Just Another Bangladeshi

Aug 5, 20193 min

বড় সর্দার বাড়ি ১ম পর্ব

Updated: Jul 17, 2020

ঘটনাটি আমাদের এলাকার ই। আমার এক কাকীর কাছ থেকে শুনা এবং ঘটনাটি তার সাথেই ঘটা।

প্রথমত, যেই বাড়িতে ঘটনাটি ঘটেছে সেই বাড়িটার মোটামুটি একটা চিত্র তুলে ধরি।বাড়িতে মোট ১৩ ঘর লোকের বাস। বড় সর্দার বাড়ি বলে সবাই এটাকে। বাড়ির পূর্বপাশ দিয়েই মেইনলি বাড়িতে প্রবেশ করে। বাড়িতে প্রবেশ করার মুখেই একটা মসজিদ আর তার সামনেই বাড়ির কবরস্থান। বাড়ির দক্ষিন পাশে বড় একটা বিল। বাড়ির উত্তর পাশে বাড়ি ঘেসে একটা রাস্তা গেছে পশ্চিম দিকে। রাস্তার ঐ পাশেই বড় একটা দিঘী।মোটামুটি দীঘির চার পাশ ঘুরে আসতে ২০/২৫ মিনিট লাগে।দিঘীর ঐ পাড়ে একটা বৃদ্ধ মহিলাকে কবর দিছে ১৯৯৮ সালে। কারণ উনি যখন মারা যায় তখন বন্যা ছিলো।চারদিকে পানি তখন পুকুরের ঐ পাড়ে মাটির বড় ঢিবি বানিয়ে কবর দিছে। আমি অনেক বার ই ঐ পাড়ে গেছিলাম আম কুড়াতে। বাট কবর টা দেখলে অস্বাভাবিক রকমের ভয় করে। এই যে লিখতেছি আমার শরীরের লোম দাড়িয়ে গেছে কবর টার কথা মনে করে। অন্য একদিন এই কবর কে ঘিরে যে কাহিনি সেটা লিখবো।

কাকীর বড় মেয়ের নাম ফাতেমা। এজন্য সবাই তাকে ফাতেমার মা বলে ডাকে। ঘটনাটি মেবি ২০০৬/২০০৭ এর দিকে। কাকীর ঘর টা হচ্ছে উত্তর পাশে। আগেই বলেছি উত্তর পাশে একটা রাস্তা সোজা বাড়ি ঘেসে আর রাস্তার ঐ পাশেই বড় দীঘি।
 
কাকীর ছিলো তিন মেয়ে তখন। কাকীর স্বামী মানে আমার কাকার দোকান ছিলো বাজারে। বাড়ি থেকে ১০/১৫ মিনিট লাগে ঐখানে যেতে। প্রতি রাতে কাকা দোকান বন্ধ করে আসতে আসতে রাত ১০/১০ঃ৩০ টা বাজতো। কাকী তার মেয়েদের খেয়ে দেয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিতো।আর কাকার জন্য অপেক্ষা করতো। সংসারে শ্বশুর শাশুড়ী র কোনো ঝামেলা ছিলোনা। শুধু তিন মেয়ে আর কাকাকে নিয়ে কাকীর সংসার।

আর ঐ বাড়ির তে এক বৃদ্ধ মহিলা ছিলো যাকে সবাই সালেহার মা চাচী বলে। উনার এইজ ছিলো ৭৫+। বাড়িতে উনি একাই থাকতো। কারণ উনার তিন মেয়ে সবাইকে বিয়ে দিয়ে দিছেন। স্বামী আরো আগেই মারা গেছেন। আর এক ছেলে ছিলো উনি স্ত্রী সন্তান নিয়ে ঢাকায় থাকেন। সালেহার মা বাড়িতে একাই থাকতেন। নিজের রান্না বান্না নিজেই করে খেতেন।

