বড় সর্দার বাড়ি ২য় পর্ব
সেদিন একটা ঘটনর বলেছিলাম বড় সর্দার বাড়ি নিয়ে । আজ সেই বাড়ি নিয়েই আরো দুইটা ঘটনা শেয়ার করতেছি। আর ঘটনা দুটো ঘটা আমার চাচীমার ছোট চাচী র সাথে। এটা মেবি ১৯৮৫/৮৬ সালের দিকের ঘটনা।
ঘটনার শুরুতেই বলে নেই উনি আমার চাচীর ছোট চাচার বউ। সেদিন চাচীদের বাড়ির একটা বর্ননা দিয়েছিলাম। চাচীদের বাড়িতে মুলত ৫ টা ঘর। মোটামুটি বাড়ির চার পাশেই বাগান। বাড়ির উত্তর পাশে বড় বাগান। আর পশ্চিম দিকেও বড় বাগান। সুপারি, আম, জাম, কাঠাল, নারকেল গাছ আবার বড় বড় বড় বাশঁ ঝাড়। বাড়ির পুর্ব দিকে হলো তাদের পুকুর। পুকুরের ঐ পাড়ে রাস্তা যেটা দিয়ে বাজারে যেতে হয়। ঐ রাস্তার পাশের কবর স্থান। চাচীদের পুকুরের পাড়ে একটা বড় আম গাছ। চাচার ছোট চাচীর বিয়ের কয়েক দিন পর উনি ওই পুকুরে গেলেন অজু করতে।তখন সন্ধ্যা। মাগরিবের আজান দিছে কিছুক্ষন আগে। চারদিকে অন্ধকার নামতেছে আস্তে আস্তে।এই সময় টা আসলেও আমার কাছে খুব ভুতুরে টাইম মনে হয় বিশেষ করে যেসব বাড়ি গুলো একলা বাড়ি। কেউ নাই পুকুর ঘাটে। চাচীমার ছোট চাচী অজু করে ঘাট থেকে মাত্র উঠলেন। উঠেই উনি আম গাছের দিকে তাকালেন। হঠাত তার চোখ যায় আম গাছের এক ডালে। দেখেন আম গাছের এক ডালে একটা বাচ্চা পা ঝুলিয়ে বসে আছে। উচ্চতা বেশি হলে ৩ ফুট হবে। সারা গায়ে লোম ভরা। খালি গা। পা দুটা ঝুলানো।কিন্তু মাথা টা দেহের তুলনায় অনেক বড়। দেহের আকৃতি দেখলে মনে হবে ছোট বাচ্চা কিন্তু চেহারা টা খুব ই অদ্ভুত আর কুৎসিত। মুখের ভিতর একটাও দাঁত নাই। চাচীমার চাচীকে দেখে হাসতেছিলো। এইটা দেখে উনি আল্লাহ গো বলে ওই খানেই সেন্সলেস হয়ে পড়ে যায়। পড়ে চাচীমার মা তার গলার স্বর শুনে এসে দেখে উনি সেন্সলেস হয়ে পড়ে আছে। ধরাধরি করে বাসায় নিয়ে যায়। রাত ৯ টার দিকে সেন্স আসলে উনি পাগলামি শুরু করে। সবাই শক্তি দিয়েও উনাকে ধরে রাখতে পারতেছিলোনা। উনি বার বার দরজা খুলে বাইরে চলে যাচ্ছিলো। বলে কে যেন, আমাকে ডাকে, ছাড় আমাকে। কেউ উনার শক্তির সাথে পেরে উঠতেছিলোনা। পরে রাত টা যাওয়ার পর এক হুজুর দেখায়। উনি দেখে বলে উনাকে একটা জ্বীন খারাপ ভাবে পসেস করতে চাচ্ছে। কাল সন্ধ্যায় ভয় দেখাইছে। এখন উনাকে কারো বেশ ধরে পসেস করার জন্য ডাকে। খুব সাবধানে