অদ্ভুত ভালোবাসা
গতকাল ইফতারের পর লাইট অফ করে দরজা জানালা খুলে ফ্যান চালিয়ে বিছানায় গড়াগড়ি খাচ্ছিলাম। বাসায় খালাম্মা ছাড়া কেউ ছিলেন না। কলিংবেল বাজলো। পাশের বাসার আন্টি আসছেন। সালাম দিলাম, হাসিমুখে সালামের জবাব দিলেও কিছুটা বিষন্ন মনে হলো। আমি আবার এসে লাইট অফ করে শুয়ে পড়লাম।
.
আন্টির হাজব্যান্ড ব্যাংকে চাকরি করেন। তিন ছেলেমেয়ের একজন আল-আমিন জামেয়া স্কুলে এইটে পড়ে আর দুইটা স্কলার্সহোমে। যাই হোক, উনি ডাইনিংয়ে বসেই খালাম্মার সাথে গল্প জুড়ে দিলেন।
-- আপনার ভাইকে নিয়ে আর পারি না। ও কী যে বুঝে, আর কী করে! অদ্ভুত! কি করবো বলেন তো! একটা বিরাট সমস্যায় পড়ছি!
-- কেন, কী হইছে?
.
-- শুনেন, ও, খুবই অগোছালো টাইপের! এত বছরের মধ্যে জীবনে কোনোদিন সে কাপড় আলনায় রাখে নি, আমি ভাঁজ করি, সে এইগুলারে উল্টায় পাল্টায়।
.
-- তারপর
.
-- আমি রুম মুছে রাখি, সে জুতা নিয়া একদম ভিতরের রুমে চলে আসে। কতবার না করছি!
.
-- হা হা হা
.
-- এতবছর ধরে ওরে কতো বকা দেই, শুনেই না। বকা দিলে হয়ত এক দিন কিংবা বড়জোর দুইদিন ঠিক থাকে। তারপর আবার আগের মতোই, সব উল্টাপাল্টা করে রাখে। চেয়ারের উপর কাপড়ের স্তুপ বানাইয়া ফেলে।
.
-- হুঁ
.
-- কিন্তু গত ১৫/২০ দিন ধরে সম্পূর্ণ বিপরীত। আমি একদিন বকা দিছিলাম, এরপর থেকে তার কাপড়চোপড় একদম গুছাইয়া রাখে, আমার ধরতেও হয় না।
.
-- এইটা তো ভালো।
.
-- আগে শুনেন, এ কয়দিনে একদিনেও জুতা নিয়ে রুমে ঢুকে নি।
.
-- তাহলে সমস্যা তো সমাধান হলোই। আবার কী!
.
-- আমি তো সিরিয়াসলি বকতাম না, এমনি এমনি বকতাম। সে নিশ্চয়ই আমার সাথে রাগ করেছে। ঘর মুছার সাথে সাথে জুতা নিয়ে রুমে ঢুকলে একটু আড্ডু খারাপ লাগতো। কিন্তু এখন যখন দেখি, অফিস থেকে ফিরে সে প্রতিদিন রুমে ঢুকার সময় জুতা খুলে ঢুকে এখন আরো বেশি খারাপ লাগে।
.
-- হা হা হা
.
-- সে কাপড়চোপড় অগোছালো করবে, আমি গুছাবো। এটাই আমার ভাল্লাগে। তাছাড়া পুরুষ মানুষ এত গোছালো হলে ভাল্লাগে না। আমি তো এমনেই বকতাম। এখন কিছু বলতেও পারি না। সহ্য করতেও পারছি না।
.
Comments