top of page
Writer's pictureJust Another Bangladeshi

জ্বিন জাতির ইতিহাস ১ম পর্ব

মানুষের সবসময়ই অদেখা ও অজানাকে জানার একটি অদম্য কৌতুহল থাকে। জ্বিনদের সম্পর্কে জানাও তেমনি একটি বিষয়। আমরা সকলেই জ্বিন সম্পর্কে কম-বেশি জানি, কিন্তু তাদের সৃষ্টি ও ইতিহাস সম্পর্কে কতটুকুই বা জানি। তাই আজ ইচ্ছে হল আপনাদের সামনে জ্বিন জাতির ইতিহাস তুলে ধরা। আর স্বভাবতই এই ব্যাপারে আলাপ করতে গেলে ইবলিস শয়তান ও হযরত আদম (আ) এর ঘটনাও এসে পরে। আমি ঘটনাগুলা "কাসাসুল আম্বিয়া" নামক বই থেকে সংগ্রহ করেছি। বইটির মূল লেখক "মাওলানা তাহের সুরাটী (ভারত)" যেটা উর্দ্দু ভাষায় প্রকাশিত। এর অনুবাদক "আলহাজ্ব মাওলানা মোঃ সামসুল হক (মুমতাজুল মোহাদ্দেছীন)"। মূল লেখক সকল তথ্য কোরআন, হাদিস সহ অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ ও পুরনো পুথি বই থেকে সংগ্রহ করেছেন। আশা করি এর থেকে অনেক কিছু আপনারা জানতে পারবেন। আপনারা ইচ্ছে করলে মূল বইটিও পড়তে পারেন।


বিশেষ দৃষ্টব্যঃ এখানে সব ঘটনাই যে ১০০% সত্যি সেটা বলা হয়নি।


জ্বিন জাতির সৃষ্টি ও ধ্বংসের কাহিনীঃ মানুষ সৃষ্টি করার বহুযুগ পূর্বে আল্লাহ পাক পৃথিবীর বুকে জ্বিন জাতিকে সৃষ্টি করে প্রেরণ করেছিলেন। এটা কোন অলীক বা মনগড়া কাহিনী নয়। বরং আল্লাহ পাক নিজেই পাক কালামে বহুবার জ্বিন জাতির কথা উল্লেখ করেছেন। আর মানব জাতিকে যে উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করা হয়েছে ঠিক সেই উদ্দেশ্যেই তিনি জ্বিন জাতিকেও সৃষ্টি করেছেন। যেমন আল্লাহ পাক নিজেই বলেছেন, “ওয়ামা খালাকতুল জিন্না ওয়াল ইনসা ইল্লা লি ই'য়াবুদূন।” অর্থাৎ আমি জ্বিন ও মানুষকে শুধুমাত্র আমারই ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি।

এছাড়াও পাক কালামের জ্বিনদের বিষয়ে আলোচনার উদ্দেশ্যে সূরা জ্বিন নামে একটি সূরাও অবতীর্ণ হয়েছে। জ্বিন এবং মানুষের মধ্যে কতকগুলো বিষয়ে সাদৃশ্য বিদ্যমান তেমনি আবার বৈসাদৃশ্যও পরিলক্ষিত। যেমন, মানুষের প্রতি আল্লাহ পাকের ইবাদাত-বন্দেগি করার হুকুম রয়েছে, জ্বিনদের প্রতিও এই নির্দেশ বিদ্যমান রয়েছে। মানুষের মধ্যে কিছু সংখ্যক যেমন আল্লাহ পাকের নির্দেশ পুরোপুরি পালন করে, আবার কিছু সংখ্যক বিরোধিতা করে। জ্বিনদের মধ্যেও এই ক্ষেত্রে অনুরূপ অবস্থা। মানুষের পাপ-পুণ্যের হিসেব পরকালে হবে, বিচার হবে, বিচারের পরে ফলাফল হিসেবে কেহ জান্নাত কেহবা জাহান্নাম প্রাপ্ত হবে। জ্বিনদেরও অনুরূপ হবে। মানুষের মধ্যে যেমন নারী পুরুষ আছে, বিয়ে-শাদি, সন্তান উৎপাদন এবং জন্ম-মৃত্যুর প্রথা বিদ্যমান, একইভাবে জ্বিনদের মধ্যেও রয়েছে। মানুষের যেমন পানাহার, আরাম-আয়েশ, তন্দ্রা-নিদ্রার প্রয়োজন রয়েছে তেমনি এগুলো জ্বিনদেরও রয়েছে। মানুষের মধ্যে যেমন রিপুর প্রভাব এবং তার ফলে তারা সৎ-অসৎ হয়, জ্বিনদেরও ঠিক একই অবস্থা।

