Just Another Bangladeshi

Apr 1, 20132 min

রিং ফিঙ্গার অনুপস্থিত

আমি এখন যে ঘটনাটি শেয়ার করতে যাচ্ছি তা গল্প বললে ঠিক হবে না, কারণ এটি আমার মামার জীবনে ঘটে যাওয়া একটি সত্যি ঘটনা।

তখন আমার মামা রাজশাহী মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। আমার মামা হোস্টেল এ থাকতেন। প্রথম এবং দ্বিতীয় বর্ষে এনাটমি নামে একটা সাবজেক্ট আছে যেখানে মানুষের কঙ্কাল নিয়ে পড়তে হয়। আর মামার কঙ্কালের প্রতি ভীষণ জোক ছিল আগে থেকেই।

এবার আসল ঘটনাই আসে যাক। আমার মামার প্রায়ই মনে হত কেউ আমার মামা কে অনুসরণ করছে। কিন্ত পিছনে ফেরে কাউকে দেখতে পেতেন না। আস্তে আস্তে তা মামার মাথা ব্যথার কারন হয়ে দাঁড়ালো। এরপর তা আরও ভয়ঙ্কর রূপ নিল। মামা প্রায়ই স্বপ্নে দেখতে পেতেন, কেউ একজন তার গলা চেপে ধরছে আর মামা চিৎকার দিয়ে জেগে জেতেন ঘুম থেকে। এতে মামার রুমমেটরা প্রচণ্ড বিরক্ত হতেন। আর মামাকে পাগল বলে গালমন্দ করতেন। মামার পাগলামো আর ভয় দিন দিন বেড়েই চলল। মামা পড়ালেখাই কন্সেন্ট্রেট করতে পারতেন না। কেউ মামার কথা আমলে নিত না। এমনকি স্যার রাও না। মামা একটা হুজুরের সাথে আলোচনা করলেন। তিনি বলেন সে কি চায় জিজ্ঞেস করতে। এরপর একদিন মামা স্বপ্নে সেই অচেনা কিছুকে কি চায় জিজ্ঞেস করলে সে বলে উঠে মুক্তি। কিন্ত তাতে কোন সমাধান মিলল না। এক সময় মামার প্রফেসনাল পরীক্ষা চলে আসে। মামা অ্যানাটমি রিটেনটা বন্ধুর সাহায্যে পার করলেন, কিন্ত ভাইবাতে মামা কে নিজের যোগ্যতাই পাস করতে হবে। তাই অগত্যা পড়তে বসলেন। পড়ার জন্যে কঙ্কালের হাড় বের করে পড়াশোনা করতে লাগলেন। রাতে ঘুমানোর পর মামা আগের মতো প্রায় একই ঘটনা দেখতে পেলেন। একটা হাত এগিয়ে আসছে। কিন্ত এবার মামা হাতটা অনেকটা ক্লিয়ার দেখতে পেলেন। হাতটা যে কোন মেয়ের তাতে কোন সন্দেহ ছিল না। যাই হোক, সকালে উঠে মামা পরীক্ষা দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছিল। হঠাৎ মামার চোখে পড়ল কঙ্কালের হাতের হাড় গুলার দিকে। মনে হলো খুব পরিচিত।মামা হাতে নেয়ার সাথে সাথে মামার স্বপ্নের সে হাতের কথা মনে হলো। আর তিনি একদম পরিষ্কার দেখতে পেলেন, যে হাতের রিং ফিঙ্গারটা অনুপস্থিত। তখন তিনি সন্দেহের বসে কঙ্কালের হাতের সব হাড় খুঁজে দেখেন। আর দেখতে পান কঙ্কালের হাতের রিং ফিঙ্গারের হাড় গুলা নাই। বন্ধুদের কাছে জিজ্ঞেস করলে তারা নেয় নি বলে উত্তর দিল। মামা যার কাছ থেকে কঙ্কাল কিনে ছিল থাকে ফোন করতেই সে বলল অনেক কঙ্কালের হাড় মিসিং থাকতে পারে এবং সে আরও জানায় যে এদের অধিকাংশ বেওয়ারিস লাশের। মামার আর বুঝতে বাকি রইল না। মামা এর সমাধানের জন্য একটা হুজুর এর কাছে গেলেন। হুজুর বললেন কঙ্কালটা কবর দিয়ে দিতে। মামা পরীক্ষা দিয়ে, সন্ধ্যার দিকে বন্ধুদের নিয়ে কঙ্কালটা খবর দিতে গেলেন। আর কবর দেয়ার পর মামার সারা শরীর অনেকটা হালকা হয়ে গেল। মামা এরপর আর কোন দিন স্বপ্নে সে হাত দেখেন নি।
 
আমার পরিবারে অনেককে নিয়ে এরকম অনেক ঘটনা আছে। কিন্তু আপনাদের মাঝে কেউ কেউ খারাপ কমেন্ট করে বিধায় শেয়ার করতে ইচ্ছে করে না।

যদি আপনাদের ভালো লাগে তবে পরবর্তীতে আরো লিখতে উৎসাহী হবো।

    2