ঢাবি ছাত্রীর ইনহেলার

ধর্ষিতা ঢাবি ছাত্রীর যে সমস্ত জিনিসপত্র ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তার মধ্যে বইপুস্তকের সাথে একটি 'ইনহেলারও' ছিল! মানে পরিষ্কার যে, আমাদের ছোট বোনটির শ্বাসকষ্ট আছে। শ্বাসকষ্ট কি জিনিস তা অবশ্য যার আছে সে ছাড়া আর কেউ বুঝবে না। তবে আরো কিছু মানুষ বুঝবে যাদের নিজের সন্তানের এই সমস্যা আছে। আমার মেয়ের হৃদযন্ত্রের সমস্যার কারণে তীব্র শ্বাসকষ্ট হতো যা তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ছিল। তার প্রতিটি নিঃশ্বাসের সাথে মনে হতো বুঝি আমার বুকটাই ছিঁড়ে যাচ্ছে।
যাইহোক, নিজের শোকগাঁথা নয় বরং ভিন্ন একটি বিষয়ে কথা বলতে এসেছি। আমাদের সমস্ত প্রচারযন্ত্রে প্রচারিত বিজ্ঞাপন, সিনেমা/ নাটক, গল্প/ উপন্যাসের নারী চরিত্রগুলোর বর্ণনা দেখুন। মনে হবে নারী (বিশেষ করে কম বয়সী নারী) হলো এমন একটি অবজেক্ট যা কেবল যৌন আবেদন তৈরীর জন্য সৃষ্ট। যার একমাত্র কাজ হলো চোখ, নাক, মুখ, ঠোঁটসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ব্যবহার করে বিপরিত লিঙ্গকে সিডিউস করা। যাদের প্রধানতম সমস্যাগুলো হলো মুখের ব্রণ, ত্বকের মেলানিন, তলপেটের চর্বি। কিন্তু এই মেয়ের কাছে ইনহেলার দেখে আচমকা মনে পড়ে গেল, আরে এরাও তো মানুষ দেখি!!! এদের তো সর্দিজ্বরও হয়!!! হাঁপানিও হয়!!!!
যৌনতা স্বাভাবিক খাদ্যের চাহিদার মতোই একটি বিষয়। পশুর মতো অন্যের খাবার কেড়ে না খেয়ে নিজে উপার্জন করে খাওয়ার যে বৈধ সিস্টেম তা কেবল মানুষদের জন্য। তেমনি বৈধ উপায়ে যত দ্রুত সম্ভব যৌনতার সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য বিবাহ নামক যে কালচার তা একটি সুশৃঙ্খল মানব সমাজের চিহ্ন বহন করে। আর মানুষের সমস্ত চাহিদাই এমন যে, এটাকে একটি সীমার ভিতর না রাখলে তা তাকে পশুতে পরিণত করে। সম্পদের প্রতিযোগীতা যেমন যুদ্ধবিগ্রহের সৃষ্টি করে তেমনি এই অশ্লীলতার অবধারিত পরিণতি হলো সেক্সুয়াল অফেন্সগুলো। এর শিকার হচ্ছে নারী এবং শিশু।
ধর্ষকামী মানসিকতা কিন্তু স্বাভাবিক না। ধর্ষকদের অনেকেই আছে যারা মূলত স্বাভাবিক যৌনতায় অক্ষম। যে কোন কারণে তাদের মস্তিষ্ক স্বাভাবিক যৌনতায় সাড়া দেয় না। দরকার হলো এক্সট্রিম কোন কিছুর। যাকে আমরা সেক্সুয়াল স্যাডিজম বলতে পারি। আর আমাদের সমস্ত কালচার এইরকম স্যাডিস্ট, ম্যানিয়াক তৈরী করার ইন্ধন দিয়ে যাচ্ছে। ফলে কোন মেয়ের শ্বাসকষ্টে বুক উঠানামা করাটাকেও শুয়োরের জাতগুলো রসালো বর্ণনার আওতায় নিয়ে আসবে। আর এটা দেখে কোন এক পারভার্টের ধর্ষণের ইচ্ছা জাগবে। অথচ স্বাভাবিক আচরণ হওয়ার কথা ছিল, ঐ মেয়েটার কোন শারীরিক সমস্যা হচ্ছে কিনা জিজ্ঞাসা করা, তাকে যথাসম্ভব সাহায্য করা যাতে এই ঠান্ডায় সে ঠিকমতো গন্তব্যে পৌছাতে পারে। কিন্তু আমরা সবাই মিলে যে জঙ্গল সৃষ্টি করেছি এখানে এসব মানবিক গুণাবলীর কোন জায়গা নেই। এখানে কেবল মাংস খাওয়ার প্রতিযোগীতা চলে। এভাবেই চলবে যতদিন আমরা এই সিস্টেম, এই কালচারকে লালন করব।
- Ralph Rover
অসাধারণ লিখেছেন দাদা
প্রত্যেক মানুষকে সমান মর্যাদা দেওয়ার জন্য ধর্ষক মুক্ত পৃথিবী করা প্রয়োজন
জি ভাই ঠিকই বলেছেন আমাদের প্রত্যেকেরই এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া উচিত
দর্শকদের জন্য উচিত শাস্তি ব্যবস্থা করা উচিত
আমি চাই প্রত্যেকটা ধর্ষককে এমন শাস্তি দেওয়া হোক যেন বাকিরা এ ঘৃণিত কাজ করার সাহস না পায়