এগুলো তারই কিছু উদাহরণ। একে প্রকৃতই মনে হয় এক মহাকাব্যিক পুরাণ। কিন্তু এটি আমাদের কালের বিজ্ঞানের কাছে উন্মোচিত মহাজাগতিক বিবর্তনের একটি বর্ণনা মাত্র। আমরা এসেছি এক কঠিন পথে এবং আমরা আমাদের জন্য একটি বিপদ। কিন্তু মহাজাগতিক বিবর্তনের যে কোন বর্ণনাই এটি স্পষ্ট করে দেয়, যে পৃথিবীর সকল প্রাণী এবং গ্যালাকটিক হাইড্রোজেন ইন্ডাস্ট্রির সামপ্রতিক উপাদানসমূহ সযত্নে লালনযোগ্য। হয়তো অন্য কোথাও ঘটছে পদার্থের সবিষ্ময়কর রূপান্তর, তাই আকাশে কোন গুঞ্জন শুনার জন্য আমরা ব্যাকুলভাবে কান পেতে রই।
আজ থেকে কয়েক মিলিয়ন বছর পূর্বে ছিল না কোনো মানুষ। এখন থেকে কয়েক মিলিয়ন বছর পর এখানে কারা থাকবে? আমাদের গ্রহের পুরো ৪.৬ বিলিয়ন বছরের ইতিহাসে, এখান থেকে তেমন কিছুই অন্য কোথাও যায় নি। কিন্তু এখন ক্ষুদ্র, মনুষ্যবিহীন, চকচকে ও চমৎকার নভোযানসমূহ ছুটে চলছে সৌরজগতের ভিতর দিয়ে। আমরা ২০টি গ্রহের প্রাথমিক তথ্যানুসন্ধান সম্পন্ন করেছি,তাদের মধ্যে সবগুলো গ্রহ খালিচোখে দৃশ্যমান, যারা রাতের বেলা আলোর উৎস হয়ে আমাদের পূর্বসূরিদেরকে আলোড়িত করতো অনুধাবন ও আনন্দের অন্বেষণে।
আমরা মহাবিশ্বের স্থানীয় মূর্ত প্রকাশ, যারা হয়ে ওঠেছি আত্ম-সচেতন। আমরা আমাদের উৎসসমূহকে নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতে শুরু করেছি ; নক্ষত্রের উপাদানসমূহ সৃষ্টি করছে নক্ষত্রগুলোকে, দশ বিলিয়ন বিলিয়ন বিলিয়ন পরমাণুর সুসংগত সমাবেশ নিয়ন্ত্রণ করছে পরমাণুগুলোর বিবর্তনকে ; চিহ্নিত হয়েছে সেই দীর্ঘ ভ্রমণ যার মাধ্যমে এখানে শেষ পর্যন্ত জেগে উঠলো চেতনা। আমাদের আনুগত্য প্রজাতিসমূহ এবং গ্রহটির প্রতি। আমরা কথা বলি পৃথিবীর হয়ে।টিকে থাকার জন্য আমাদের বাধ্যবাধকতা কেবল আমাদের কাছেই ঋণী নয়, মহাবিশ্বের কাছেও , যা প্রাচীন এবং বিশাল- ব্যপ্ত, যা থেকে আমরা জন্মলাভ করেছি।
-----------------------0-----------------------
কার্ল সেগানের কসমস থেকে অনুবাদকৃত
উল্লেখ্য, এই বইটি আমার সবচেয়ে প্রিয়। এ যাবৎ বিজ্ঞানীদের যতগুলো বই পড়েছি তারমধ্য এই বইটিই আমাকে ভেতর থেকে সবচেয়ে বেশি নাড়া দিয়েছে, মহাবিশ্বকে, পৃথিবীকে মানবীয় আবেদনের দৃষ্টিতে উপলব্ধি করতে শিখিয়েছে। এই বইয়ের প্রতিটি লেখা আমার কাছে যেন অমৃতের মতো লাগে। এই বিশাল মহাজাগতিক সমুদ্রের বুকে ভাসমান ধূলিকণাসম একটি গ্রহে আমরা আজ সত্যিই বড় অসহায়। কে আসবে আমাদের রক্ষা করতে যদি আমরা নিজেরাই নিজেদেরকে রক্ষা না করি? বইটি পড়ে দেখার জন্য আপনাদের প্রতি অনুরোধ রইলো।
0 comments