top of page

বাংলার দর্শনকে যারা ভুলিয়ে দিতে চায়, তারা তো বাংলা বা বাঙালির বন্ধু নয়

পহেলা বৈশাখ পহেলা জানুয়ারির মতো বাঙালি নাগরিক মধ্যবিত্তের কিছুদিন আগের তৈরি উৎসব। বাঙালি মধ্যবিত্ত কলোনি মাষ্টারের মতো হ্যাপি নিউ ইয়ার বলার মতো একটা উপলক্ষ চায়; যেখানে সে শুভ নববর্ষ বলতে পারে।

আবহমান বাঙালির উৎসব ছিল চৈত্র সংক্রান্তি। বছরের শেষ দিন উৎসব? কেন বছরের শেষ দিনে? এখানেই আসছে বাঙলার দর্শন। বাঙলার “সময়” সংক্রান্ত ধারণা।


ইউরোপ মনে করে সময় ক্রমিক সরলরেখায় অতিক্রম করে। যা একবার যায় তা আর ফিরে আসেনা। সেটা একটা ব্যক্তিতান্ত্রিক সমাজে ভাবাই স্বাভাবিক। কারণ ব্যক্তির জীবন তো ক্রমিক সরলরেখায় অতিক্রম করে। প্রতিদিন সে পুরোনো হয়। তাঁর বয়স বাড়ে, সে জীর্ণ হতে হতে এক সময় ঝরে পরে। তাই পশ্চিমে ব্যক্তির ধারণার সাথে সময়ের ধারণা একাকার।

বাঙলায় “সময়” কিন্তু ব্যক্তির সময় নয়। “সময়” এখানে “প্রকৃতির সময়”। এই সময় আবর্তিত হয় চক্রের মতো। ঋতুর মতো একই জিনিস সময় হয়ে বারে বারে ফিরে ফিরে আসে। ব্যক্তির সাথে সময়ের ছেদ হয়ে প্রকৃতির সাথে সময়ের সম্পর্ক স্থাপিত হয়, ব্যক্তির নিরিখে বাংলায় সময়কে বিচার করা হয়না। তাই বাঙলার সময় নতুন বা পুরাতনের বিষয় নয়।

আমরা পহেলা বৈশাখে গান গাই “জীর্ন পুরাতন যাক ভেসে যাক”। বাঙলার সময় প্রকৃতির সময় যা কখনোই জীর্ন হয়না। তাই শেষ দিনই তো হবে উৎসব। যার পরে শুরু হবে আরেক আবর্তন। সেই আবর্তন নতুন নয়, ফিরে আসা পুরোনো সময়ই। তাই বছরের উদযাপন সবসময় হতো চৈত্র সংক্রান্তির দিনে।

জীর্ন পুরাতন ভাসিয়ে দেয়ার আকাঙ্ক্ষা ইউরোপের ব্যক্তিতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষা, যেখানে প্রকৃতি নয় ব্যক্তি মানুষ শেষ কথা।

পহেলা বৈশাখ চাপিয়ে বাঙালির উপরে চাপিয়ে দেয়া উৎসব, বাঙালির আবহমান ঐতিহ্যের উৎসব নয় কোন মতেই। চাপিয়ে দিতে চাইলে তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিরোধই তো আসবে।

নিজের ঐতিহ্য চৈত্র সংক্রান্তি ভুলে চাপিয়ে দেয়া পহেলা বৈশাখের উদযাপন তাই আমার ইতিহাস নয়, আমার ঐতিহ্য নয়। আমি এই চাপিয়ে দেয়া ঐতিহ্যকে প্রত্যাখ্যান করি। বাংলার চিন্তা, বাংলার দর্শনকে যারা ভুলিয়ে দিতে চায়, তারা তো বাংলা বা বাঙালির বন্ধু নয়।

6 comments
Enjoy
Free
E-Books
on
Just Another Bangladeshi
By
Famous Writers, Scientists, and Philosophers 
click here.gif
click here.gif

Click Here to Get  E-Books

lgbt-bangladesh.png
bottom of page