Just Another Bangladeshi

Jun 1, 20205 min

কালো জাদু পর্বঃ ৫ম

আমি মামাকে বললাম তাহলে এখন আমরা কি করব? ভুল তো আমরাই করেছি। আপনি একটা পথ দেখান মামা।
 
মামা কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন তার পর বললেন শোন... আমি এখন আমার কাজের লোককে দিয়ে তোমাদের বাসায় একটা তাবিজ দিয়ে পাঠিয়ে দিব। তোমরা সবাই আজ এক রুমে সারা রাত অবস্থান করবে, আর যে রুমে তোমরা সবাই থাকবে সে রুমের দরজার উপরে এই তাবিজ টা ঝুলিয়ে রাখবে। তাহলে এই সাপ ওই রুমে ঢুকতে পারবে না, তবে কেউ সারা রাত এই রুম থেকে অন্য কোন রুমে সকাল হওয়ার আগ পর্যন্ত যাবে না।দেখি আগামী কাল কি করা যায়।
 
আমি বললাম অনেক অনেক সুকরিয়া।
 
মামা ফোন রেখে দিলেন। একটু পরেই মামার পাঠানো লোক এসে আমায় তাবিজ টা দিয়ে চলে যায়। আমি সবাইকে এক রুমে এনে দরজার উপরে তাবিজ বেঁধে দিয়ে বসে রইলাম।
 
রাত বাজে 2 টা দরজা লাগিয়ে বসে আছি আমরা। অনেকেই শুয়ে পড়েছে, আমি, আসাদ, খালু জেগে আছি। দরজার নিচ দিয়ে একটু ফাঁকা জায়গায়তে দেখা যাচ্ছে সাদা কিছু একটা এদিক সেদিক যাচ্ছে।আসাদ বললো এটা কি ওই সাপ?আমি বললাম হুম...। সারা রাত ভয়ে ভয়ে কেটে গেলো।
 
সকালে আমি আর আসাদ চলে গেলাম মামার বাসায়। গিয়ে দেখি মামা একটা চেয়ারে বসে আছেন। মামার মুখটা বেশ মলিন হয়ে আছে।
 
আমি মামাকে সালাম দিয়ে বললাম...
 
আপনার কি মন খারাপ?
 
মামা কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন তার পর বললেন মন খারাপ নয়, তবে একটা বিষয় নিয়ে চিন্তায় আছি। আসাদ বলল কি বিষয় মামা? মামা বললেন... যেদিন আমি ততবির করা ছেড়ে দেই সেদিন আমার যে উস্তাদ তিনি বলেছিলেন তুমি সামনের জীবনে মাত্র 2 বার ততবির করতে পারবে। আর যদি 2 বারের বেশি করো তাহলে তোমার বা তোমার পরিবারের উপর খারাপ আছর পড়বে।
 
কিন্তু আমি তো মানুষের বিপদ দেখলে ঠিক থাকতে পারি না। তোমাদের যে প্রবলেম তা আজ আমাকেই ততবির করে ঠিক করতে হবে, তা না হলে তোমরা মহা বিপদে পড়ে যাবে। এই দিকে তোমার মামী আর আমার সন্তানের কথা ও ভাবছি, আল্লাহ না করুন ওরা যদি কোন ঝামেলায় পড়ে যায়। আল্লাহ ভরসা.... তোমরা এখন বাসায় যাও, আমি জোহরের নামাজের পর ব্যবস্থা করছি ওই সাপের।
 
আমি মামাকে বললাম যে কবিরাজ আসাদের চাচীর কথায় এই কাজ করেছে
 
তার নাম কি আর সে কোথায় থাকে?
 
