সংখ্যাগরিষ্ঠ্যতার কালো চশমা খুলে দেখুন। আমরা সবাই অপরাধী।
সংখ্যাগরিষ্ঠ্যতা খুব অদ্ভুত একটা প্রিভিলেজ। এটা আপনাকে অন্ধ করে দিবে। জর্জ ফ্লয়েড নামক এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে হাতকড়া পড়ানো অবস্থায় একজন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার গলায় পাড়া দিয়ে মেরে ফেলেছে। এটা পুলিশ কর্তৃক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি হত্যা বা নৃশংসতার প্রথম উদাহরণ না। প্রতি মাসেই যুক্তরাষ্ট্রের কোথাও না কোথাও হচ্ছে। অথচ আপনি যদি একজন গড়পড়তা শ্বেতাঙ্গ নাগরিককে জিজ্ঞেস করেন কৃষ্ণাঙ্গদের সাথে কোন অন্যায় হচ্ছে কিনা, বেশীভাগই উত্তর দেবেন, কই, নাতো। ঐ কালোরা একটু উশৃংখল তাই ওদের টাইট দেয়ার জন্য পুলিশকে একটু কঠোর হতে হয়। এই যা।
ভারতেও একইরকম ঘটনা। একটা মধ্যযুগীয় আইন দিয়ে কোটি কোটি মুসলমানকে রাষ্ট্রহীন করে ফেলা হলো, অথচ বেশীভাগ হিন্দু মোদীকে এই বিষয়ে সমর্থন দিলেন। মনে রাখবেন, এতো র্যাডিকাল আইন সংখ্যাগরিষ্ঠের নৈতিক সমর্থন ছাড়া হয়না। এগুলো পপুলিস্ট সিদ্ধান্ত। পাকিস্তানেও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বছরের পর বছর আহমাদিয়াদের উপর নির্যাতন করা হয়েছে। চীনের উইঘরের মুসলমানদের কথাও আমরা সবাই জানি। এসব বিষয়েও সাধারণ পাকিস্তানি বা সাধারণ চাইনিজ নাগরিকেরা বেশ নির্বিকার।
আমরা বিদেশের এই সংবাদগুলো খবরে দেখি আর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলি- ভাগ্যিস, আমাদের দেশে এমন কিছু হয়না। সত্যি হয়না? চলুন একটু সংখ্যাগরিষ্ঠ্যতার কালো চশমাটা খুলে দেখি।
বাংলাদেশের আইনে ধর্ম অবমাননা একটি অপরাধ। ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করার কারণে একাধিক ব্যক্তির শাস্তিও হয়েছে। একটা কৌতুক ছাপানোর কারনে ‘আলপিন’ নামক একটা পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। সেসব ঠিক আছে। মেনে নিলাম। কিন্তু এই যে প্রতি বছর দুর্গা পুজার আগে নিয়ম করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মহাউৎসবে মন্দির ভাঙ্গা হয়, প্রতিমা ধ্বংস করা হয়, এর বিচার হয় কখনো? একটু গুগল করে দেখুন তো, “মন্দির ভাঙ্গার অপরাধে এক যুবকের জেল” এই সংবাদটা কোথাও পান কিনা? ইসলামবিরোধী কথা লিখে বিভিন্ন লেখকের কল্লা গেছে, গ্রেফতার করা হয়েছে। অথচ একদম ভদ্দরলোকের মসজিদেও “ইহুদী-নাসারা-খ্রিষ্টানদের খতম করতে হবে” বলে বয়ান দেয়া হুজুরের কোন শাস্তি হয়েছে? বা কেউ এটাকে আদৌ ধর্মীয় উস্কানিমূলক বক্তব্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে? আদিবাসীদের দশকের পর দশক গৃহহীন করা হয়েছে। হত্যা করা হয়েছে, ধর্ষণ করা হয়েছে। তাঁর বিচার হয়েছে? আপনার দেশের আইন সকল ধর্ম, সকল বর্ণের মানুষকে একই সুরক্ষা দেয়? এই বিচারহীনতায় আপনার সমাজের মানুষ কি একটুও উদবিগ্ন বা লজ্জিত?

একজন মেঘমল্লার বসু একটা ‘মিম’ শেয়ার করেছে বলে তাঁর মুন্ডুপাতের দাবি উঠেছে। কিন্তু সে ব্যাটা জীবনের ২৪টা বছরে কতবার মা*উন গালি শুনলো, ৯০% মুসলমানের এই দেশে সেই বিচার কে করবে?
আপনার কথাগুলো সত্যিই যথার্থ
আপনার কথার যুক্তি কথা আছে । তবে বর্তমানের সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার করার পরিমাণটা এখন কমে এসেছে ...
ঠিক বলেছেন, সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের বিচার করার জন্য কেউ নেই
আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার বন্ধ করা
কথায় আছে জোর যার মুল্লুক তার, সে জন্য সবসময়ই সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হন