মানব রূপী জ্বীন ২য় পর্ব
আমার দাদীর বাসায় একটা সমস্যা হচ্ছে টয়লেটে যেতে হলে একটু হেটে দূরে যেতে হয়। আপনারা যারা গ্রামে খুব একটা জাননা তারা প্রত্যেকেরই হয়তো টয়লেট নিয়ে অভিযোগ আছে কিছুটা হলেও। যাইহোক আমাদের গ্রামের টয়লেটটির চারপাশ গাছপালায় ভরা কোনো কিছু না থাকলেও গাছপালা যখন বাতাসে নরে স্বাভাবিকভাবেই এক ধরনের ভয় কাজ করে।সিয়াম বলেছিলো আপনাদের পরের দিন সকালে আমাদের কাকার শ্বশুর বাড়ি যেতে হবে কিন্তু সেই রাতেই আমাদের সাথে আরেকটি ভৌতিক ঘটনা ঘটে সেটা বলে নেই।
তখন রাত ২:৩০/২:৩৫ এমন সময় হবে তখন আমার প্রকৃতির ডাক অনুভব করি। তাই রাতের বেলা বাধ্য হয়ে টয়লেটে যেতে বের হই। আর তখনো আমার দাদার বাসায় কারেন্ট নেওয়া হয়নি তো হারিকেন ও কপি ব্যবহার করা হয়।আমি ভাবলাম একা যাবো এত রাতে এভাবেই অনেক অন্ধকার তা হয়তো ঠিক হবে না।সিয়াম ঘুমে বিভোর ছিলো তাই ওর ঘুমটা নষ্ট করার ইচ্ছে জাগলো না মনে। আমার এক কাজিন ছিলো জিহাদ নামের ওকে নিয়ে গেলাম যদিও ছোট তবে গ্রামের ছেলে তো সাহস অনেক তেমন ভয় পায় না।তারপর টয়লেটে যাওয়ার পর পথে কিছুটা দূর থেকে কেমন যেনো একটা বিকট বিশ্রী গন্ধ আসে যা আমি আগে কখনো পাইনি আমার দাদার বাড়ি আসার পর।তারপর আমি জিজ্ঞাসা করি কীরে জিহাদ কোনো গন্ধ পাস কিনা জিহাদও সহমত পোষণ করলো। আমাদের সাথে হারিকেন ছিলো যার কারণে তেমন একটা ভয় কাজ করে না তারপর কাজ শেষে পিছন দিক দিয়ে বাসায় যাবো তখন পিছনে ফিরতেই দেখি কালাম কাকা।
উনি সাথে সাথে হারিকেন নিভিয়ে দেয়।এতে করে আমি কিছুটা রেগে যাই আর বলি তুমি হারিকেন নিভাইসো ক্যানো এই গ্রাম নাকী ভূতে ভরা আর এর মধ্যে তুমি আইছো মজা করতে,আগের থেকে চালাক হইয়া গেছো ঠিকি কিন্তু পাগলামি যায় নাই।
তখন কালাম কাকা বলে উঠে আমি থাকতে তোগো দুইজন রে জ্বীন-ভূত এসব ধরবো কিভাবে।তোর কাকারে সব জ্বীন-ভূত ভয় পায় এটা বলে হাসতে থাকে আর ঠিক তখনই সিয়াম চলে আসে টয়লেটে যাবে তাই। তখন আমরা ৪জন একসাথে।
সিয়াম তখন বলে এরকম বিশ্রী গন্ধ আসে কোনদিক থেকে রে দোস্ত,চলতো সবাই মিলে দেখি কিন্তু জিহাদ তখন মানা করে যে ভাইয়া এতো রাতে এসবদিকে যাওয়া ঠিক না এভাবেই হারিকেন নিভে গিয়েছে,কাল সকালে আবার তোমরা বেড়াতে যাবা চলো ঘুমাই পরি রুমে যেয়ে। তারপর কালাম কাকা বলে তোরা যা শুয়ে পর আমি আসছি।
ঘরে যাওয়ার পর সিয়াম আমাকে বলে তোর এই কাকার সাথে থাকলেই আমার শরীরে কেমন যেনো কাটা কাটা দিয়ে উঠে।