রাখবেন উনাকে। পরে একটা তাবীজ দেয়। আর এই তাবীজ টা সব সময় পড়তে বলে। প্রায় ৪/৫ বছর যায়। কোনো সমস্যা হয়না। সমস্যা শুরু হয় তখন যখন উনার ফার্স্ট বেবি হয়। বেবি হওয়ার সময় উনার হাতের তাবীজ টা খুলে ফেলে একদিন। রাতের বেলা ১০ টার মতো বাজে। উনাদের বাথরুম তাদের বাসার পিছনে যে বাগান সেই বাগানের কাছে।ঐ বাথরুমের পাশেই একটি ডোবা। সেদিন বলছিলাম এই ডোবা নিয়ে একটা কাহিনি আছে৷ এই ডোবা কেউ ইউজ করেনা। কাঠ ভিজিয়ে রাখে বাড়ির মানুষ। সেদিন রাতের বেলা ১০ টার মতো বাজে। বাচ্চা হইছে কয় দিন আগে। উনার প্রাকৃতির ডাকে সারা দিতে হবে। উনার হাজব্যান্ড বলে তুমি একা যাইবা? আমিও যাই সাথে। চাচীমার চাচী বললো, বাচ্চা ছোট মাত্র কয়দিন আগে হইছে ও একা থাকবে? তুমি থাকো আমি পারবো। এই বলে উনি গেলো। চাচীমার চাচা ঘরে বাচ্চার কাছে। উনি ভাবতেছে এত সময় লাগে আসেনা কেন? পরে উনি লাইট নিয়ে বের হইছে বাচ্চাটাকে বাসায় একা রেখেই। গিয়ে দেখে বাথরুমের দরজা খোলা। উনি ভাবে গেলো কই ও? একটু সামনে আগাইছে। ভালো করে কান পেতে দেখে ডোবার ভিতর ঝপাৎ ঝপাৎ করে শব্দ আসতেছে। ভিতরে লাইট মেরে দেখে তার বউকে পানিতে কে জানো চুবাচ্ছে। উনি তারাতারি তাকে উঠালো। চিল্লাচিল্লি করে সবাইকে ডাকলো। সারারাত উনার সেন্স আসেনি। সকাল বেলা সেন্স আসছে।উনি সকালে সেন্স ফিরে পেয়ে তার হাজব্যান্ডকে প্রশ্ন করে এই তুমি রাতের বেলা বাগানের ভিতর ঢুকছিলা কী করতে? উনার হাজব্যান্ড শুনেতো অবাক। আসল কাহিনি হচ্ছে, চাচিমার চাচি যখন ওয়াশরুম থেকে বের হয়। বের হয়ে দেখে তার হাজব্যান্ড দাড়িয়ে আছে।চাচীমার চাচি বলে, তুমি আসলা কেন? বাবু একা না বাসায়! তার হাজব্যান্ড কোনো রেসপন্স করছিলোনা। এরপর চাচিমার চাচা সোজা বাগানের দিকে হাটাঁ শুরু করছিলো। এটা দেখে চাচীমার চাচীও তার স্বামীর পিছন দিকে হাটাঁ শুরু করছে। হঠাত যেই ডোবার কাছে আসছে।দেখে তার স্বামী নাই। এমন সময় কী একটা অদৃশ্য শক্তি চাচীমার চাচীকে ধাক্কা দিয়ে ডোবায় ফেলে দেয়। এরপর উনি অনেক সর্বাত্মক চেষ্টা করছিলো ডোবা থেকে উপরে ওঠার। কিন্তু তিনি ঐ শক্তির সাথে পারছিলোনা। এরপর আর তার কিছু মনে নাই।।।।
ঐ ঠিক সময়ে যদি তার হাজব্যান্ড তাকে খুজতে বাইরে না যেত হয়তো সেই রাতেই উনাকে মেরে ফেলতো।
Commentaires