Just Another Bangladeshi

Jun 6, 20162 min

মানব রূপী জ্বীন ১ম পর্ব

ঠাকুরমার ঝুলে খুলবে আর মজার গল্প বলবে। নিজেকে ইদানিং ঠাকুর মা মনে হয়। যে তার ঝুলে খুলে গল্প বলে। তবে সত্যি বলতে সব গল্প কিন্তু ঝুলি খুলে বলি না। কিছু গল্প বলি যা বাস্তবেও ঘটে। যেই ঘটনাগুলো চাইলেও ভোলা যায় না।

বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে লেখা আজকের এই সিরিজটি। এই সিরিজটির ঘটনা শুধু একজনে সাথে ঘটেনি। ঘটেছিল দুই বন্ধুর সাথে তাই আমরা দুই বন্ধু মিলেই আমাদের এই লেখা সম্পন্ন করতে চাইলেও ব্যক্তিগত কারণে আমি নিজেই লিখবো। আমার সাথে ঘটা ঘটনাগুলো আমি লিখবো এবং ইফতির সাথে ঘটা ঘটনাগুলোও ইফতির পক্ষ থেকে আমি লিখবো। এভাবেই চলবে আমাদের সিরিজ।

আমি শেখ সিয়াম তানভীর। প্যারানরমাল ব্যাপারগুলোতে আমার বেশ আগ্রহ। শশ্মানঘাট থেকে শুরু করে ভারতের মায়ং গ্রাম কিংবা কামরুপ কামাক্ষা,কাশিঘাট কিংবা বাংলাদেশের কোনো পুরোনো ভয়ানক বাড়ি সবখানেই আমার এক প্রবল আগ্রহ কাজ করে এবং ছুটে যাই। নিজেকে তাই রহস্যের এক উন্মুক্ত প্রান্তরে নিয়ে যাই জীবনের প্রতিটা ক্ষনে। তাই আপনাদের সাথেও নিজের সেই অভিজ্ঞতাগুলো শেয়ার করি। এবার আসি ইফতির বর্ণনায়। ইফতির সাথে পরিচয় আমার ঢাকা কমার্স কলেজের,কলেজ লাইফ থেকে। আমি খুব দুষ্টামী করতাম সে সময়। ক্লাসের সব স্যারের চোখে লিস্টেড আসামী ছিলাম। অন্যদিকে আমার সামনের বেঞ্চে একটা ভদ্র ছেলে চুপ করে বসে থাকতো। সেই থেকে আমাদের পরিচয়। প্রথমে বন্ধুত্ব,এরপর ধীরে ধীরে আমরা বেস্টফ্রেন্ড হয়ে যাই। ধীরে ধীরে কলেজ পার হয়ে ভার্সিটিতে উঠি। অনেক বন্ধুই হারিয়ে যায় জীবন থেকে। কিন্তু ইফতির সাথে বন্ধুত্ব টিকে থাকে আজীবন। ইফতির সাথেও অনেক প্যারানরমাল ঘটনা ঘটেছে। যা আপনারা অনেকেই ওর লেখা পড়ে জেনেছেন। তাই ওর সাথে আমার প্যারানরমাল আডভেঞ্চার ভালোই জমে। ইফতির পরিবারের সদস্য হয়ে যাই আমি এক কথায়। আঙ্কেল-আন্টি আমাকে নিজেদের ছেলের মতই আদর করে। ইফতিদের গ্রামের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশনে। আমার কোনো গ্রামের বাড়ি নাই। তাই একবার কোরবানীর ঈদে ওদের সাথে ঈদ করতে চলে যাই ওদের গ্রামে। সময়টা ছিল ২০১৯ সাল। মূলত সেখান থেকেই শুরু আমাদের আজকের ঘটনা।

আমরা লঞ্চঘাটে নামলাম। কুরবানির ঈদের ঠিক কিছুদিন আগে। এরপর বাড়ি ফিরে রেস্ট করলাম। গ্রামের সবার সাথে আমার পরিচয় ছিল না। একে একে সবার সাথে পরিচয় হলো। সবাই খুব আন্তরিক ছিলো। খুব ভালো লাগলো সেখানে। এভাবেই পার হয়ে গেলো দুদিন। আমি তখন সবার সাথে মিশে গিয়েছি। সবার সাথে মজা করতাম। এমন একটা সময়। ঈদের দিন ইফতির এক চাচার সাথে আমার পরিচয় হলো। প্রায় কয়েক বছর পর সে গ্রামে এসেছে। নিখোঁজ ছিলো এতোগুলো বছর। তাকে দেখে সবাই হইহুল্লোর বাধিয়ে দিলো। দাদী তো কেদেই দিলো। তবে সত্যি বলতে আমার কাছে কেমন যেনো একটা ভয় ভয় কাজ করছিলো তাকে দেখে। কেমন যেনো শরীরের লোমগুলো দাড়িয়ে যাচ্ছিলো তার সামনে যাওয়া মাত্র। আমি দুপুরে খাবারের পর ইফতিকে বললাম- দোস্তো তোর কাছে কী কামাল কাকাকে কিছুটা ভয়ানক লাগছে না? উনি কী আগে থেকেই এমন ছিল? ইফতি উত্তরে বললো যে ইফতিও আমার সাথে একমত। এবং কালাম কাকা নাকি আগে এমন ছিল না। অনেক সহজ সরল ছিলো। এবার পুরাই অন্য রকম হয়ে গেছে। তবে উনি আগে থেকেই একটু পাগল টাইপের ছিল। এখন তো অনেক সুন্দর গুছিয়ে কথা বলছে। বেশ স্মার্টলী কথা বলছে। আমরা দুইজন বললাম যাইহোক এতো চিন্তা করে লাভ নাই। লোকটা আসছে এটাই অনেক বড় কথা।

রাতের বেলা আন্টি বললো আগামীকাল আমাদের কালাম কাকার শ্বশুর বাড়ি যাওয়া লাগবে তাই তারাতারি ঘুমাতে। শ্বশুর বাড়ি নাকি অনেক দূরে ট্রলার দিয়ে যেতে হয় আর আস পাশে খুব কম ঘর বাড়ি রয়েছে। জঙ্গল টাইপের এলাকা। আমার মধ্যে একটা এক্সাইমেন্ট কাজ করলো। কারণ আমি তো অপেক্ষাতেই থাকি এসবের। তবে আমরা জানতাম না সামনে আমাদের জন্য রিয়েল লাইফ হরর ঘটনা অপেক্ষা করছে।

এবার ঘটনা রহস্যের মাঝে ডুববে। আগামী পর্বে নিয়ে যাবে সামনের দিকে। সঙ্গে এক গভীর জঙ্গলে চলে যাবো।

    0