কালো জাদু ফার্জিয়ার গল্প ৬ষ্ঠ পর্ব
ধীরে সন্তর্পণে কুঠির ভেতরে ঢুকে পড়লো তারিফ।কিন্তু না কাউকেই তো দেখতে পাচ্ছে না ভেতরে।আর এখানে কোনো লোক থাকে বলে মনে হয় না।লোকেশনটা তো এই জায়গাটার আশেপাশেই দেখিয়েছে তবে.....?
তারিফের মাথায় কিছুই ঢুকছে না এই মূহুর্তে।তবে কি কিছু একটা ভূল করে ফেলেছে সে।নাহ এই জায়গাটা থেকে বরং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রেরোনো যাক।আরো ভালো সিওর হবার জন্য তারিফ আশেপাশের লোকেশনগুলো খুঁজে দেখতে লাগলো।হঠাৎ একটা লোক পেছন থেকে তাকে কিছু একটা বলে ওঠে।
-আপনি কী কাউকে খুঁজছেন বাবু?
-না.....মানে হ্যা কাউকে খুজছিলাম।
-আরে এতো আমতা আমতা কেন করছেন।
-আপনি আমায় একটা প্রশ্নের উত্তর দিন তো।আপনি তো অনেকক্ষন ধরে জায়গাটার আশেপাশেই ছিলেন।তাই না...
-হ্যা বাবু।আমার বাসা এখানেই।
-একটা ভদ্রমহিলাকে কী এখান থেকে যেতে দেখেছেন?
লোকটা তারিফের কথা শুনে হাসতে থাকে।
-কী আজব,এখানে হাসার মত কী বল্লাম আমি?
-আরে বাবু।কত লোক এখানে আসে যায়।আপনি কার কথা বলছেন আমি কিভাবে বুঝবো।
-হ্যাঁ তাও তো ঠিক।
-তবে আমি একটা মেয়েলোককে এখান থেকে যেতে দেখেছি।প্রায় আধ ঘন্টা আগে।আর হ্যাঁ, উনি বোরখা পরা ছিলেন।
-হোয়াট।তার মানে মেয়েলোকটা নিশ্চই ফার্জিয়া।তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে হবে এখন।আর ভাবলে চলবে না।সামনের দিকে পা বাড়াতেই চমকে ওঠে তারিফ।
-আরে আপনি আমার হাতটা কেন ধরেছেন?
-আরে বাবু,এতো রাতে আর কোথায় যাচ্ছেন।আমার সাথে বাসায় চলুন না।
-না ভাই।আমি ঠিক চলে যেতে পারবো।আর আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
-আরে চলুন না।বাসায় কেউ নেই।বুঝতেই তো পারছেন।
লোকটা তারিফকে আপাদমস্তক দেখতে থাকে।
-বাহ।বড্ড সুপুরুষ তো দেখছি আপনি।চলুন না, হয়ে যাক একটু...
তারিফ বুঝতে পারলো লোকটা সুবিধার না একদম।
-আরে মাথা খারাপ হয়ে গেছে আপনার।ছাড়ুন বলছি.
-আমার মাথাটা সত্যিই খারাপ হয়ে গেছে আপনাকে দেখে বাবু।চলুন না আমার বাসায়।আর হ্যাঁ,আপনাকে কিছু করতে হবে না।শুধু বসে বসে এনজয় নেবেন।
তারিফ লোকটার মতিগতি বুঝতে পেরে তাড়াতাড়ি কেটে পড়ে জায়গাটা থেকে।এই পাগল লোকটার পাল্লায় পড়ে অনেকটা সময় নষ্ট করে ফেলেছে।তারিফ চলে যেতেই লোকটা একটা মোবাইল হাতে
নেয়।
-হ্যাঁ ম্যাডাম।আপনি বেরিয়ে গেছেন তো?আমি যতটা সম্ভব আপনার হাসবেন্ডকে আটকে রেখেছি।
-হ্যাঁ আমি অনেক আগেই বেরিয়েছি।তুমি এখন বাসায় ফিরে যাও।আর আমার হাসবেন্ড কুঠিতে ঢোকার আগেই আমায় খবরটা দিয়ে যে উপকারটা করলে তার জন্য ধন্যবাদ।
-ঠিক আছে।ভাগ্যিস আপনি আগে থেকেই আমাকে তার ছবিটা দিয়েছিলেন।যাই হোক আপনি তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে যান।বাই
ফার্জিয়া তার বাসায় পৌঁছে গেলো।আজ রাতের ভেতরেই তারিফকে শেষ করে দিতে হবে।ফার্জিয়ার কোনো ইচ্ছাই ছিলো না তারিফকে মারার।কিন্তু সে তার আর আইরিনের মাঝে এভাবে অনাকাঙ্খিতভাবে এসে পড়ে ঠিক করেনি একদম।এর মূল্য তাকে চোকাতেই হবে।আইরিন ফার্জিয়ার আপন বোন হয়।আইরিনের কোনো সন্তান না থাকাতে তারিফ আইরিনের বোন অর্থাৎ ফার্জিয়াকে বিয়ে করে।কিন্তু এই সংসারে এসে কিছুই পায়নি ফার্জিয়া।তার নিজের বোনকে নিয়ে শ্বশুড় বাড়ির সবাই মেতে থাকে।এমন কী তারিফও।
ছোটবেলা থেকেই আইরিনকে ভীষণ ঈর্ষা করতো ফার্জিয়া।সেই স্বভাব এতো ভয়ানক রুপ নেবে কেউ ভাবতে পারেনি।
তাই প্রতিশোধপরায়ন ফার্জিয়া ঠিক করেছে আপাকে তিলে তিলে কষ্ট দিয়ে মারবে সে।আর সে রাহমান ফকিরের সাহায্যে অনেকটা সফলও হয়েছে।কিন্তু তারিফ যেহেতু পুরোটা জেনে গেছে তাকে পথ থেকে না সরানো ছাড়া বাঁচার কোনো উপায় নেই।অথচ তারিফকে পাওয়ার জন্যই এতদিন ধরে সবকিছু করে আসছে সে।আজ তাকেই শেষ করতে হচ্ছে!
রাতে বাসায় ফিরে তারিফ শুয়ে পড়ে।অনেকটা পথ জার্নি করেছে।তাই এখন আর কারোর সাথে কোনোরকম আলোচনা বা কথা বলার ইচ্ছা বা শক্তি কোনোটাই নেই তার।
ফার্জিয়া প্রতিক্ষা করছে কখন তারিফ ঘুমিয়ে পড়ে।আর এই ফাঁকে তাকে কাজটা সারতে হবে।
হয়ত এতোক্ষনে ঘুমিয়ে পড়েছে তারিফ।ফার্জিয়া ছুড়িটা নিয়ে চুপি চুপি তারিফের ঘরে যায়।ক্রোধ আর হতাশায় খেয়ালই করেনি সে যে ঘরে আইরিন নেই।তারিফ একা ঘুমিয়ে আছে।ব্যাস!এবার ফার্জিয়ার কাজে আর কেউ বাঁধা দিতে পারবে না।
ছুড়িটা তারিফের বুক বরাবর তাক করে আঘাত করতে যাবে ঠিক তখনই পেছন থেকে কেউ একটা তার হাতটা ধরে ফেললো।
コメント