Just Another Bangladeshi
May 5, 20172 min
ভূমিকা
কুরআনকে ঐশ্বরিক কিতাব বলে প্রমাণ করতে ইসলামিস্টরা মৌমাছিদেরও রেহাই দেননি। এবিষয়ে তারা দাবি করেন, কুরআন ১৪০০ বছর আগেই জানিয়েছে যে, যেসব মৌমাছি মধু সংগ্রহ করে ও মৌচাক তৈরি করে তারা স্ত্রীজাতীয় মৌমাছি, যা বিজ্ঞান সেদিন মাত্র জেনেছে।
তারা যা দাবি করেন,
আল্লাহ্ কুরআনে বলেন,
16:68
وَأَوْحٰى رَبُّكَ إِلَى النَّحْلِ أَنِ اتَّخِذِى مِنَ الْجِبَالِ بُيُوتًا وَمِنَ الشَّجَرِ وَمِمَّا يَعْرِشُونَ
Bengali – Bayaan Foundation
আর তোমার রব মৌমাছিকে ইংগিতে জানিয়েছে যে, ‘তুমি পাহাড়ে ও গাছে এবং তারা যে গৃহ নির্মাণ করে তাতে নিবাস বানাও।’
16:69
ثُمَّ كُلِى مِن كُلِّ الثَّمَرٰتِ فَاسْلُكِى سُبُلَ رَبِّكِ ذُلُلًا ۚ يَخْرُجُ مِنۢ بُطُونِهَا شَرَابٌ مُّخْتَلِفٌ أَلْوٰنُهُۥ فِيهِ شِفَآءٌ لِّلنَّاسِ ۗ إِنَّ فِى ذٰلِكَ لَءَايَةً لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ
Bengali – Bayaan Foundation
অতঃপর তুমি প্রত্যেক ফল থেকে আহার কর এবং তুমি তোমার রবের সহজ পথে চল। তার পেট থেকে এমন পানীয় বের হয়, যার রং ভিন্ন ভিন্ন, যাতে রয়েছে মানুষের জন্য রোগ নিরাময়। নিশ্চয় এতে নিদর্শন রয়েছে সে কওমের জন্য, যারা চিন্তা করে।
উপরে উল্লেখিত আয়াতে ‘নির্মাণ’ শব্দটি আরবি শব্দ ‘আত্তাখিযী’ এর অনুবাদ, যা একটি স্ত্রীবাচক শব্দ (আরবী ব্যাকরণ ইংরেজি ব্যাকরণের মতো নয়, এটি নারী-পুরুষ আলাদা করে)। স্ত্রীবাচক শব্দ ব্যবহৃত হয় যখন শব্দটি স্ত্রীজাতীয় কোনোকিছু নির্দেশ করে। তাই কুরআন প্রকৃত অর্থে বলছে, ‘হে স্ত্রীজাতীয় মৌমাছি, নির্মাণ করো’। মৌমাছির ঝাক, যারা মধু সংগ্রহ করে এবং মৌচাক নির্মাণ করে, তারা শুধু স্ত্রীজাতীয় মৌমাছি হয়। তাই কুরআনের আয়াতের এই আদেশটি এই বৈজ্ঞানিক তথ্যের সাথে মিলে যায় যে পুরুষ মৌমাছি মৌচাক তৈরিতে অংশ নেয় না।
মাইক্রোস্কোপ ১৬১০ সালের আগ অব্দি আবিষ্কৃত হয়নি। গ্যালিলিও নবী মুহাম্মদের হাজার বছর পর মাইক্রোস্কোপ আবিষ্কার করেন। [1]
পুরো দাবিটি এই বিশ্বাসের ওপর নির্ভর করে করা হয়েছে যে, কুরআনের লেখক একটি স্ত্রীবাচক বিশেষ্য এবং স্ত্রীবাচক ক্রিয়াপদ সমূহ ব্যাবহার করেছেন ইচ্ছাকৃতভাবে এবং আমাদের এটি জানানোর উদ্দেশ্যে যে যেসব মৌমাছি মধু সংগ্রহ করে ও মৌচাক তৈরি করে তারা স্ত্রীজাতীয় মৌমাছি। যাইহোক, ‘মৌমাছি’ শব্দটি আরবীতে ‘النّحلة’ বা, ‘নাহলা’, যা মজ্জাগতভাবে একটি স্ত্রীবাচক শব্দ। [2] [3] কুরআনের লেখক এই শব্দটি আবিষ্কার করেননি, ঠিক যেমন আরবী ভাষা আবিষ্কার করেননি। আরবী ভাষার অস্তিত্ব যেমন ইসলামের সূচনার পূর্বেও ছিলো, তেমনি এই আরবী শব্দটির অস্তিত্বও ইসলামের সূচনার পূর্বে ছিলো। আরবীতে কিছু শব্দ স্ত্রীবাচক আবার কিছু শব্দ পুংলিঙ্গবাচক। যখন কুরআনের একটি আয়াতও প্রকাশিত হয়নি তখনও আরবের মানুষরা আরবীতে কথা বলতেন, আলোচ্য স্ত্রীবাচক শব্দটি ব্যাবহার করতেন। কুরআনের লেখকের একটি স্ত্রীবাচক শব্দ ব্যাবহার করাটা এটি দাবি করার জন্য খুবই দূর্বল প্রমাণ যে তিনি আমাদের জানাতে চেয়েছেন বা ইংগিত দিতে চেয়েছেন যে যেসব মৌমাছি মধু সংগ্রহ করে ও মৌচাক তৈরি করে তারা স্ত্রীজাতীয় মৌমাছি।