আমি বলি ঘুমিয়ে পর সকালে আবার যাবো সবাই মিলে,দূর আছে জায়গাটা। যদিও আমি রাতে খুবই খারাপ একটা স্বপ্ন দেখি।
সকাল হয়ে যায়। তারপর আমরা সবাই রওনা দেই সকালের নাস্তা করে। অনেকজন মিলেই একসাথে রওনা দেই।গাড়ী দিয়ে প্রথমে যাওয়ার পর আবার ছোট স্টিমার এর মত আছে সেটাতে উঠতে হবে সেই স্টিমার শুধু একবারই যায় সেখানে দুপুর ১২টায় ছাড়ে।
(আমরা যেদিকে যাবো সেই জায়গার নাম চড় কুকড়ি মুকড়ি।)
চড় কুকড়ি মুকড়ি খুবই সুন্দর জায়গা।আমরা যখন স্টিমার দিয়ে যাচ্ছিলাম খুবই উপভোগ করেছিলাম প্রকৃতি তে ভরা,অনেকটাই সুন্দরবন এর মতো।
তারপর পৌছানোর পরে আমরা হাটতে থাকি এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়ি অনেক দূরে। এর মধ্যে বাবা তখন বলে উঠে এদিকে যদি আমাদের কে কেউ মেরেও রেখে দেয় কখনো খোঁজ পাওয়া যাবে না কিছুই নেই।কোনো দোকানপাট দেখছিলাম না। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় এক লোকের সাথে কথা হয় উনি বললো এই জায়গায় শুধু ডাকাত রা থাকতো এখনো তারাই আছে কিন্তু সময়ের সাথে সাথে নিজেদেরকে বদলে নিয়েছে। আমি এক অন্যরকম মনে মনে ভয় পেয়ে যাই।
বাবা বলে কালাম তুই আর বিয়ে করার জায়গা পাইলি না এদিকেই এসে করতে হলো। তখন সিয়াম বলে ভালো জায়গায় বিয়ে করেছে নাহলে আমরা এই সুন্দর জায়গা কীভাবে দেখতে পেতাম।
আমরা কালাম কাকার শ্বশুর বাড়ি পৌছে গেলাম।তারপর আমাদের সবাইকে পানি ও পিঠা দেওয়া হলো। পানি খুবই লবণাক্ত। আমার আম্মু হঠাৎ সিয়াম ও আমাকে বললো কালামের দাদী শ্বাশুড়ি কিন্তু তেমন ভালো না কালোজাদু এসব করে তোরা দুইজন দূরে থাকিস উনার থেকে। আম্মু আরো বলে চেহারা দেখোস না কেমন লাগে এসব করতে করতে চেহারা নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
আমি ও সিয়াম তেমন কিছু বল্লাম না তারপর দুই বন্ধু একসাথে ঘুরতে বের হলাম এভাবেই একটু গ্রাম ঘুরে দেখার জন্য। সিয়াম বলে চল বাড়ির পিছের দিকটা যাই। আন্টি যেহেতু বলেছে আমাদের এই কথা দেখি কোথাও কিছু পাই কীনা প্রমাণ কালো জাদু এসবের।
দুই বন্ধু একসাথে ঘুরতে থাকি খুবই ভালো লাগছিলো তার কারণ খুবই সুন্দর একটা জায়গা তারপর হাটতে হাটতে একটু জংগলের মতো সেদিক যাই।
তারপর খুবই অবাক হয়েছিলাম দুইজন,একটা চক্রের মতো দাগ দেওয়া আর সেটার উপর একটা কাপড়ের মত পুতুল বানিয়ে রাখা এবং একটা কবুতর মরা কিন্তু মাথা নেই আর একটা মাথার খুলি।
পিছনে ফিরতেই আবারো দেখি কালাম কাকা.
Comments