পক্ষান্তরে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর মধ্যে মানুষ এবং জ্বিনদের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য বিদ্যমান। মানুষ সশরীরে দৃশ্যমান জীব, কিন্তু জ্বিন অশরীরী অদৃশ্যমান জীব। মানুষের অবস্থান, চলা-ফেরা, কথা-বার্তা, কাজ-কর্ম ইত্যাদি সবকিছু জ্বিনেরা দেখতে পায়। অথচ এসবের কিছুই মানুষ দেখতে পায় না। মানুষেরা সাধারণত স্বীয় আকৃতি বদল করে অন্যরূপ ধারণ করতে পারে না। কিন্তু জ্বিনেরা ইচ্ছে করলে এক মাত্র মহানবী (সা) এর সুরত ব্যাতীত সাধারণ মানুষ কিংবা যে কোন পশু-পাখির রূপ ধারণ করতে পারে। সাধারণ অবস্থায় জ্বিনেরা মানুষের নানাবিধ উপকার করতে পারে, আবার ক্ষতিও করতে পারে। কিন্তু মানুষের তেমনি কিছু করার সুযোগ ও সামর্থ্য নেই।

কতগুলো দিক হতে ফেরেশতাদের সাথেও জ্বিনদের সাদৃশ্য পরিলক্ষিত। যেমন, ফেরেশতাদের ন্যায় জ্বিনেরাও অূদৃশ্যমান-অশরীরি ও দ্রুত গতিশীল জীব আবার ফেরেশতাদের সঙ্গে বৈসাদৃশ্যও রয়েছে। যেমন ফেরেশতাগণ নূরের (আলোর) তৈরি, কিন্তু জ্বিনেরা আগুনের তৈরি। ফেরেশতাদের মধ্যে নারী পুরুষ নেই, কিন্তু জ্বিনেদের মধ্যে নারী পুরুষ আছে। ফেরেশতাদের আহার-বিহার, আরাম-নিদ্রা নেই, কিন্তু জ্বিনদের এগুলো আছে। ফেরেশতাদের সকলেই মহান প্রভুর নির্দেশ পালনে রত, ইবাদতই তাদের কাজ, কেহই এর বিরোধিতা করে না। কিন্তু জ্বিনেদের মধ্যে কিছু সংখ্যক আল্লাহ পাকের বাধ্যগত আবার কিছু সংখ্যক অবাধ্যগত। রোজ কিয়ামতে ফেরেশতাদের কোন প্রকার হিসাব-নিকাশ হবে না, বিচারও হবে না। পক্ষান্তরে জ্বিনদের জন্য এগুলো নির্ধারিত রয়েছে। ফেরেশতাদের পানাহার ও নিদ্রার প্রয়োজন নেই। রোগ-ব্যাধি-মৃত্যু তাদেরকে স্পর্শ করে না। তাদের মৃত্যু হবে কেবল সেই দিন, যেদিন ইস্রাফিল (আ) সিঙ্গায় ফুঁক দিবেন। ফেরেশতারা পিতার ঔরষে মায়ের গর্ভে জন্মগ্রহণ করে না। পক্ষান্তরে জ্বিনদের রোগ-ব্যাধি, জরা-মৃত্যু রয়েছে এবং মানুষের ন্যায় তারাও পানাহার করে, তন্দ্রা ও নিদ্রভিভূত হয়ে। পিতার ঔরষে মায়ের গর্ভে জন্মগ্রহণ করে। তাছাড়া মানুষের ন্যায় জ্বিনেরাও কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ, মাৎসর্য তথা ষড় রিপুর অধীন।

চলবে.


তথ্য সুত্রঃ

মূল গ্রন্থঃ "কাসাসুল আম্বিয়া (উর্দ্দু)" মূল লেখকঃ "মাওলানা তাহের সুরাটি (ভারত)" অনুবাদকঃ "আলহাজ্ব মাওলানা মোঃ সামসুল হক (মুমতাজুল মোহাদ্দছীন)"

0 comments

Comments


Enjoy
Free
E-Books
on
Just Another Bangladeshi
By
Famous Writers, Scientists, and Philosophers 
click here.gif
click here.gif

Click Here to Get  E-Books

lgbt-bangladesh.png
bottom of page