মূর্তিপূজা
বিশেষ করে ভারত ও বাংলাদেশ অসংখ্য মূর্তি পূজার আয়োজন করা হয়।
মাটি দিয়ে তৈরি করে একটি মূর্তি আমরা তাহাকে ঈশ্বর সমর্থন করি। এবং তাকে পূজা দেই, সুতরাং সেই মূর্তির সামনে হাত জোড় করে চোখ বন্ধ করে আমরা অনেকেই অনেক কিছুই চাওয়া পাওয়া নিয়ে মিনতি করতে থাকি।
আবার অনেকেই সেই মূর্তির সামনে নিজেকে রক্ষা করার জন্য ,নিজের পরিবারকে রক্ষা করার জন্য, অনেক রকম মানস্য ও -মিনতি করেন।
আমার প্রশ্ন•সংক্ষিপ্তভাবে বলছি, যেমন দুর্গা তাহার দশটি হাত রয়েছে। এবং দশটি হাতে ১০ রকম অস্ত্রশস্ত্র আছে। সেই দশটি হাত এবং দশটি হাতের অস্ত্র শস্ত্র দ্বারা, দুষ্কর্ম ও পাপাচারীদের ধ্বংস করেন।সেটা আমরা বিশেষ করে সিনেমা বা মুভিতে দেখতে পাই। কিন্তু বাংলাদেশের অসংখ্য জায়গায় অসংখ্য মূর্তিকে দিন দুপুরে ও রাতের অন্ধকারে প্রকাশিত ভাবে কিংবা কৌশলে ভেঙ্গে ফেলা হয়। বলা যেতে পারে আঘাত আনা হয় ঈশ্বরের উপর। কিন্তু সেই দেবী দুর্গার দশটি হাতে ১০ রকম অস্ত্র থাকা সত্ত্বেও সে কিছুই করতে পারল না। সে পারলো না নিজেকেই রক্ষা করতে, আবার সে কি-না আমাদের রক্ষা করবে। সে পারল না যে তাকে আঘাত করছে সে তাকে প্রত্যাঘাত করতে।
একটি বার ভাবুন আপনারা কি করছেন, একটি বার ভাবুন আপনারা যা করছেন তাহা শাস্ত্র সম্মত কি-না আপনাদের অজ্ঞানতা ।
চলুন দেখি বেদ কি বলে
ও৩ম্ ন তস্য প্রতিমা অস্তি য়স্য নাম মহদ্যশঃ।
হিরণ্যগর্ভ ইত্যিষ মা মা হিংসীদিত্যেষা
য়স্মান্ন জাতঃ ইত্যেষঃ।।
-মন্ত্র নং ২১/ যজুর্বেদ ৩২/৩
পদার্থ -
ন--- না তস্য---তাহার প্রতিমা--- প্রতিকৃতি অস্তি---হয় যস্য---যাঁহার নাম---নাম মহৎ--বৃহৎ যশঃ---কীত্তিকর হিরণ্যগর্ভ --জ্যোতিষ্কমণ্ডলের আধার ইতি--এই এষঃ--ইহা মা--না মা--আমাকে, জীবাত্মাকে হিংসীৎ-- তাড়না করিও না,বিমুখ করিও না ইতি--এই এষাঃ--এই প্রার্থনা যস্মাৎ--এবং যে জন্য ন--নয় জাতঃ---উৎপন্ন ইতি--এই প্রকার এষঃ-- পরমাত্মা।
বঙ্গানুবাদ- মহতি কীর্তিতে যাহার নামের স্মরণ হয়। যাহার গর্ভে জ্যোতিষ্কমণ্ডলী স্থান পাইয়াছে বলিয়া প্রত্যক্ষ, আমাকে তোমা হইতে বিমুখ করিও না। এইরূপ ভাবে যাহার প্রার্থনা করিতে হয়, এবং জন্মগ্রহণাদি করেন নাই,এজন্য যাঁহার উপাসনা বিধেয় সেই পরমাত্মার কোন প্রতিকৃতি বা মূর্তি নাই।।
মন্ত্র নং ২১/ যজুর্বেদ ৩২/৩
তাহলে বুঝতেই পারছেন পরমাত্মা যেহেতু জন্মগ্রহণ করেন নাই, তাহলে তার মূর্তি কোথায় হতে আসলো। সেটা কি শাস্ত্রবিরোধী নয়? সেটা কি আমাদের অজ্ঞানতা নয়?
পরমাত্মার কোন প্রতিমা নাই। তাহাতেই বিশ্বজগৎ অবস্থিত তিনি প্রত্যক্ষ। পরমাত্মা হইতে যেন বিমুখ না হই।তাঁহার নিকট এইরূপ প্রার্থনা করিতে হয়,এবং জন্ম মৃত্যু তাঁহাকে গ্রাস করিতে পারে না বলিয়া তিনিই উপাসনার যোগ্য।
Comments