মুল ঘটনা হলো, ঐ সালেহার মা মারা যাওয়ার ১৫ দিন পরে। ফাতেমার মা কাকী কাকার জন্য অপেক্ষা করতেছিলো এক রাতে। কাকা আসলো রাত ১০ঃ৩০ টায়। দুজনে একসাথে খাওয়া দাওয়া করে প্রতিদিন ই বাহিরে যায় প্রকৃতির ডাকে। গ্রামের বাড়ি, কাচা ঘর। তাদের বাথ রুম ছিলো তাদের ঘর থেকে একটু দুরে। উত্তর দিকের রাস্তা সোজা পশ্চিম দিকে একটা বাগান। সেই বাগানের পাশেই অনেক গুলো বাশঁ ঝাড়। তার পাশেই কাকীদের কাচাঁ বাথরুম। ঐখানে আমার এখনো দিনের বেলা যেতেই ভয় লাগতো।

তো কাকা খাওয়া দাওয়া করে কাকীকে বলতেছে, চল একটু বাইরে যাওয়া লাগবে।
 
পরে দুজনে বাইরে । কাকা বাথরুমে গেলো। কাকী কাকার কাছ থেকে মোটামুটি ২০/২৫ হাত দুরে দাড়িয়ে আছে। হঠাত কাকী লক্ষ্য করলো উত্তর দিকে যেই রাস্তা সেই রাস্তার পাশে একটা বেল গাছের সাথে হেলান দিয়ে এক মহিলা দাড়িয়ে আছে। সাদা সাদা চুল। মহিলা এক মনে দাঁত খুটতেছে। কাকী ভাবতেছে এত রাতে কে দাড়িয়ে আছে। সে আস্তে আস্তে সামনে আগাচ্ছে। অনেক টা এগিয়ে দেখে সালেহার মা দাড়িয়ে আছে। সালেহার মা যে ১৫ দিন আগে মারা গেছে কাকীর একটুও মাথায় নেই।

কাকী যেতে যেতে প্রায় আর ৩/৪ হাত বাকী এত টুকু কাছে চলে গেছে ঐটার। গিয়ে জিজ্ঞেস করে, কী গো চাচী? এইখানে এত রাতে কী করেন।
 
ওইদিকে কাকা শুনতে পাচ্ছে কাকী যেন কার সাথে কথা বলছে।
 
তো কাকা বাথরুম থেকে ডাক দিচ্ছে, কীরে? তুই কার সাথে কথা কস?
 
কাকা যে কাকীকে ডাকতেছে কাকী সেটা শুনেনা।

কাকী যেতে যেতে প্রায় ঐ টার কাছে চলে গেছে ঐ মুহুর্তে ই খপ করে এসে কাকা হাত ধরে ফেলছে।
 
বলে, কই যাস?
 
কাকী বলে, সালেহার মা চাচী এখানে দাড়িয়ে আছে। কিন্তু কথা বলেনা কেন?

কাকা কাকীকে টেনে তারাতারি ঘরে নিয়ে গেছে। আর ঐ সালেহার মা কাকাকে দেখে আস্তে করে ঐ যে বড় দিঘী ঐ খান দিয়ে হেটে ঐ দিঘীর পাড় দিয়ে কই জানো মিলিয়ে গেলো।
 
( শরীরের লোম দাড়িয়ে গেছে আমার)

পরে কাকা কাকীকে ঘরে ডেকে এনে বলে তুই পাগল হইছোস? চাচী মারা গেছে আজ ১৫ দিন ধরে।

আরেক দিন রাত ১/২ টায় নাকি একদম সালেহার মায়ের গলার মতো কাকীকে দুই দিন ডাকছে ফাতেমার মা, ও ফাতেমার মা একটু বাইরে আসো।

একদম সত্যি ঘটনা। আমি কাকীর মুখে শুনছি। আর কাকী যখন বলছে তখন কাকাও সামনে ছিলো। আর যাই হোক, কাকা মিথ্যা বলার মতন মানুষ না।আমি জিজ্ঞেস করলাম, সত্যি কাকা? কাকা বলে, হ ব্যাডা
 

 
আরো অনেক কাহিনি আছে কাকীর মুখে শুনা। তাদের সাথেই ঘটা। সময় পেলে লিখবো।

    4