মামা বললেন ওর নাম ত্রিনাথ..। আর সে অমুক জায়গায় থাকে কিন্তু তোমরা সেখানে কোনদিন যাবে না। এই কবিরাজ ইন্ডিয়ার কামরূপ কামাক্ষা থেকে 12 বছর কুফুরির ট্রেনিং নিয়ে এসেছে। ওর কাছে অনেক পিশাচ জীন আছে। সে এদের দিয়ে বিভিন্ন খারাপ কাজ করায় আর বিজনেস করে। আজকের কাজ টা যদি ঠিকমতো হয়ে যায় তাহলে আগামী কাল তোমার খালাদের নিজের বাসায় চলে যেতে বলবে।
 
আসাদ থেকে যাবে এখানে। আগামী তিন দিন পর আমি কিছু জিনিস দিব তা নিয়ে তুমি আর আসাদ তোমার খালার বাসায় গিয়ে কিছু আমল করবে, আর এর মধ্যে ওই কবিরাজ কিন্তু বসে থাকবে না। সে তোমাদের ক্ষতি করার বিভিন্ন চেষ্টা করতে পারে আর তাই খুব সাবধান থাকতে হবে।

তোমার মামী ক্লিনিক থেকে আসার আগেই আমায় তোমাদের বাকি কাজ গুলো সেরে ফেলতে হবে। আর এখন তোমরা চলে যাও
 
দুপুর 3 টায় এখানে আবার এসো।
 
আমরা বিদায় নিয়ে চলে গেলাম। বাসায় সবাই কে বললাম... মামা কতটা ঝুঁকি নিয়ে আমাদের জন্য কষ্ট করে কাজ করছেন। সবাই মামার জন্য দুআ করতে লাগলো।
 
3 টায় আমি আর আসাদ মামার বাসায় গিয়ে দেখি মামার পায়ের প্লাসটার নতুন করে করানো হচ্ছে। মামা আমাদের দেখে খানকায় গিয়ে বসতে বললেন। আমরা অপেক্ষা করছিলাম, বেশ কিছুক্ষন পর মামা দুইজনের কাঁধে ভর করে ভিতরে এসে চেয়ারে বসলেন। আমার হাতে একটা মাঝারি আকারের কাচের বোতল দিয়ে বললেন দেখ তো কিছু দেখতে পাও কি না? আমি আর আসাদ হাতে নিয়ে দেখি
 
বোতলের ভিতরে এক ইঞ্চি বড় একটা সাদা সাপ মরে পড়ে আছে।
 
মামা বললেন এই সেই কুফুরির সাপ।
 
আমরা অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখছিলাম বোতলের দিকে।
 
আমি বললাম এটাকে কি করে ধরলেন?
 
মামা বললেন... আমি আমার জীন ছাত্র 5 জনকে পাঠিয়ে ছিলাম এটা কে ধরে আনতে। কিন্তু ওরা পারে নি, পরে আমি কিছু আমল করলাম তার পর একটা জিনিস আমার আরেক জীন ছাত্র আমির হামযাকে দিয়ে পাঠালাম,পরে সে ধরে আনতে সক্ষম হয়।
 
আমি তখন এই খানকায় বসে ছিলাম। যখন এই সাপ কে ধরে আমার সামনে আনা হলো, তখন এই সাপ লাফিয়ে আমার ভাঙ্গা পায়ে পেচিয়ে ধরলো। অনেক
 
ব্যথা পেয়েছি, সাথে সাথে আমার পায়ের প্লাসটার ভেঙে যায়। আমি কিছু দুআ পড়ে ওর গায়ে হাত দিতেই সে ছোট হয়ে মারা যায়। তোমাদের দেখানোর জন্য এই বোতলে রেখে দিয়েছি।
 
আসাদ বললো এখন কি এই জন্যই নতুন করে প্লাসটার করালেন?
 
মামা বললেন..... হুম
 
মামা বললেন মাসুদ তোমার খালাকে আগামী কাল চলে যেতে বলেছ? আমি বললাম জি...।
 
মামা বললেন এখন আল্লাহ্‌র সুকরিয়া আদায় কর ।অনেক বড় এক ঝামেলা শেষ হলো, কিন্তু এটা একেবারে শেষ হবে আগামী তিন দিন পর আসাদের বাসায়।
 
তোমরা আগামী পরশু আমার কাছে আসবে সব বলে দিব।
 
আমি বললাম এখন কি ওই কবিরাজ আমাদের অন্য কোন ক্ষতি করতে পারবে?
 
মামা বললেন পারবে.... ।
 
আমি বললাম তাহলে কি করব? যেকোনো সময় বিপদ আসতে পারে।
 
মামা বললেন মোমেনদের একমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করা উচিত।
 
আমি বললাম জি... ইনশাআল্লাহ।
 
আমরা চলে এলাম। পরের দিন খালা চলে গেলেন। তার পরের দিন সকালে আমি আর আসাদ মামার কাছে গেলাম।
 
মামা আমায় 5 টা কড়ি দিয়ে বললেন..
 
