বামপন্থীদের অভিযোগ এবং আমার কথা
বামপন্থীদের আমার বিরুদ্ধে দুইটা মোটা দাগের অভিযোগ। একটা আমি তাগো বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়াইতেছি আর দুই নম্বর আমি সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিতেছি।
বামপন্থীদের বিরুদ্ধে আমিই প্রথম আমার বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর অভিযোগ আনছি। আমার বিরুদ্ধে দল বাইন্ধ্যা যা খুশী তাই কইয়া আমার বিরুদ্ধে কুৎসা রটাইছে। আমার ব্যক্তিজীবন আমার পেশাজীবন আমার পরিবার কিছুই বাদ দেয় নাই। আমি যা লিখি নাই, আমি যা কই নাই তাই আমার লেখা আমার কওয়া বইলা প্রচার চালাইছে। আমি তাগো ম্যালাবার কইছি, ভাইডি আমার আইডিয়ারে ফাইট করেন, আমারে ধরেন কেন? তারা শোনে নাই। এখন যখন আমার পালটা বাম্বু খাইতেছে তখন আমার বক্তৃতা আমারেই শোনাইতেছে। আমি নাকি ঘৃণা ছড়াই। সিপিবির মনি সিংহ পল্টনের ময়দানে ভাসানীর চামড়া তুলে নেয়ার হুমকি দিছিলো। এরা তো তারই উত্তরাধিকার, এরা ঘৃণা ছড়ানোর অভিযোগ করে আমার বিরুদ্ধে।
আমি কাউরেই আগ বাড়াইয়া আঘাত করি নাই। কেউ প্রমাণ দেখাইতে পারবে না। আমার বিরুদ্ধে ঘৃণা চর্চাকারীদের মধ্যে যারা বাম দল করতো তাগো লেখা আমি সেই দলের নেতারে দেখাইছি অনেকবার। কেউ কোন ব্যবস্থা নেয় নাই। আর নানা আড্ডায় কে আমার বিরুদ্ধে কী বলে তার কিছু কিছু তো কানে আসেই। আমি সেইগুলারে পাত্তা দেইনা। কিন্তু সব লেখারে তো পাত্তা না দিয়া পারিনা। আমারে তো তাগো উদ্দেশ্যটা ফাস কইরা দিতেই হয়।
আমি যখন সিপিবিতে ছিলাম তখন আমারে কওয়া হইছে আপনি দল থিকা বাইরে যাইয়া বামপন্থীগো সমালোচনা করেন, আর এখন দল ছাইড়্যা বাইরে আইলে কওয়া হইতেছে বামগো বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়াইতেছি।
উনারা আসলে চ্যালেঞ্জড হইতে ভয় পান। উনারা চান, নিজেরা যা খুশী তাই করবেন, যা খুশী তাই লিখবেন, যার বিরুদ্ধে যা খুশী তাই বলার অধিকার একচেটিয়াভাবে তাদের। এইডারে কেউ চ্যালেনজ করলে তাগো মাথা নষ্ট হইয়া যায়।
আমি আবারো কই, ঘৃণাচর্চা বন্ধ করেন। ব্যক্তিগত কুৎসা ছড়ানো বন্ধ করেন। আপনারা যে ভিন্নমতরে কোন স্পেইসই দিতে চান না সেই প্রমাণ রাইখ্যা আর নিজেগো ছোট কইরেন না।
আমার বিরুদ্ধে বামপন্থীগো দ্বিতীয় অভিযোগ আমি সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিতেছি। আমি উদাহরণ চাইলাম, উত্তর পাইলাম আমি নাকি শ্যামল কান্তি ভক্তরে ধর্ম অবমাননার দোষ দিছি, আমি কইলাম দেখান তো কোথায় দিছি, দেখাইতে পারলোনা।
আমি তাগো প্রব্লেমটা বুঝি। বাংলাদেশের হিন্দুদের যে একটা বিশেষ মাইণ্ডসেট আছে যা নিয়া তেমন কাজ হয়নাই, সেইটা আমি প্রথম গুছায়ে লিখছি। আহমেদ ছফা যেমনভাবে মুসলমান মন লিখছেন আমি অতো বিশাল ভাবে লিখি নাই তাও ছোট আকারে প্রথম এই নিয়া লিখছি “বাংলাদেশের হিন্দু মানস ও বিবর্তন “। সেইখানে দেখাইছি সিপিবি আসলে হিন্দু স্বার্থের রাজনীতি করছে এতোদিন। হিন্দু স্বার্থের পক্ষে থাকাটা অন্যায় নয়, কিন্তু তারা যেই পথে সমাধান চায় সেইটা হইয়া ওঠে ইসলাম বিদ্বেষ। এমন কোন হিন্দু স্বার্থ বলে কিছু হতে পারে না যেটা গণ স্বার্থের বিরুদ্ধে। এইটা বিপ্লবী রাজনীতির বদলে সেক্টেরিয়ান রাজনীতি হইয়া যায়। আমার আপত্তির জায়গাটা এটাই। এরাই সাম্প্রদায়িক শব্দটা আবিস্কার করছে মুসলমানদের গাইলানোর লাইগ্যা। এমনকি জমিদারি উচ্ছেদের আইন পাশ করাও এদের কাছে সাম্প্রদায়িক আচরণ। হাইসেন না আমার কাছে দলিল আছে।
বাংলাদেশে এই সংকীর্ণ হিন্দু স্বার্থের রাজনীতির বিষয়ে আপনি আনকৃটিক্যাল থাকলে আপনি হইবেন অসাম্প্রদায়িক। আর সংকীর্ণ হিন্দু স্বার্থের বিরুদ্ধে কিছু বললেই সেইটা সাম্প্রদায়িক উস্কানি। এই প্রসংগে পি এমের সাম্প্রতিক ভারত সফর নিয়া সিপিবির বিবৃতিটা পইড়্যা দেখতে পারেন। সেইখানে তারা বলতেছে,
“দু দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এরূপ অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সাম্প্রদায়িক প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি তাদের ষড়যন্ত্র জোরদার করার জন্য, এবং বুর্জোয়া দলগুলো তাদের গদি দখলের খেলায় ‘ভারত কার্ড’কে ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে তৎপর হচ্ছে। এই বিপদ সম্পর্কে হুঁশিয়ার থেকেই দু দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব সুদৃঢ় করার জন্য, সে কর্তব্য পালনের জন্য উপযুক্ত প্রকৃত বন্ধুত্বের শক্তি, তথা দু দেশের মেহনতি মানুষসহ জনগণ এবং গণতান্ত্রিক-অসাম্প্রদায়িক-প্রগতিবাদী শক্তিকে সোচ্চার হতে হবে।”
দেখেন সাম্প্রদায়িক শব্দটার ব্যবহার। আর সিপিবি চায় কী? শুধু সংকীর্ণ হিন্দু স্বার্থের বিরোধিতা নয়, ভারত সম্পর্কেও কিছু কইলে সমঝে কইতে হইবো, সমঝে না কইলে কিন্তু আপনি সাম্প্রদায়িক।
তারা যেহেতু কইতে পারেনা, আপনি ইণ্ডিয়ারে যা বাম্বু দেন সেইটা আমাগো নাপছন্দ, তাই আপনি হইতেছেন সাম্প্রদায়িক উস্কানিদাতা।
আমরা বুঝি সব। আমরা বেকুব না।
Comments