এই গুলো খুব যত্ন সহকারে রাখবে। কোন ভাবেই এই গুলো হাত ছাড়া করবে না।
 
আর বাকি কি কি কাজ করতে হবে তা বুঝিয়ে দিলেন। আমরা মামার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় এসে সব কিছু গুছিয়ে সন্ধ্যায় বাসে করে রওনা দিলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে।
 
গাড়ি চলছে.... অর্ধেক রাস্তায় গাড়ি নষ্ট হয়ে গেল, আমরা যাত্রীরা সবাই গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়িয়ে ছিলাম। গাড়ির কাজ চলছিল, প্রায় দেড় ঘণ্টা পর গাড়ির ড্রাইভার বলল গাড়ি আর ঠিক হবে না আপনারা আমরা দুঃখিত। তখন বাজে রাত 9:30। আমরা চিন্তায় পড়ে গেলাম। কেউ কেউ অন্য গাড়ি থামিয়ে উঠে গেল, আমরা ও দাঁড়িয়ে আছি কিন্তু কোন গাড়ি পেলাম না। এমন সময়ে মামা ফোন দিয়ে বললেন... তোমরা কোথায়? আমরা সব খুলে বললাম।
 
তখন মামা একটু চিৎকার দিয়ে বললেন তোমাদের যে ভাবেই হোক 12 টার আগেই বাসায় যেতে হবে তা না হলে রাস্তায় অনেক বড় বিপদ হতে পারে।
 
আমি বললাম কি হয়েছে মামা একটু খুলে বলুন?
 
মামা বললেন ওই কবিরাজ টের পেয়ে গেছে আমাদের প্লেন। আর তাই সে এখন 7 জন পিসাচ জীন চালনা দিচ্ছে তোমার উপর।
 
কড়ি গুলো সরিয়ে নিতে পারে। আর রাত 12 টা বাজার পর তোমরা যদি বাহিরে থাকো তাহলে তোমাদের বাঁচানো সম্ভব হবে না। আমি ভীষণ ভয় পেয়ে গেলাম।


 
মামা ফোন রেখে দিলেন। আমি কড়ি গুলো বেগ থেকে বের করে আমার মানি বেগে রেখে দিলাম। আসাদ আর আমি দিশেহারা হয়ে গেলাম গাড়ি খুঁজতে খুঁজতে। একটা সিএনজি পেয়ে গেলাম বললাম যতো টাকা লাগে দিব আপনি আমাদের যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব পৌঁছে দিন। আমরা গাড়িতে উঠলাম,খুবই আতঙ্কে ছিলাম দুই ভাই। হাতে খুব ই অল্প সময়। হঠাৎ একটা গরম বাতাস আমার শরিরে লাগলো পড়ে আর কোন খেয়াল নেই আমার। (বাকি টা আসাদের কাছে শুনা) আমি মাথা নিচু করে বসে ছিলাম। আসাদ বললো মাসুদ কোন প্রবলেম? আমি মাথা উঠিয়ে আসাদের গলার তাবিজটা টেনে ছিড়ে ফেলি, আসাদ চিৎকার দিয়ে উঠে এবং বুঝে ফেলে আমার ভিতরে জীন প্রবেশ করেছে। সিএনজি চালক গাড়ি থামিয়ে জিজ্ঞাসা করলো কি হয়েছে? আসাদ বললো ভাই মনে হয় জীন প্রবেশ করেছে আপনি দয়া করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাদের নিয়ে যান আপনার পায়ে ধরি ভাই। সিএনজি চালক বেশ ভয় পেয়ে গেল। এই দিকে আমি সিএনজি থেকে নেমে পড়তে চাইছিলাম, আসাদ জোরে টেনে ভিতরে ঢুকিয়ে দিল আর সিএনজির দরজা ভাল করে লক করে দিল। আমি হুঙ্কার দিয়ে আসাদের হাতে জোরে কামড় দিয়ে রক্ত বের করে ফেলি আর বলি ছেড়ে দে আমায়.

    5